ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জবির ক্যাম্পাস নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

আশরাফুল ইসলাম আকাশ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৩, ১০ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জবির ক্যাম্পাস নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

জবি প্রতিনি‌ধি : রাজধানীর ১৬০ বছরের পুরনো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জ‌বি) বতর্মান ক্যাম্পাস বিনিময়ের মাধ্যমে নতুন ক্যাম্পাস স্থাপনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।

বুধবার  একটি জাতীয় পত্রিকায় ‘একনেকে ৩২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ঢাকার কেরানীগঞ্জে নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের পর নতুন ক্যাম্পাসের বিনিময়ে বিশ্ববিদালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাসের জায়গা সরকারকে ছেড়ে দেয়ার সংবাদ প্রকাশ হলে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সরকারের এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যজোট একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কেরাণীগঞ্জের নতুন ক্যাম্পাসটি আমাদের মূল ক্যাম্পাস হবে। তবে ক্যাম্পাস আমাদের দুটোই থাকবে; এখানেও থাকবে ওখানেও থাকবে। আজ পর্যন্ত কোন সরকারের বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নেওয়ার রেকর্ড নেই। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক ক্যাম্পাস আছে। বৃহস্পতিবার আমরা শিক্ষক সমিতির সদস্যরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত জানাবো।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের একাং‌শের সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘একনেকে এ ধরনের শর্ত দিয়ে প্রকল্প অনুমোদন হওয়ার কথা না। যদি শর্ত দিয়ে থাকে তবে একটি ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো ক্যাম্পাস ছেড়ে নতুন ক্যাম্পাসে যাওয়া ভাল হবে না। এই পুরনো ক্যাম্পাস রেখেই নতুন ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ হতে পারে।’

প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্যজোটের নেতারা পুরনো ক্যাম্পাসের বিনিময়ে নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণের সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করে বলেন, জগন্নাথ বিশ্বাবদ্যালয়ের বর্তমান ক্যাম্পাস বহাল রেখেই নতুন ক্যাম্পাসে আবাসিক হল নির্মাণ এবং আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কার্যক্রম চালাতে হবে।

তারা বলেন, পৃথিবীর বহু বিশ্ববিদ্যালয়েরই একাধিক ক্যাম্পাস রয়েছে। জগন্নাথ বিশ্বাবদ্যালয়েও একই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে হবে। অনেক লড়াই, সংগ্রাম আর ইতিহাস-ঐতিহ্যের সাক্ষী এই ক্যাম্পাসকে জগন্নাথ বিশ্বাবদ্যালয়ের অংশ হিসেবে রেখেই নতুন ক্যাম্পাসে আবাসিক হল নির্মাণের এবং আনুষঙ্গিক উন্নয়ন কার্যক্রম চালাতে হবে। তা না করে বর্তমান ক্যাম্পাসের জায়গা নিয়ে কোন ধরনের চক্রান্ত করা হলে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, ‘২৭/৪ নামক যে কালো ধারার মাধ্যমে একটি অসম্পূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় রূপ নিয়েছিল জবি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে ধারা বাতিল করে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার জন্য এই মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে এই সরকারের কোন বিকল্প নেই।’ শাখা ছাত্রলী‌গের এই নেতা পুরাতন ক্যাম্পাস ছেড়ে নতুন ক্যাম্পাসে যাওয়ার যে কোন সিদ্ধান্ত মেনে না নেওয়ার কথা জানিয়েছেন।

এবিষয়ে উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘এই মেগা প্রকল্পটি আগামী দুই বছরের মধ্যে শেষ হবে। ইতিমধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। বর্তমান ক্যাম্পাস ছাড়ার শর্তের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘আগে নতুন ক্যাম্পাস হোক, বাকিটা পরে দেখা যাবে। সরকারের জায়গা, সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’



রাই‌জিং‌বি‌ডি/ঢাকা/১০ অ‌ক্টোবর ২০১৮/আশরাফুল/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়