ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

জাতীয় শোক দিবস আজ

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৪১, ১৫ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জাতীয় শোক দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় শোক দিবস আজ। বাঙালি জাতির সবচেয়ে শোকার্ত বেদনার দিন। ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদাতবার্ষিকী।

১৯৭৫ এর এই দিনে জাতি হারিয়েছে আবহমান বাংলা ও বাঙালির আরাধ্য পুরুষ, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। রক্তঝরা এই দিনটিতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবার-পরিজনসহ নৃশংসভাবে শহীদ হন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের নিজ বাসভবনে। কতিপয় বিশ্বাসঘাতকের চক্রান্ত ও সেনাবাহিনীর একদল বিপথগামী সদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন প্রাণ হারান তার  সহধর্মিণী বেগম শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও দশ বছরের শিশুপুত্র শেখ রাসেল এবং নবপরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল। আর ভাগ্যক্রমে প্রবাসে থাকায় সেদিন  প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

জাতীয় শোক দিবস পালনে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধুর বাসভবনসহ তিনটি বাড়িতে একই রাতে সংঘটিত পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞের মতো বিশ্বে আর কোনো রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড ঘটেছে কি না সন্দেহ আছে। বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা খুনীদের নিষ্ঠুরতা দেখে গোটা বাঙালি জাতিসহ থমকে গিয়েছিল বিশ্ব বিবেক। বাংলাদেশ ও বাঙালির জন্য গভীর মর্মস্পর্শী শোকের দিনে জাতি আজ গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানকে স্মরণ করছে।

বাংলার মানুষের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু মাত্র ৫৫ বছরের জীবনে (১৯২০-১৯৭৫) স্বদেশের মাটি আর মানুষকে এমন গভীর ভালবাসার বন্ধনে বেঁধেছিলেন, যে বন্ধন কোনো দিন ছিন্ন হবার নয়। আজীবন ঔপনিবেশিক শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে, দরিদ্র নিপীড়িত বঞ্চিত মানুষের মুক্তির সংগ্রামে এমন এক অনন্য ভূমিকা রেখেছিলেন। যিনি রচনা করেছিলেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বিজয় ইতিহাস। এতকিছুর পরও শেষ পর্যন্ত তাকে জীবন দিতে হয়েছে ঘাতকের হাতে। একাত্তরের পরাজিত শক্তির ঘৃণ্য সর্বনাশা চক্রান্তে একদল ঘাতকের পৈশাচিকতার বলি হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার-পরিজন। রচিত হয় ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায়। কিন্তু একজন রাষ্ট্রনায়ককে হত্যা করলেই কী জাতির হৃদয় থেকে চিরতরে মুছে ফেলা সম্ভব? তা হয়নি। বঙ্গবন্ধু এখন বাঙালি সত্ত্বার নাম। বঙ্গবন্ধু এখন প্রতি মূহুর্তে প্রতি ক্ষণে ফিরে আসেন, জাতির প্রতিটি অর্জন, উৎসব, আনন্দ-বেদনার ক্ষণে। তাই কবির ভাষায়, ‘এই ইতিহাস ভুলে যাব আজ, আমি কি তেমন সন্তান? যখন আমার পিতার নাম শেখ মুজিবুর রহমান।’

কিন্তু জাতিকে নির্মম-নৃশংস হত্যাযজ্ঞের বিচার পেতে ৩৫টি বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের বেড়াজাল ছিন্ন করে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে মানবতার শত্রু  বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত পাঁচ খুনীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। পাঁচ খুনীর ফাঁসি হলেও আজও নেপথ্যের কুশিলবরা রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

১৫ আগস্টের খুনিরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল, ছোট ভাই শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব, তার ছেলে আরিফ ও সুকান্ত বাবু, ভাগ্নে যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, আবদুর নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা রাষ্ট্রপতির ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিলসহ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে হত্যা করা হয়।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর ধানমন্ডি ও টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মাজার প্রাঙ্গণ ও আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী দিয়েছেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ আগস্ট ২০১৭/নৃপেন/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়