ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জামিন জালিয়াতি : ৫ জনের ১৪ বছর করে কারাদণ্ড

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৩৪, ২২ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জামিন জালিয়াতি : ৫ জনের ১৪ বছর করে কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে জামিন জালিয়াতির মাধ্যমে ১০৬ আসামিকে কারামুক্তির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বেঞ্চ সহকারীসহ পাঁচজনের ১৪ বছর করে  কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত।

বুধবার ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালত দণ্ডবিধির পৃথক ছয়টি ধারায় আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে ১৪ বছর কারাদণ্ডের মধ্যে দণ্ডবিধির ৪৬৬ ধারায় সাত বছর এবং ৪৭১ ধারায় সাত বছরের এই কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে দুটি ধারার সাজা একই সঙ্গে চলবে বলে উল্লেখ থাকায় আসামিদের সাত বছর কারাদণ্ড ভোগ করলেই চলবে বলে জানিয়েছেন এ মামলার বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর।

এদিকে রায়ে প্রত্যেক আসামিকে প্রত্যেক ধারার জন্য ১০ হাজার টাকা করে ২০ হাজার টাকা  অর্থদণ্ডও করেছেন আদালত, যা অনাদায়ে তাদের আরো এক মাস করে দুই মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বরখাস্তকৃত বেঞ্চ সহকারী মোসলেহ উদ্দিন ভূঁইয়া, মহানগর দায়রা জজ আদালতের নেজারত বিভাগের কর্মচারী শেখ মো. নাঈম, উমেদার মো. আলমগীর হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মো. ইসমাইল।

এদিকে তদন্ত কর্মকর্তা মামলার তদন্তে চরম অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালতে উল্লেখ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে ৭ জুন পর্যন্ত ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন্নাহারের স্বাক্ষর জাল করে যোগসাজশে ভুয়া জামিননামা তৈরি করেন একই আদালতের পাঁচ কর্মচারী। পরে তা কেন্দ্রীয় কারাগারে পেশ করে বিশেষ ও দায়রা জজ আদালতের ৭৪টি মামলার চিহ্নিত ১০৬ আসামিকে মুক্ত করা হয়।

ওই ৭৪ মামলায় কোনো  প্রকার জামিনের আদেশ ছাড়াই আদালতের নথিতে জামিনের দরখাস্তসহ জামিননামা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ওইসব জামিননামায় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সামছুন্নাহারের স্বাক্ষর জাল করা হয়। আসামিরা আদালতের ভেতরে অবস্থান করে বিচারকের অগোচরে গোপনে ভুয়া জামিননামাগুলো তৈরি করেন।

প্রতারকচক্র শুনানি না করে বিচারকের খাস কামরায় জামিন মঞ্জুর হওয়ার মিথ্যা কথা বলে ওই ৭৪টি মামলার সংশিষ্ট আইনজীবীর কাছ থেকে পর্যায়ক্রমে আসামিদের জামিননামা গ্রহণ করে। প্রতিটি মামলায় জামিনের ক্ষেত্রে আসামিপক্ষের লোকজনের কাছ থেকে কম-বেশি করে অন্তত ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেয় তারা। এই হিসেব অনুযায়ী ১০৬ জনকে জামিন দিয়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়। অথচ ভুয়া জামিনে ছাড়া পাওয়া আসামিরা একেকজন পেশাদার মাদক চোরাচালান ও মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।

ওই ঘটনায় ২০১৪ সালের ১২ জুলাই আদালতের নাজির উবায়দুল করিম আকন্দ রাজধানীর কোতয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের পর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শফিউল্লাহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ মার্চ ২০১৭/মামুন খান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়