ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে গরুর ‘আবাসিক হোটেল’

শাহরিয়ার সিফাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪০, ১৯ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টাঙ্গাইলে গরুর ‘আবাসিক হোটেল’

নিজস্ব প্রতিবেদক, টাঙ্গাইল : মানুষের থাকার জন্য আবাসিক হোটেল রয়েছে শহরের বিভিন্ন জায়গায়। এটা সকলের জানা। কিন্তু আজব হলেও সত্য যে টাঙ্গাইলে গড়ে উঠেছে গরু রাখার জন্য ‘আবাসিক হোটেল’।

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলায় যমুনা নদীর পাড়ে গড়ে উঠা দেশের অন্যতম বৃহত্তম ও ঐতিহ্যবাহী গোবিন্দাসী গরুর হাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে গরুর ‘আবাসিক হোটেল’। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সমৃদ্ধ হোটেলে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের গরুর ব্যবসায়ীরা গরু রেখে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে অনেক বছর ধরে।

শুধু তাই নয়, গরুর হোটেলের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছে এলাকার শতাধিক পরিবার। বিশেষ করে কোরবানির ঈদ আসলে গরুর হোটেল ব্যবসা জমজমাট হয়ে উঠে। সপ্তাহের প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার বসে এই হাট।

টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে যমুনা নদী তীরবর্তী ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী গরুর হাটকে কেন্দ্র করে হাটের চারপাশে গড়ে উঠেছে শতাধিক পশুর আবাসিক (বোডিং) হোটেল। গরুর হোটেলের জন্যই এখানকার হাটে নিরাপদে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া বেচাকেনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অল্প সময়ে গোবিন্দাসী হাট পরিণত হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম পশুর হাটে। এই হোটেলে গরু রেখে ব্যবসা করতে পেরে খুশি বিভিন্ন জেলা থেকে আগত গরুর ব্যবসায়ীরা।

এতে এই এলাকার মানুষের বিশেষ পেশায় পরিণত হয়েছে গরুর হোটেল ব্যবসা। দামভেদে হোটেলে রয়েছে গরু-মহিষের গোসল, খাবারের জন্য আলাদা জায়গা। রয়েছে মশা, মাছি থেকে রক্ষার জন্য নেটের তৈরি মশারির ব্যবস্থা। কিছু হোটেলে রয়েছে বৈদ্যুতিক সিলিং ও টেবিল ফ্যানের ব্যবস্থা।

আব্দুল করিম মিয়া ও রোজিনা বেগমসহ একাধিক হোটেল মালিক জানান, হোটেলে প্রতিটি গরুর জন্য ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়। গরু ব্যবসায়ীরা নিরাপদে এখানে গরু রাখেন। হোটেলের ভাড়া দিয়ে সংসার ভালোই চলছে বলে জানিয়েছেন তারা। তারা দীর্ঘ দিন ধরে এই ব্যবসায় জড়িত।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গরুর ব্যবসায়ীদের মতে, গোবিন্দাসী হাটে তারা গরু বিক্রি করার জন্য আসেন। হাটের দিন গরু বিক্রি না হলে তারা এই সব গরুর বোর্ডিংয়ে (হোটেল) গরু রাখেন। গরুর হোটেল থাকায় ব্যবসা করা সুবিধা হচ্ছে।  

গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু বলেন, হাটের কিছু সমস্যা আছে, এগুলোর সমাধান করতে পারলে ব্যবসায়ীরা আরো ভালোভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে। আর হোটেল মালিকরা ব্যবসা করে ভালোভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবে। 

এ ব্যাপারে  ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঝোটন চন্দ বলেন, গরু হাটের উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করে কাজ শুরু করা হয়েছে। অনেক প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। এতে করে হাটে গরু সরবরাহ বেশি হবে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গরু ব্যবসায়ীরা নিরাপদে গরু রাখতে পারবেন। ফলে হাটকে কেন্দ্র করে যেমন আরো বেশি গরুর হোটেল তৈরি হবে, অন্য দিকে হোটেল ভাড়া দিয়ে বহু মানুষের জীবিকা নির্বাহ হবে।

পড়ুন

 


রাইজিংবিডি/টাঙ্গাইল/১৯ আগস্ট ২০১৮/শাহরিয়ার সিফাত/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়