ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ট্রাম্পের ‘কভফেফে’ নিয়ে তোলপাড়

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৯, ২ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ট্রাম্পের ‘কভফেফে’ নিয়ে তোলপাড়

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লেখা একটি শব্দ নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে ইন্টারনেটে। এই শব্দটি হচ্ছে ‘কভফেফে’। পুরো বিশ্বেই তোলপাড় চলছে আসলে কী বলতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প।

এটা কী কোনো গোপন বার্তার সংক্ষেপ নাকি অন্য কিছু? আর যদি গোপন বার্তা হয়, তাহলে কার জন্যে ছিল সেই মেসেজ? রাশিয়া? অবশ্য এ ব্যাপারে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে হোয়াইট হাউজ থেকে। কিন্তু তাতে রহস্য আরো ঘনীভূত হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত ট্রাম্পের টুইট করা একটি বার্তা নিয়ে। মঙ্গলবার রাতে তিনি এই টুইট করেন, যাতে ‘কভফেফে’ শব্দটি ছিল। কিন্তু এর মানে কী? মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছিলেন না কেউ। কারণ এটি এমন একটি শব্দ, যার কোনো আভিধানিক অর্থ নেই।



ট্রাম্প টুইট করেছিলেন, ‘ডেসপাইট দ্যা কনস্ট্যান্ট নেগেটিভ প্রেস কভফেফে’। অর্থাৎ ‘অব্যাহত নেতিবাচক প্রেস কভফেফে সত্ত্বেও’। সারারাত ধরে তার এই টুইটটি ছিল। এরপর বুধবার সকালে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় ইন্টারনেট দুনিয়ায়। নানা কৌতুক, টিক্কা-টিপ্পনি, মজার মজার সব মন্তব্য করতে থাকেন ইন্টারনেট জগতের মানুষেরা।

এদিকে বুধবারেই হোয়াইট হাউজের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক ট্রাম্পের ওই শব্দের বিষয়ে প্রশ্ন করেন মুখপাত্র শন স্পাইসারকে। প্রেসিডেন্টকে নিয়ে উদ্বেগের কিছু আছে কি না জানতে চান ওই সাংবাদিক। তখন জবাবে স্পাইসার যা বলেন, তাতে রহস্য আরো  বেড়ে যায়। কেননা স্পাইসার প্রশ্নে উত্তরে বলেন, ‘না, ট্রাম্প এবং অল্প কয়েকজনই জানেন সত্যিকার অর্থে কী বলতে চেয়েছেন তিনি।’



এর ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় পর ট্রাম্প নিজেই ওই টুইট মুছে দিয়ে আরেকটি টুইট করেন। এতে তিনি লেখেন, ‘কভফেফের সত্যিকার মানে কেউ বের করতে পেরেছে??? উপভোগ করুন।’ এতে রহস্য আরো ঘনীভূত হয়। ট্রাম্প রহস্য খোলাসা না করে বরং সবাইকে একটিু খোঁচা মারলেন?

প্রেস সেক্রেটারি শন স্পাইসার ‘কভফেফে’-এর কোনো মানে করতে না পারলেও ধারণা করা হচ্ছে যে এটি ছিল টাইপের ভুল এবং প্রেসিডেন্ট আসলে ‘কাভারেজ’ শব্দটি লিখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বাক্য শেষ না করেই টুইটটি পোস্ট করে দেন তিনি।

সিএনএন টিভি চ্যানেলে এক বিশ্লেষক ট্রাম্পের টুইটকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের হোয়াইট হাউস টেপের (ওয়াটোর গেট কেলেংকারি) সঙ্গে তুলনা করেছেন। এদিকে জলবায়ু চুক্তি থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার যে ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প সে খবরের চেয়ে তার ‘কভফেফে’ টুইটের নিউজই বেশি খোঁজ করেছেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। 



ট্রাম্পের রহস্যজনক এই টুইট কিন্তু নজর এড়ায়নি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বি হিলারি ক্লিনটনের। ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এ নিয়ে রীতিমত মজাও করেন তিনি। হিলারি মন্তব্য ছিল, ‘আমার মনে হয়েছিল এটা রুশদের জন্যে একটা গোপন বার্তা।’

এ বছরের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে টুইট করে যাচ্ছেন। তার যুক্তি- এতে তিনি মার্কিন জনগণের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন। তবে মাঝেমধ্যেই তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করেন টুইটের মাধ্যমে। আবার হরহামেশা বানান ভুলও করেন। তবে তার কোনো টুইটই এতটা আলোড়ন তুলতে পারেনি, যতটা তুলেছে এই ‘কভফেফে’।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ জুন ২০১৭/এনএ/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়