ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে নেতারা আত্মগোপনে, তৃণমূলে হতাশা

তানভীর হাসান তানু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:০০, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঠাকুরগাঁওয়ে নেতারা আত্মগোপনে, তৃণমূলে হতাশা

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা : ঠাকুরগাঁওয়ে অভ্যন্তরীণ বিরোধের পাশাপাশি তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কারণে দলীয় চেয়ারপারসনের কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার দিনও শোডাউন করতে পারেনি বিএনপি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নিজ এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ের বিএনপির নেতারা গ্রেপ্তার আতঙ্কে গা ঢাকা দিয়েছে। এ নিয়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের পর কেন্দ্রীয় ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়ে যায়। এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান তৈমুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মির্জা ফয়সল আমিনসহ গুটি কয়েক নেতা-কর্মীকে দেখা গেছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে অঙ্গসংগঠনের উল্লেখযোগ্য নেতারা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আসেনি বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ভয়ে বাড়ির ছাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বাকি উপজেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে পারেনি বিএনপি।

সদর উপজেলা বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ের কয়েক নেতা বলেছেন, ‘‘জেলা পর্যায়ের নেতারা সুবিধাবাদী। এত দিন আমাদের ব্যবহার করেছেন। আমরা বিভিন্ন বিক্ষোভ, সমাবেশে অংশগ্রহণ করে মামলা ও জেলহাজতে গিয়েছি। কিছু দিন খোঁজ খবর নেওয়ার পর তারা কেউ যোগাযোগ পর্যন্ত করেন না। মামলার হাজিরা দিতে গিয়ে অর্থনৈতিকভাবে আমরা এখন পঙ্গু। কিন্তু দলকে ভালোবাসি বলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবার আন্দোলনে নামতে রাজি আছি।’’

জেলা বিএনপির নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, পুলিশের গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়িতে থাকতে পারেন না। নিয়মিত পুলিশি অভিযানে সকলে আতঙ্কে। তৃণমূল বিএনপির কর্মীরাও ঘর ছাড়া। দেশে গণতন্ত্র নেই, সাধারণ মানুষ মনের কথাও বলতে পারে না ভয়ে।

পুলিশ গত জাতীয় নির্বাচনে ঠাকুরগাঁওয়ের বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, ভাংচুর, প্রিজাইডিং অফিসার হত্যাসহ বিভিন্ন অভিযোগে দেড় শতাধিক মামলা দায়ের করে।  এতে চার হাজার নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়। এ সময় মামলার অনেক আসামি দীর্ঘ দিন জেল খেটেছেন। বর্তমানে মামলার হাজিরা দিচ্ছেন নিয়মিত।

ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন জানান, সরকার পুলিশ বাহিনীকে দলীয়ভাবে ব্যবহার করছে। তারা প্রতিবাদসভা, মিছিল করা ও দলীয় কার্যালয়ে পর্যন্ত আসতে পারেন না। ইউনিয়ন পর্যায়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের প্রতিদিন গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় ঘোষণার উপর তাদের পরবর্তী আন্দোলন নির্ভর করছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দবিরুল ইসলাম এমপি জানান, আদালত সকল দিক বিবেচনা করে বেগম জিয়ার দুর্নীতির মামলার রায় দিয়েছে। বিএনপি আন্দোলনের নামে ইতিপূর্বে সারাদেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল। তাই নৈরাজ্য প্রতিহত করতে  ঠাকুরগাঁওসহ সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে।

ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, জেলার সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা ও সকল প্রকার সহিংসতা ঠেকাতে পুলিশ সদা প্রস্তুত। বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীকে রাস্তায় নৈরাজ্য করতে নামতে দেওয়া হবে না।



রাইজিংবিডি/ঠাকুরগাঁও/১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/তানভীর হাসান তানু/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়