ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ডায়াবেটিস রোগীদের প্রথম জাতীয় ডিজিটাল নিবন্ধন

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডায়াবেটিস রোগীদের প্রথম জাতীয় ডিজিটাল নিবন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে প্রথমবারের মতো সূচনা হলো ‘জাতীয় ডিজিটাল ডায়াবেটিস রোগীর নিবন্ধন পদ্বতি’। এতে করে ডায়াবেটিসের সঙ্গে দিনযাপন করা রোগীর জন্য গুণগত সেবা নিশ্চিত করা যাবে নিবন্ধিত তথ্য, উপাত্ত, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণের মাধ্যেমে।

শুধু তাই নয়, মানুষ সচেতন হবে ডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কেও। নভো নরডিস্কেও সহযোগিতায় পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করবে ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বাডাস) ও দেশে জুড়ে থাকা তাদের শাখা ও সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো।

এই যুগান্তকারী কাজটি সম্পাদন করতে বাডাসের সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খান ও নভো নরডিস্কের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রেডরিক কিয়ার এক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। রোববার দুপুরে ঢাকা ক্লাবে বসে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

এ সময় প্রফেসর আজাদ বলেন, ‘বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সঠিক কোনো সংখ্যা বা এ সংক্রান্ত জরিপের উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। দেশ জুড়ে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রোগীর সংখ্যাই শুধু নয়, একটা সঠিক চিত্র পাওয়া যাবে বলে আমি মনে করি।’

তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিবন্ধনের ফলে দেশে বসবাসকারী রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা, তিন মাসের গ্লুকোজের গড় হিসাব (এইচবিএওয়ানসি) জানা যাবে। একইসঙ্গে রোগসংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার সহজে সমাধান করা সম্ভব হবে। কারণ সুচিকিৎসা তখনই নিশ্চিত করা যায় যখন হাতের কাছে প্রয়োজনীয় সঠিক তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়। যা এই নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্ভব হবে।’

এ সময় পৃথিবীব্যাপী ডায়াবেটিস রোগের নিয়ন্ত্রণে সহযোগিতায় কাজ করা সেরা প্রতিষ্ঠান নভো নরডিস্কের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রেডরিক কিয়ার বলেন, ‘ডায়াবেটিস প্রতিরোধের জন্য এর গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা থাকা খুব জরুরি। পুরো পৃথিবীতে এই রোগ যাতে মহামারী আকার ধারণ করতে না পারে, তার পেছনে ৯০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে নভো নরডিস্ক।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ডিজিটাল নিবন্ধনের ফলে রোগীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক চিত্র তুলে ধরা সম্ভব হবে। এতে করে, সমস্যাগুলির পেছনে পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া যাবে, যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে অবদান রাখবে ও যেকোনো ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহযোগিতা করবে।’

উল্লেখ্য, এরই মধ্যে এসডিজি অর্জনের বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে জাতিসংঘ অন্যান্য অসংক্রামক রোগের মধ্যে ডায়াবেটিসকে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগের কারণে অকাল মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

এসব দিক মাথায় রেখেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নভো নরডিস্ক ও বাডাস যৌথভাবে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। বিষয়টি উল্লেখ করে নভো নরডিস্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনন্দ শেঠী বলেন, ‘আমরা চেঞ্জিং ডায়াবেটিস ব্যারোমিটার, শিশুদের ডায়াবেটিস পরিবর্তন ও নানা ধরনের সামাজিক সচেতনতামূলক কাজ করছি (চেঞ্জিং ডায়বেটিস ইন চিলড্রেন)। শুধু তাই নয়, আমাদের সঙ্গে ডায়াবেটিস পরিবর্তনের শূভেচ্ছাদূত হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের সম্মিলিত চেষ্টাই পারে ডায়াবেটিসের মতো রোগ রুখতে।’

আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের তথ্য মতে, বাংলাদেশে এখন প্রায় ৬.৯ মিলিয়ন ডায়াবেটিস রোগীর বসবাস। ২০৪৫ সাল নাগাদ এটি ১৩.৭ মিলিয়ন হবে, যা বিশ্বব্যাপী নবম অবস্থান। তাই সচেনতন হওয়ার এখনই সময়। বাংলাদেশে শুধু ২০১৭ সালেই ৯৭ হাজার ৬৪১ জনের মৃত্যুর কারণ ডায়াবেটিস।

নভো নরডিস্ক এসকেএফ ফার্মার সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকেই বাংলাদেশে হিউম্যান ইনসুলিন তৈরি করে আসছে এবং ট্রান্সকম ডিস্ট্রিবিউশন দেশব্যাপী সরবরাহ করে আসছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ ডিসেম্বর ২০১৭/সাওন/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়