ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ডিজিটাল বাংলাদেশের সমাচার দর্পণ ‘অনলাইন গণমাধ্যম’

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২৪, ২৩ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডিজিটাল বাংলাদেশের সমাচার দর্পণ ‘অনলাইন গণমাধ্যম’

হাসান মাহামুদ: আদিম যুগে যখন ভাষা আবিস্কার হয়নি, তখনো এক গোত্রের মানুষের আচার-আচরণ অন্য গোত্রে সংক্রমিত হতো।  ভিন্ন ভিন্ন স্বতন্ত্রতা প্রতিটি গোত্রের থাকলেও কমন কিছু সাদৃশ্য তো থাকতোই। এই সাদৃশ্য শুধুমাত্র আবহাওয়া, পরিবেশ কিংবা নৈকট্যের প্রভাবে নয়। কিছু আচার-ব্যবহারের তো অবশ্যই কিছু আদান-প্রদান হতো। এই আদান-প্রদানটাকে সংক্রমন বললে খুব কী ভুল বলা হবে?

‘সংক্রমিত হতো’ মানে ছড়িয়ে পড়তো। তখন মুখে মুখে তো আর কথা ছড়াতো না, কিংবা গোত্রে গোত্রে কোনো যোগাযোগও ছিল না। তবুও উল্লেখযোগ্য ঘটনা, সংস্কৃতি, আচার-আচরণ, কৃষ্টি ছড়িয়ে পড়তো। অর্থাৎ সংক্রমিত হতো! প্রকারান্তরে কথাটাকে বলা যায় ‘সংবাদ’ ছড়িয়ে পড়তো।  অর্থাৎ ভিন্ন ভিন্ন ধরনে কিংবা অবয়বে সংবাদের চাহিদা, গুরুত্ব ও ব্যবহার সবসময়ই ছিল।

কালক্রমে জীবিকা ও সভ্যতার প্রয়োজনে ইশারা এবং পরে ভাষা আবিষ্কার হয়। মুখের ভাষা লেখার ভাষাতেও রূপ নেয়। পাথরে খোদাই কিংবা পাতায়-বাকলে লেখার বদলে কাগজ-কলম আবিষ্কার হয়। তেমনি সংবাদের প্রয়োজনে সংবাদপত্রের আর্বিভাব হয়।

সভ্যতার অপরিহার্য অঙ্গ হিসাবে বিশ্বে সংবাদশিল্পের তাৎপর্য দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। রাষ্ট্রীয়, সামাজিক কিংবা স্থানীয় যেকোনো পরিমন্ডলে তথ্য আধুনিক মানুষের জীবনযাপনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। সংবাদপত্র প্রথম প্রকাশের গৌরব ৫৩৬ খ্রিস্টাব্দে ইতালির ভেনিস বন্দরে। চীন দেশে প্রথম কাগজ ও মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কৃত হয়েছিল। ভারতবর্ষে মোগল শাসনে সরকারি অধিদপ্তরে হস্তলিখিত সংবাদপত্রের প্রচলন ছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে। ইউরোপে প্রথম সংবাদপত্রের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল নব-জাগরণের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ইতালিতে। ইতালি থেকেই সংবাদপত্র অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল বিভিন্ন প্রান্তে।

অষ্টাদশ শতাব্দির শেষ প্রান্তে মুদ্রণযন্ত্র প্রতিষ্ঠার ফলে প্রথমে প্রকাশিত হয়েছিল ইংরেজিতে সংবাদপত্র। ১৭৮০ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জানুয়ারি জেমস অগাস্টাস হিকি- এর মাধ্যমে ‘বেঙ্গল গেজেট’ই হলো প্রথম প্রকাশিত সংবাদপত্র। পরে ইন্ডিয়া গেজেট, হরকরা, ক্যালকাটা গেজেট ইত্যাদি। ভারতবর্ষে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় সংবাদপত্রের কথা জানা গেলেও অবিভক্ত বাংলায় সমাচার দর্পণই প্রথম খবরের কাগজ। সমাচার দর্পণ হল বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রথম সংবাদপত্র। পত্রিকাটি ছিল সাপ্তাহিক। আজ থেকে প্রায় দু’শো বছর আগে আজকের দিনে (১৮১৮ খ্রীষ্টাব্দের ২৩ মে) এটি প্রথম প্রকাশিত হয়। বাংলা সংস্কৃতির ইতিহাসে এই পত্রিকা আজো তুলনাহীনভাবে মর্যাদার আসনে অলংকৃত। উনিশ শতকের বাংলার ইতিহাসে সমাচার দর্পণ-এর স্থান অতুলনীয়। ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা, সমাজ, রাজনীতি, ধর্ম ইত্যাদিসহ সমকালীন বাঙালি জীবনের সব দিকের পূর্ণাঙ্গ তথ্যচিত্র এই সংবাদপত্রের পাতায় চিরজাগরূক হয়ে আছে।

এখানে একটি তথ্য জানিয়ে রাখি, সমাচার দর্পণ-এর তথ্যাবলিকে বিষয়ানুসারে সাজিয়ে ও সম্পাদনা করে ভারতীয় লেখক ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ‘ঐতিহাসিক কীর্তি সংবাদপত্র সেকালের কথা’ নামে একটি তথ্যবহুল গ্রন্থ প্রকাশ করেন। গ্রন্থটিতে এই উপমহাদেশের সংবাদপত্রের পুরো বাস্তব চিত্র পাওয়া যায়। আগ্রহী পাঠকরা গ্রন্থটি সংগ্রহে রাখতে পারেন।

সমাচার দর্পণের জনপ্রিয়তার ফলে আরো কয়েকটি সাময়িক ও সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। এদের মধ্যে সমাচার দর্পণের মাত্র তিন বছরের মাথায় ১৮২১ খ্রীষ্টাব্দে সংবাদ কৌমুদী এবং চার বছরের মাথায় ১৮২২ খ্রীষ্টাব্দে সমাচার চন্দ্রিকা প্রকাশ হয়।  সংবাদ কৌমুদীর প্রতিবাদ উপলক্ষে এই সমাচারচন্দ্রিকা প্রকাশ হয়েছিল। এর সম্পাদনা করতেন ভবানীচরণ বন্দোপাধ্যায়। রামমোহন রায় প্রকাশ করেন সংবাদ কৌমদী। এভাবে সেই থেকেই সংবাদপত্রের আবেদন, চাহিদা ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়তে থাকে, এখনো তা বর্তমান। 

১৮৩৯ খ্রীষ্টাব্দে প্রথমে সাপ্তাহিক, তিনদিন এবং পরে ‘সংবাদ প্রভাকর’ নামে একটি পত্রিকা দৈনিকের মর্যাদা নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে। সম্পাদক ছিলেন ঈশ্বর গুপ্ত। মুসলমান সম্পাদিত প্রথম বাংলা পত্রিকা ‘সমাচার সভারাজেন্দ্র’ শেখ আলীমুল্লাহর সম্পাদনায় কলিকাতা থেকে প্রকাশিত হয়। ১৯৪৭ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম থেকে ‘‘দৈনিক পূর্ব পাকিস্তান’ নামে একটি পত্রিকা বের হয়। প্রায় একই সময়ে ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় জিন্দেগী।

১৯৪৯ সালে মুসলিম লীগ নেতা হামিদুল চৌধুরী প্রথম এ দেশে পেশাদারি সংবাদপত্র বের করার উদ্যোগ নেন ইংরেজি ভাষায়। ১৯৪৯ সালে মাওলানা ভাসানীর উদ্যোগে আওয়ামী লীগের মুখপত্র হিসেবে প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক ইত্তেফাক। ১৯৫৩ সালে ইত্তেফাক দৈনিক পত্রিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়। তখন এর মালিক-সম্পাদক ছিলেন তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। ১৯৫১ সালের ১৭ মে দৈনিক সংবাদ প্রকাশিত হয় খায়রুল কবিরের সম্পাদনায়। ষাটের দশকে আরো কিছু পত্রিকা যুক্ত হয়, দৈনিক আজাদী, পয়গাম, দৈনিক পাকিস্তান, দৈনিক পূর্বদেশ (প্রথমে ছিল সাপ্তাহিক) সাপ্তাহিক হলিডে, সান্ধ্য দৈনিক আওয়াজ, দি পিপলস, দৈনিক পয়গাম ও দৈনিক পাকিস্তান ছাড়া সব পত্রিকা প্রগতিশীল রাজনৈতিক আন্দোলনকে সমর্থন করেছিল। সত্তরের প্রথম দিকে প্রকাশিত হয় সাপ্তাহিক বাংলার বাণী ও একতা।


বর্তমানে সংবাদপত্রের বিচরণ রয়েছে দেশ-বিদেশের রাজনীতিতে, সামাজিক-অর্থনৈতিক জীবনধারার নানা ঘটনা প্রবাহে। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি, বিজ্ঞান-বাণিজ্য, আমোদ-প্রমোদ, খেলাধুলায়, মানবজীবনের সকল কর্মধারায় আনন্দ-বিনোদন, কৌতুক, জাদু, রাশিফলসহ হরেক রকমের পাত্র-পাত্রী, জায়গাজমি ক্রয়-বিক্রয়, বাসা ভাড়া, কর্মখালি থেকে শুরু করে আইন-আদালত, আন্তর্জাতিক খবরা-খবর বুকে ধারণ করে সংবাদপত্রই মধ্যরাতে ছুটে চলে সর্বসাধারণের দ্বারে দ্বারে।

তবে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশে এই ছুটে চলা আর লাগছে না। এখন আর পুরনো দিনের মতো একদিন পরে আগের দিনের ঘটনা পড়ার মতো যথেষ্ট সময় নেই পাঠকদের। পাঠকরা চান তাৎক্ষণিক সংবাদ। হাতের মুঠোয় থাকা মোবাইলের মাধ্যমেও তাৎক্ষণিক সংবাদ পড়ে নেওয়া যাচ্ছে। প্রতিমুহুর্তের সংবাদ প্রতিমুহুর্তে পাওয়া যাচ্ছে অনলাইন পোর্টালগুলোতে। সারা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম হয়ে উঠছে এই গণমাধ্যমটি। প্রযুক্তির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে কাগজের পত্রিকার শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে। এমনকি এই পেশার প্রতিও কমিটমেন্টের পরিমাণ বেড়েছে। সাংবাদিকতাসহ গণমাধ্যমে কাজ করা বাংলাদেশে এখন একটি পরিপূর্ণ পেশা।

স্বাধীনতার ৪৬ বছরের বাঁকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বিকাশ। সময়ের চাহিদা ও দ্রুত উৎকর্ষের সুবাদে প্রিন্ট ইলেকট্রনিক সাংবাদিকতার ধরন-ধারা-ধারণাও পাল্টে গেছে। এ দুই মাধ্যমের ব্যবধান অনেক কমে গেছে। পুঁথিগত ধারণার সঙ্গে মুদ্রণ বা প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, ব্রডকাস্ট মিডিয়া, সম্প্রচার মাধ্যম ইত্যাদি শ্রেণিবিন্যাস আর টিকছে না। টিভি, রেডিও, অনলাইনগুলো ইলেকট্রনিক জার্নালিজমের পর্যায়েই পড়ছে। আবার বৈশিষ্ট্য ও কাজের পরিধি বিচারে সংবাদপত্রগুলোকেও এখন একবাক্যে প্রিন্ট মিডিয়া নামে সীমাবদ্ধ করা যাচ্ছে না। মুদ্রণ সাংবাদিকদেরও এখন সারাক্ষণ ইলেকট্রনিকবান্ধব হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। কম্পিউটার, ইন্টারনেট, ব্লগসহ নানা ইলেকট্রনিক ফাংশনে সম্পৃক্ত তারাও।

আপনি এই মুহুর্তে ফেসবুক বা টুইটার চালাচ্ছেন? চাইলে সেখান থেকেও যে কোনো একটি অনলাইন গণমাধ্যমে গিয়ে সব নিউজ দেখে আসতে পারছেন। বাংলাদেশে সংবাদমাধ্যম হিসেবে অনলাইন এখন দিনে দিনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে যেভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে, ধারণা করা হচ্ছে নিকট ভবিষ্যতে এই মাধ্যমের জনপ্রিয়তা টেলিভিশন এবং সংবাদপত্রকে ছাড়িয়ে যাবে। এর অবশ্য প্রমাণও এরই মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে অনেক অনলাইন গণমাধ্যম অনলাইন টেলিভিশন নিয়েও আসছে। তাহলে আর টেলিভিশনের আবেদন থাকে কী?

প্রযুক্তির প্রসারে মানুষ ক্রমেই ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়ছে। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের অন্যতম কারণ এবং উপলক্ষ্য বর্তমান সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ দর্শন। এই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী অঙ্গীকার। আমরা জানি, সময় বদলে যায়, উন্নয়নের চাকা ঘুরে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়। আইসিটি খাতে সরকারের বিশেষ সাফল্যের কারণেই ডিজিটালাইজেশনের জোয়ারে ভাসছে বাংলাদেশ। দিগন্তের উন্মোচনে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রক্রিয়া ক্রমশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। টং দোকানদার থেকে কোটিপতি, সবার হাতেই ইন্টারনেট সেবা। শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত সকলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংযুক্ত।

বর্তমানে দেশ যেভাবে ডিজিটালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তার সুফল প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দিতে অনলাইন গণমাধ্যমের বিকল্প নেই। এমনকি অনলাইন সাংবাদিকতায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের সুযোগও বেশি। গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় জনগণ সকল ক্ষমতার অধিকারী। তাদের মতামতের গুরুত্বও অধিক। আর সেই মতামত প্রদান ও সুষ্ঠু প্রবাহ সৃষ্টির সুযোগ করে দেয় দেশের পত্রিকাসহ অন্যান্য গণমাধ্যমগুলো। কিন্তু আগের সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে পত্রিকার জায়গার কমতিসহ নানা সঙ্কটের কারণে সাধারণ মানুষের ভাবনাগুলো পত্রিকার পাতায় কমই উঠে আসতো। কিন্তু এখন অনলাইন সাংবাদিকতার কারণে সাধারণ মানুষের মতামতকে আরো বেশি প্রাধান্য দেওয়ার সুযোগ ঘটছে। এর মাধ্যমে অনলাইন গণমাধ্যম জাতীয় ও বৈশ্বিক নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এরই মধ্যে কিছু অনলাইন গণমাধ্যম নিজেদের অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। এর মধ্যে অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকম সবসময় ‘পজেটিভ জার্নালিজম’ রক্ষা করে চলে। এমনকি শুধুমাত্র ইতিবাচক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এই গণমাধ্যমটি দেশে অদ্বিতীয়। এভাবে প্রতিটি অনলাইন গণমাধ্যম এরই মধ্যে নিজেদের স্বতন্ত্রতা সৃষ্টি করতে পেরেছে। তৈরি হচ্ছে প্রতিযোগিতা। যদিও এই প্রতিযোগিতা, পেশাদারিত্ব ও বিকাশের অংশ। আর এই পেশাদারিত্ব হচ্ছে পাঠকের কাছে দায়বদ্ধতা। এই প্রতিযোগিতাই আমাদের দেখিয়ে দিচ্ছে- অনলাইন গণমাধ্যম কতটা এগিয়ে গেছে।

তবে বাংলাদেশে এখন ঠিক কতগুলো অনলাইন সংবাদমাধ্যম কাজ করছে সেটির সুনির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে সম্প্রতি সরকার অনলাইন গণমাধ্যমের নীতিমালা করেছে, পরিসংখ্যানের উদ্যোগ নিয়েছে। এমনকি নিবন্ধনেরও কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা আশা করছি এর মাধ্যমে অনলাইন গণমাধ্যম একটি শক্ত কাঠামোর উপর দাঁড়াবে। যুগের চাহিদা হিসেবে ডিজিটাল বাংলাদেশের সঙ্গে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবে।

বলছিলাম ১৯৯ বছর আগে জন্ম নেওয়া ‘সমাচার দর্পণ’ এর কথা।  এই সাময়িকপত্রের মধ্য দিয়ে শিক্ষিত বাঙালি প্রথম গদ্যরচনার রস গ্রহণ করতে শেখে। তখনকার বাংলা সাহিত্য বলতে সবই পদ্য রচনা ছিল। সমাচার দর্পণ প্রকাশ হবার ফলে পাঠকের সংখ্যা বাড়তে লাগল এবং আরো সাময়িকপত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পেল। এর ফলে বাংলা গদ্য সাহিত্যের ভবিষ্যৎ উন্নতির পথও খুলে যায়। সে হিসেবে বাংলা সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিকাশের রেনেসাঁ বলা যায় সমাচার দর্পণকে। আর ভারত-পাকিস্তান বিভক্ত হওয়ার পর থেকে পাকিস্তান আমাদের প্রদেশের উপর যেভাবে প্রতারণা করছিল, তার সব উঠে আসে সংবাদপত্রের মাধ্যমে। এমনকি বলা হয়ে থাকে, তৎকালীন সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য আমাদের স্বাধীনতা ত্বরানিত হয়েছিল। এ কারণে স্বাধীন বাংলাদেশ সৃষ্টির ‘সমাচার দর্পণ’ বলা যায় তখনকার সকল সংবাদপত্রকে।

আর বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ও এগিয়ে চলছে অনলাইন গণমাধ্যমের সাথে পায়ে পা মিলিয়ে। পুরো বিশ্বকে হাতে এনে দিয়েছে অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো। বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে বসে যে কোনো খবর পাওয়া যাচ্ছে নিমেষেই। অনলাইন গণমাধ্যমেই পাওয়া যায় ডিজিটাল স্বাদ। ডিজিটালের আর্শিবাদপুষ্ট হয়েই এই মাধ্যমটির পথচলা। মোট কথা, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ নাম কর্মসূচীর ছায়া যেন দেখা যায় অনলাইন গণমাধ্যমে। সে হিসেবে ‘অনলাইন গণমাধ্যম’কে ডিজিটাল বাংলাদেশের ‘সমাচার দর্পণ’ বলাই যায়।

লেখক: সাংবাদিক।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ মে ২০১৭/হাসান/শাহ মতিন টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়