ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ডুবে যাওয়ার শঙ্কা নিয়ে চলছে ফেরি

বাদল সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১৯ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ডুবে যাওয়ার শঙ্কা নিয়ে চলছে ফেরি

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার মধুমতি নদীর কালনা ফেরি ঘাটের চার নম্বর ফেরির তলদেশসহ বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র হওয়ায় ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই ঘাটে চলাচলকারী চার নম্বর ফেরিটি অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে চালানো হচ্ছে। ঘাটে আরেকটি ফেরি থাকলেও ইঞ্জিনের অভাবে তা চালু করা যাচ্ছে না।

ঘাট কর্তৃপক্ষ কোনোমতে জোড়াতালি দিয়ে পরিবহন ও যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করলেও সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের। ফলে এবারের ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মার এপারে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফেরি ঘাট হলো গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার কালনা ফেরি ঘাট। ঢাকা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোলসহ বিভিন্ন জেলার পরিবহন চালক ও যাত্রীরা এ ঘাটটি ব্যবহার করে থাকেন। প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ শতাধিক যাত্রীবাহী বাস, মালবাহী ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন ও কয়েক হাজার যাত্রী পারাপার হয়ে থাকে। এখন ঈদের সময় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আসা গরু এই ফেরি দিয়ে পারাপার হচ্ছে।
 


রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের দূরত্ব কম হওয়ায় যানবাহনের চাপ এ ঘাটে ব্যাপক। কিন্তু দীর্ঘদিনের পুরাতন হওয়ায় চার নম্বর ফেরির তলদেশসহ বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র দেখা দিয়েছে। অন্য ফেরিটি ইঞ্জিনের অভাবে বন্ধ থাকায় দিনে দুই থেকে তিন বার পারাপার করার পর সেচ দিয়ে আবার চালাতে হচ্ছে ফেরিটি। ফলে ফেরি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পানি সেচের জন্য দিনে কয়েকবার ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ঘাটের দুই পাশে আটকা পড়ে শতাধিক যানবাহন। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের। দ্রুত মেরামত করা না হলে ঈদের আগেই ফেরি চলাচল বন্ধ হবার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হবে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের।

ফেরির চালক ও খালাসিদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ২০০৪ সাল থেকে চার নম্বর ফেরিটি এই ঘাটে চলছে। এর মধ্যে বডির কোনো মেরামত করা হয়নি। এখন ফেরিটির তলদেশের বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র ও ওপরের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ১৬ নম্বর ফেরিটি বন্ধ থাকায় চার নম্বরের ওপর বেশি চাপ পড়ছে। ফলে ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি লোড দিতে হচ্ছে। সেচ দিয়ে ফেরি চালাতে হচ্ছে। দ্রুত ফেরিটি মেরামত করা না হলে আবারো যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

ঢাকা-নড়াইল রুটের খানজাহান আলী পরিবহনের চালক রনি শেখ, অ্যাম্বুলেন্স চালক কবির, ব্যবসায়ী বদরুল আলম অভিযোগ করেন বলেন, কালনা ঘাটের ফেরি প্রায়ই অকেজো হয়ে পড়ে। ঘাটে এসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয়। দুটি ফেরির একটি প্রায়ই অকেজো থাকে। এই ঘাটে আগে একটি ফেরি ডুবেছিল। নতুন একটা ফেরি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু ইঞ্জিন বসানো হয়নি। ফেরির এই অবস্থার কারণে দুই পাড়ের অসংখ্য যানবাহনকে পারাপারের জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
 


কালনা ফেরি ঘাটের ইজারাদার মঞ্জুর হাসান বলেছেন, ‘এখানে যানবাহন পারাপারকারী চার নম্বর ফেরিটির তলদেশসহ বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র দেখা দিয়েছে। দুই-তিনবার পারাপার করার পর সেচ দিয়ে আবার চালাতে হচ্ছে। ততক্ষণে ফেরি ঘাটের দুই পাড়ে জমে যায় শত শত যানবাহন। দ্রুত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে যেকোনো সময় আবারো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর ঘাটে বসে থাকা ১৬ নম্বর ফেরিটিতে নতুন করে বেশি শক্তির ইঞ্জিন বসানো না হলে যানবাহন পারাপার অসম্ভব হয়ে পড়বে।’

ডুবে যাবার আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ গোপালগঞ্জ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী খ মো. শরিফুল আলম বলেন, ‘একটি ফেরিতে ইঞ্জিনের সমস্যা আরেকটিতে কিছু সমস্যা আছে শুনেছি। বিষয়টি ফেরি ডিভিশনকে জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সমাধান হবে।’




রাইজিংবিডি/গোপালগঞ্জ/১৯ আগস্ট ২০১৮/বাদল সাহা/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়