ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

তানিয়া ধর্ষণ-হত্যা: আদালতে বাসচালকের স্বীকারোক্তি

রুমন চক্রবর্তী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৭, ১২ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তানিয়া ধর্ষণ-হত্যা: আদালতে বাসচালকের স্বীকারোক্তি

শাহীনুর আক্তার তানিয়া

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে সেবিকা শাহীনুর আক্তার তানিয়া ধর্ষণ ও হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বাসচালক নুরুজ্জামান নুরু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

শনিবার রাতে কিশোরগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল মামুনের খাসকামরায় তিনি জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে নেয় চালক নূরুজ্জামান নূরু।

রোববার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান। জবানবন্দি শেষে নূরুজ্জামানকে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বাসচালক তার জবানবন্দিতে জানান, গত সোমবার কটিয়াদী থেকে পিরিজপুর যাওয়ার মাঝপথে নুরুর খালাত ভাই বোরহান যাত্রীবেশে বাসে ওঠে। এ সময় বাসে ছিল চালক, তার সহকারী লালন, বোরহান এবং তানিয়া। এর কিছুক্ষণ পর সামনের সিটে বসে থাকা তানিয়াকে চালকের সহকারী লালন জোর করে সামনে থেকে টেনেহিঁচড়ে বাসের মাঝামাঝি নিয়ে যায়। এরপর লালনের সহযোগিতায় বোরহান তানিয়াকে প্রথমে ধর্ষণ করে। তারপর লালনকে মিনিবাসটি চালানোর দায়িত্ব দিয়ে ধর্ষণ করে চালক নুরু। সবশেষে ধর্ষণ করে চালকের সহকারী লালন। এ সময় বাসটি একটি কলাবাগানের পাশে দাঁড়ানো অবস্থায় ছিল।

সংঘবদ্ধ এই ধর্ষণ শেষে তানিয়াকে হত্যার এক ভয়ংকর ফন্দি আঁটে তারা তিনজন। জামতলী এলাকায় তানিয়াকে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়। এ সময় বাসের কোনো একটি অংশের সঙ্গে ধাক্কা লেগে থেঁতলে যায় তানিয়ার মাথা।

এরপর বাসের লোকজন এটিকে দুর্ঘটনা বলে স্থানীয় কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে। কেউ রাজি না হওয়ায় তারাই তানিয়াকে হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার হোতা তিনজনের মধ্যে দুইজন পুলিশের জিম্মায় রয়েছে। তবে বোরহানকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশ বলছে, লাশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াসহ নানা অপরাধে বেশ কয়েকজনজড়িত রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ গত ৬ মে রাতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে বাসচালক নূরুজ্জামান নূরু, হেলপার লালনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। পরের দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের আট দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। এ ঘটনায় নার্স তানিয়ার বাবা গিয়াস উদ্দিন বাদী হয়ে চালক, হেলপারসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে বাজিতপুর থানায় মামলা করেন।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান মিয়া ও কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। সেখানে তানিয়ার স্বজনদের তারা সান্ত্বনা দেন।

এ দিকে তানিয়ার ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান। এতে বলা হয়েছে, ধর্ষণের আলামতসহ তানিয়ার শরীরে অন্তত ১০টি স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মাথার খুলিও ভেঙ্গে গেছে। মাথার আঘাতের জন্যই তানিয়ার মৃত্যু হয়েছে।



রাইজিংবিডি/কিশোরগঞ্জ/১২ মে ২০১৯/রুমন চক্রবর্তী/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়