ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘তামাক নিয়ন্ত্রণে এখনো চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:২৮, ২৯ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘তামাক নিয়ন্ত্রণে এখনো চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে’

সচিবালয় প্রতিবেদক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এমপি বলেছেন, ‘জনস্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে বাংলাদেশে যথেষ্ট অগ্রগতি হলেও কয়েকটি ক্ষেত্রে এখনো চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে।’

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উদযাপন উপলক্ষে সচিবালয়ে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

৩১ মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। এ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পুরোপুরি বাস্তবায়নের জন্য দরকার জনসচেতনতা। তাই ধূমপান যে বিষপান ও তামাক ব্যবহারের কুফল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে হবে।

আইন বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আইনের বিধিমালা অনুযায়ী তামাকের ক্ষতিকর বিষয় সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে ২০১৬ সালের মার্চ থেকে সব তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কে ছবিসহ স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদান করা হচ্ছে, কিন্তু এই সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণী প্রদানে বিভিন্ন তামাক কোম্পানি আইন লঙ্ঘন করছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে (পয়েন্ট অব সেল) তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন সরবরাহ করে আইন লঙ্ঘনে উৎসাহী করছে তামাক কোম্পানিগুলো। অথচ আইন অনুযায়ী এগুলো নিষিদ্ধ। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব অবৈধ বিজ্ঞাপন অপসারণ করা হবে।

বরবরের মতো স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে গঠিত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের টাস্কফোর্স কমিটি এবং বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংগঠনের উদ্যোগে সারাদেশে দিবসটি উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে। ‍

দিবসটি উপলক্ষে দেশের প্রত্যেকটি জেলায় কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। ৩১ মে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে সকাল ১১টায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

বাংলাদেশে ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যে মেডিক্যাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের অধূমপায়ী হওয়ার নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশের সব মেডিক্যাল কলেজ ধূমপানমুক্ত করা হয়েছে। রাস্তাঘাট, বাস, ট্রেনসহ পাবলিক প্লেসে ধূমপানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তারপরও পুরোপুরি তামাক নিয়ন্ত্রণে কিছুটা সময় লাগবে। জনগণকে সচেতন করা গেলে এক সময়ে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব হবে।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে যেভাবে ধূমপান চলছে তার কঠোর সমালোচনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এখন যে কেউ প্রকাশ্য ধূমপানে বিব্রত হন, কিন্তু উন্নত দেশগুলোতে বিশেষ করে যেসব দেশ এই ধূমপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সেখানে প্রকাশ্যে ধূমপান করছে। অথচ এ নিয়ে তাদের মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই।

তিনি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার। জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর তামাক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে সরকার বদ্ধপরিকর।

তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলায় সরকার ২০১৪-১৫ অর্থবাজেটে প্রথমবারের মতো সব তামাকজাত দ্রব্যের ওপর স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ আরোপ করা হয়। সপ্তম পঞ্চম বার্ষিক পরিকল্পনারয় অসংক্রামক রোগ ও তামাক নিয়ন্ত্রণের বিষয়কে গুরুত্বের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১৭-২১ সাল পর্যন্ত অসংক্রামক রোগ সংক্রান্ত অপারেশনার প্ল্যানে তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বে ২০১৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান স্পিকার সামিটে বাংলাদেশকে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন। তার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার জনস্বাস্থ্য উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১ প্রণয়ন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসচিব সিরাজুল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ মে ২০১৭/নঈমুদ্দীন/আসাদ/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়