তুচ্ছ ঘটনায় যশোরে কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা
যশোর প্রতিনিধি : তুচ্ছ ঘটনায় যশোরের শেখহাটি জোড়াপুকুর এলাকায় মামুন নামের এক কলেজছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করেছে সংঘবদ্ধ একটি সন্ত্রাসী চক্র।
মামুন সরকারি এমএম কলেজের ছাত্র ও শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের মৃত আব্দুর রউফের ছেলে।
শনিবার রাতের এ ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন শ্যামলী নামের এক নারী ও আরিফ নামের অপর এক কলেজছাত্র।
দুর্বৃত্তদের কাছে আটক থাকা বন্ধুকে উদ্ধার করতে গিয়ে দুপক্ষে বাগবিতণ্ডা এবং পরে ছুরিকাঘাতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। জখম দুজনকে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বাপ্পি নামের যশোর এমএম কলেজের এক ছাত্র তার বান্ধবীকে নিয়ে শনিবার বিকেলে শেখহাটি এলাকায় ঘুরতে যান। এ সময় এলাকার হারুন শেখের ছেলে চাঁদাবাজ চক্রের সদস্য সাগর ও তার সহযোগী ফয়সাল তাদের গতিরোধ করে কথা আছে বলে জানান।
পরে জোড়াপুকুর এলাকার একটি জায়গায় ওই দুজনকে আটকে রেখে চাঁদা দাবি করেন। তারা বাপ্পির বন্ধুদের কাছেও ফোন করে তাদের ছাড়ানোর জন্য টাকা চান। এ সময় বাপ্পি মোবাইল ফোনে বন্ধুদের শরণাপন্ন হলে এমএম কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ঘোপ এলাকার মামুন ও অপর বন্ধু আরিফ আটক থাকা দুজনকে ছাড়াতে যান।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জোড়াপুকুর এলাকার সাগরকে তারা বাপ্পি ও তার বান্ধবীকে ছেড়ে দিতে বলেন। এ সময় বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে মামুন ও সাগর এবং একে অপরকে ধাওয়া ও ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় মামুন, আরিফ গুরুতর জখম হন। এক পর্যায়ে দুর্বৃত্ত সাগরের মা শ্যামলী এগিয়ে আসলে তাকে ছুরিকাঘাত করেন ছাত্র মামুন ও আরিফ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মামুনের বুকে ও ডান পায়ে ছুরিকাঘাত করে সাগর ও ফয়সাল। ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়ে মামুন।
এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে লোকজন ছুটে আসে। এ সময় পালিয়ে যায় সাগর ও ফয়সাল। গুরুতর জখম মামুন, আরিফ ও সাগরের মা শ্যামলীকে উদ্ধার করে যশোর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে, ওই সংঘর্ষের সময় বান্ধবীকে নিয়ে পালিয়ে যায় আটক থাকা বাপ্পি।
চিকিৎসাধীন আরিফ ও নিহত মামুনের বন্ধুরা জানান, মূলত সাগর ও ফয়সল চক্র এলাকার মোমেল নামের একজনের নেতৃত্বে চলে। চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইলিং তাদের মূল কাজ।
হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, শ্যামলীকে হাসপাতালে দেখতে এসে আটক হয়েছে পোস্ট অফিসপাড়ার শফিকুলের ছেলে সাগরের মামা বাবলা। পুলিশ বলছে, বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা বাবলাকে ধরে দিয়েছে। এ সময় হাসপাতাল এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় কোতয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অপূর্ব হাসান হাসপাতাল ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। সাগর ও ফয়সলসহ ঘটনায় জড়িতদের খোঁজা হচ্ছে।
রাইজিংবিডি/যশোর/১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/বিএম ফারুক/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন