ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

দীপন হত্যার দুই বছর পূর্ণ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৩১ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দীপন হত্যার দুই বছর পূর্ণ

শাহ মতিন টিপু : প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন হত্যার দুই বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৫ সালে ৩১ অক্টোবর দুপুরের পর রাজধানীর শাহবাগে আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় নিজ প্রকাশনা সংস্থা জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে তিনি নির্মমভাবে খুন হন।

হামলাকারীরা অজ্ঞাতনামা হলেও হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আনসার আল ইসলাম বাংলাদেশ নামে একটি জঙ্গী সংগঠন । খুনের কারণ হিসেবে মনে করা হয়, সন্ত্রাসী হামলায় নিহত লেখক-ব্লগার অভিজিত রায়ের ‘বিশ্বাসের ভাইরাস’বইটি প্রকাশের জন্য দীপন জঙ্গিদের টার্গেটে পরিনত হন।

একই দিনে কাছাকাছি সময়ে রাজধানীর লালমাটিয়ায় অভিজিৎ রায়ের আরেক প্রকাশক শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর কার্যালয়ে ঢুকে এর স্বত্বাধিকারী আহমেদুর রশীদ টুটুল, লেখক সুদীপ কুমার ওরফে রণদীপম বসু ও প্রকৌশলী আবদুর রহমানকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার চেষ্টা করে। অভিজিৎ রায়ের ‘অবিশ্বাসের দর্শন’সহ কয়েকটি বই বের করেছে শুদ্ধস্বর। এর আগে ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট হত্যায় যে পন্থা অবলম্বন করা হয়েছিল এই দুটি হামলার ধরনও ছিল একই।

নিহত ফয়সল আরেফিন দীপন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার অধ্যাপক ও লেখক আবুল কাসেম ফজলুল হকের একমাত্র ছেলে। এ ঘটনায় দীপনের স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য মাঈনুল হাসান শামীম, আব্দুস সামাদ ওরফে আব্দুস সবুর ও খায়রুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আসামি শামীম ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সবুরকেও কয়েক দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

দীপন হত্যা মামলায় আটক তিনজন কারাগারে আছেন এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মামলার অভিযোগ পত্র তৈরির জন্য কাজ করছেন বলে জানিয়েছেন। এই দুই মামলারই তদন্ত করছে ডিবি পুলিশ। হত্যার দু'বছর পার হলেও সেই মামলার এখনও কোনো কুল কিনারা হয়নি।

তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পিছিয়েছে ২২ বার
আদালত সূত্রের খবর, এই দু’বছরে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ২২ বার পিছিয়েছে। সর্বশেষ গত ২৪ অক্টোবর আদালত এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২১ নভেম্বর দিন ধার্য্য করেছেন।

ডিবি পুলিশের ভাষ্য, খুনিরা শনাক্ত হলেও সবাইকে গ্রেফতার করতে না পারায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলে সময় লাগছে। তবে শিগগিরই এই হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুর রহমান বলেন,  দীপন হত্যা মামলায় আরও বেশকিছু আসামির নাম আমরা পেয়েছি। সেগুলো ছদ্ম নাম হলেও শনাক্ত করে বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় দফায় দফায় পেছানোর কারণে হতাশা প্রকাশ করেছে দীপনের পরিবার। দীপনের স্ত্রী রাজিয়া রহমান জলি মিডিয়াকে বলেছেন, দীপনের হত্যা কেন হয়েছিল সেই অন্ধকার পরিবেশ কাটিয়ে তার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চাই। আগামী প্রজন্ম যেন মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে যেতে পারে তার জন্য কাজ করে যেতে চাই।

ফয়সল আরেফিন দীপনের বাবা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বিবিসিকে বলেন, ‘প্রথম থেকে ডিবির একজন কর্মকর্তা তাদের এ মামলার তদন্ত সম্পর্কে অবহিত করেছেন। দেড় বছর আগে ফাইল পত্র নিয়ে এসে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে তারা কিভাবে এগুচ্ছেন। তারা বলেছিলেন যে অন্য মামলার সূত্র ধরে তারা সন্ধান পেয়েছেন যে কারা দীপনকে হত্যা করেছে কিন্তু তারা যে নামগুলো পেয়েছেন সেগুলো ছদ্মনাম। এখন দেড় বছর পরেও একই কথা বলছেন, তদন্ত আর এগোয়নি।’

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩১ অক্টোবর ২০১৭/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়