ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

দুই বখাটের ভয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ

মো. মনিরুল ইসলাম টিটো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ১ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দুই বখাটের ভয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ

ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গাজিরটেক ইউনিয়নের চর সর্বান্দিয়া গ্রামে বখাটেদের ভয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।

গত ১ জুন দুপুরে স্থানীয় মক্তবে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী কোরআন শরীফ পড়তে যায়। ওই মক্তবের শিক্ষক না থাকার সুযোগে বখাটে মাইনদ্দিন (২৫) ও আলামিন মৃধা (২০) মেয়েটিকে তার চাচা ডাকছে বলে মাদ্রাসার পিছনে নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এলে আসামিরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় মেয়েটির বাবা গত ৩ জুন চরভদ্রাসন থানায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে দুই বখাটে তাদের সঙ্গীদের নিয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিতে থাকে।

ওই স্কুলছাত্রীর পরিবার জানায়, দুই বখাটে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে মেয়েটি প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার সময় রাস্তায় মোটর সাইকেল নিয়ে গতিরোধ করে। তারা হুমকি দিয়ে বলে, ‘তোর বাপ আমাগো নামে মামলা দিছে। তোরে এখন তুইলা নিয়া গেলে তোর বাপে কয়ডা মামলা দিব। বাচঁপার চাইলে তোর বাপরে দিয়ে মামলা উঠাইয়া ফেলা’।

হুমকির পর শুক্রবার চরভদ্রাসন থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে ওসি অভিযোগ না নিয়ে ফিরিয়ে দেয় বলেও পরিবার জানায়।

এ ব্যাপারে ধর্ষণচেষ্টা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যায় মেয়েটির বাবা আমার কাছে আসলে আমি ডিউটি অফিসারের নিকট সাধারণ ডায়েরি করতে পাঠাই, পরে সে কি করেছে আমার জানা নাই।’

আসামি ধরার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘মামলা হওয়ার পর থেকে আমি গাজীপুরের নির্বাচনসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় আসামি ধরা সম্ভব হয় নাই। পুলিশ সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’

এ বিষয়ে চরভদ্রাসন থানার অফিসার ইনচার্জ রাম প্রসাদ ভক্ত হুমকি দেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয় উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা তো আসামি খূঁজে পাচ্ছি না, তারা পলাতক। আসামি কোথায় আছে এমন তথ্য মেয়ের পরিবার দিতে পারছে না। তথ্য দিলে আসামি ধরতে তো আমাদের সমস্যা নেই। তারপরও পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে আসামিদের ধরতে।’

ধর্ষন চেষ্টা মামলার তদন্ত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মামলাটি এসআই শহীদুল ইসলাম তদন্ত করছিলেন, কিন্তু সে ট্রেনিং এ চলে যাওয়ায় এখন নতুন কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করবেন।’

এই বিষয়ে ফরিদপুর সদর সার্কেল এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আতিকুল ইসলাম জানান, তিনি ছুটিতে ঢাকা রয়েছেন। বিষয়টি তিনি দেখবেন। আসামি ধরার ব্যাপারে যদি পুলিশের গাফিলতি থাকে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

এদিকে বখাটেদের ভয়ে মেয়েটি এখন স্কুলে যেতে ভয় পাচ্ছে। এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই বখাটেদের যন্ত্রণায় আরো অনেকেই অতিষ্ঠ এবং ভীত-সন্ত্রস্ত।

বখাটে মাইনুদ্দিন ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ভুগোল ও পরিবেশ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। অপরদিকে বখাটে আলামিন ফরিদপুর সদর থানার বাকীগঞ্জ ইসলামিয়া ফাজিল (বিএ) মাদ্রাসার আলীম পরীক্ষার্থী।




রাইজিংবিডি/ফরিদপুর/১ জুলাই ২০১৮/মো. মনিরুল ইসলাম টিটো/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়