ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

দেশপ্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

এসকে রেজা পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩৮, ১৬ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশপ্রেমের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনে দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীতে জাতিগঠনে অবদান রাখার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বানীতে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উদযাপনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তাঁর জীবন, কর্ম ও আদর্শ সম্পর্কে জানতে পারবে এবং দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামীতে জাতিগঠনে অবদান রাখতে সক্ষম হবে।’

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল শিশু-কিশোরকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, ‘রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধু ছিলেন নীতি ও আদর্শের প্রতীক। দেশ ও জনগণের কল্যাণ ও অধিকার আদায়ে জীবনভর সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। তিনি জানতেন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে হলে নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালনের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শৈশব থেকেই তাদের মধ্যে চারিত্রিক গুণাবলীর উন্মেষ ঘটাতে হবে। জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা, সততা, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’

বঙ্গবন্ধু’র ৯৯তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে বজ্রকণ্ঠে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন তা ছিল মূলত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। বাঙালির আবেগ ও আকাঙ্খাকে ধারণ করে তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’, যা ছিল মূলত স্বাধীনতার ডাক।’

তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ভাষণের সেই ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ ১৯৭১ জাতির পিতা ঘোষণা করেন বাঙালি জাতির বহু কাঙ্খিত স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।’

আব্দুল হামিদ বলেন, ‘একটি ভাষণ কীভাবে গোটা জাতিকে জাগিয়ে তোলে, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উৎসাহিত করে, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ তার অনন্য উদাহরণ।’

তিনি বলেন, ‘ইউনেস্কো ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ওয়ার্ল্ড ডেমোক্রেসি হেরিটেজ’ এর মর্যাদা দিয়ে মেমরি অফ দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টার’-এ অন্তর্ভুক্ত করেছে। তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু আজ এক ও অভিন্ন সত্তায় পরিণত হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আজীবন সাম্য, মৈত্রী, গণতন্ত্রসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত মানুষের স্বাধীনতার প্রতীক, মুক্তির দূত। ১৯৭৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আলজিয়ার্সে জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে ভাষণে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব আজ দু’ভাগে বিভক্ত-শোষক আর শোষিত ; আমি শোষিতের পক্ষে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ক্ষণজন্মা এই মহাপুরুষ শৈশব থেকেই ছিলেন অত্যন্ত মানবদরদী কিন্তু অধিকার আদায়ে আপোশহীন।’

আবদুল হামিদ বলেন, ‘চল্লিশের দশকে এই তরুণ ছাত্রনেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের সংস্পর্শে এসে সক্রিয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন।’

বাঙালির অধিকারের প্রশ্নে তিনি কখনো শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে আপোশ করেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৫৮ এর সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬ এর ৬-দফা, ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচনসহ বাঙালির মুক্তি ও অধিকার আদায়ে পরিচালিত প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দেন। এজন্য তাঁকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে। সহ্য করতে হয়েছে অমানুষিক নির্যাতন।’

বঙ্গবন্ধু আমাদের চিরন্তন প্রেরণার উৎস উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, ‘তাঁর নীতি ও আদর্শ প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে পড়ুক, গড়ে উঠুক সাহসী, ত্যাগী ও আদর্শবাদী নেতৃত্ব।’ বাণীতে তিনি জাতির পিতার ৯৯তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ মার্চ ২০১৯/রেজা/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়