ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দেশে ২৭ লাখের কম বেকার

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ২০ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দেশে ২৭ লাখের কম বেকার

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, বাংলাদেশে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর আড়াই শতাংশেরও কম কর্মসংস্থানের বাইরে। বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখেরও কম।

মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে বিবিএস পরিচালিত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপ প্রকাশ করা হয়। এ জরিপে উল্লিখিত তথ্য জানানো হয়।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর করা শ্রম জরিপের প্রতিবেদনে দেখা যায়, মানুষের কাজের ধরণ অনুযায়ী বাংলাদেশে কর্মক্ষম মানুষ ১০ কোটি ৯১ লাখ। এদের মধ্যে বেকার ২৬ লাখ ৮০ হাজার। কৃষিতে কর্মসংস্থান ২৩ শতাংশ (২৪ দশমিক ৭ মিলিয়ন), ইন্ডাস্ট্রি সেক্টরে ১১ শতাংশ (১২ দশমিক চার মিলিয়ন), সার্ভিস সেক্টরে ২২ শতাংশ (২৩ দশমিক সাত মিলিয়ন) এবং অনান্য সেক্টরে ৪২ শতাংশ (৪৫ দশমিক ৫ মিলিয়ন)।

জরিপ অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৩ লাখ মানুষ চাকরি পেয়েছেন। একই সময়ে বিদেশে চাকরি হয়েছে আরো ১০ লাখের। এর বাইরে ১৪ লাখ মানুষ আগে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করলেও এই সময়ের মধ্যে মজুরির আওতায় এসেছেন। সব মিলিয়ে ওই অর্থবছরের মোট ৩৭ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

অনুষ্ঠানে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন প্রকল্প পরিচালক কবির উদ্দিন আহমদ।

কবির উদ্দিন আহমদ জানান, ৬ কোটি ৩৬ লাখ কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৩৫ লাখ এবং নারী প্রায় ২ কোটি। ২০১৫-১৬ সালের জারিপে দেখা গেছে, ৬ কোটি ২১ লাখ কর্মক্ষম মানুষের মধ্যে পুরুষ ৪ কোটি ৩১ লাখ এবং নারী ১ কোটি ৯১ লাখ। এ হিসেবে ২ বছরে শ্রমশক্তিতে নারীর হার বেড়েছে প্রায় ৯ লাখ। ধীরে ধীরে শ্রমের রূপান্তর ঘটছে। কৃষিনির্ভরতা থেকে বর্তমানে সেবা ও শিল্পের দিয়ে যাচ্ছে কর্মসংস্থান।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে কৃষি খাতে নিয়োজিত ছিল ২ কোটি ৫৪ লাখ মানুষ। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে কমে গিয়ে শ্রমিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৪৭ লাখ। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান বেড়েছে সেবা খাতে। গত অর্থবছরে সেবা খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ। তার আগের অর্থবছর এর পরিমাণ ছিল ২ কোটি ২০ লাখ। এছাড়া শিল্প খাতে গত অর্থবছরে নিয়োজিত ছিল ১ কোটি ২৪ লাখ মানুষ। তার আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ১ কোটি ২২ লাখ।

দেশে মোট কর্মসংস্থানের ৮৫ শতাংশ অনানুষ্ঠানিক খাতের। প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থান ১৪ দশমিক ৯ শতাংশ। মোট কর্মসংস্থানের এক তৃতীয়াংশ মানুষের আনুষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেই। প্রায় ১ কোটি ৫৭ লাখ কর্মজীবী মানুষের সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত। ১ কোটি ৮৭ লাখ মানুষ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়েছেন। বাকিরা উচ্চ শিক্ষিত।

প্রতিবেদনে এবারই নতুনভাবে তুলে আনা তথ্যে দেখা যায়, বিগত এক বছরে কর্মক্ষম কিন্ত বেকার, খণ্ডকালীন কর্মী এবং যারা জরিপের সময় থেকে তার আগের এক মাসে কাজ খোঁজেননি, কিন্ত কাজ দিলে করতে প্রস্তুত এমন মানুষের সংখ্যা কমেছে। গত অর্থবছরে এ সংখ্যা ছিল ৬৬ লাখ, আগের অর্থবছরে ছিল ৭১ লাখ ছিল। অর্থাৎ পূর্ণকালীন কাজে কর্মক্ষমতা ব্যবহারের হার বেড়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী পরিবারে মজুরি ছাড়া কাজ করতেন এমন মানুষের সংখ্যাও দিন দিন কমছে। অর্থাৎ বেশি সংখ্যক নারী উপার্জন হয় এমন কাজে যুক্ত হচ্ছেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দেশের অর্থনীতি রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্যে যাচ্ছে। এর প্রতিফলন শ্রমশক্তি জরিপে দেখা যাচ্ছে। কৃষি খাত থেকে মানুষ আস্তে আস্তে শিল্প ও সেবা খাতের দিকে ধাবিত হচ্ছে। ফলে এই দুই খাতে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ছে।

প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, নারীর সত্যিকার ক্ষমতায়নের চিত্র উঠে এসেছে জরিপে। শ্রমশক্তিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অংশগ্রহণের হার অধিক হারে বাড়ছে। এটা গর্ব করার মতো বিষয়।

অনুষ্ঠানে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম, আইএমইডি সচিব মো. মফিজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ মার্চ ২০১৮/হাসিবুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়