ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

দ্বীপকন্যা চর কুকরি-মুকরিতে রাজস্ব সেবা

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:০৭, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দ্বীপকন্যা চর কুকরি-মুকরিতে রাজস্ব সেবা

এম এ রহমান, ভোলার চর কুকরি-মুকরি থেকে : নেই শহরের কোলাহল, নেই যানবাহনের বিকট শব্দ কিংবা যানজট। এমনকি এখনো পৌঁছায়নি শহুরে বিদ্যুৎ।

আছে শুধু প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্য। স্থানীয়রা যাকে ‘দ্বীপকন্যা’ নামে ডাকে। ভোলা জেলা সদর থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে জেগে ওঠা চরটির নাম চর কুকরি-মুকরি।

কুকরি-মুকরি ইউনিয়নটি বাবুগঞ্জ, নবীনগর, রসুলপুর, আমিনপুর, শাহবাজপুর, মুসলিমপাড়া, চর পাতিলা ও শরীফপাড়া নিয়ে গঠিত। ওলন্দাজ-পর্তুগিজদের অভয়ারণ্য বলে পরিচিত চর কুকরি-মুকরিতে প্রায়ই দেশি-বিদেশি পর্যটক আর ভ্রমণপিপাসুদের সমাগম হয়। এ বনে রয়েছে ১৫ হাজারেরও বেশি হরিণ। এ ছাড়া রয়েছে অতিথি পাখি, লাল কাঁকড়া, বুনো মহিষ, বানর, বনবিড়াল, উদবিড়াল, শেয়াল, বনমোরগসহ নানা প্রজাতির বন্য প্রাণী।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অবকাঠামোগত উন্নয়ন তথা হোটেলসহ আধুনিক পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে এটি কুয়াকাটা, কক্সবাজার, সেন্ট মার্টিনের চেয়েও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হবে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সে চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়নসহ সারা দেশের ৫০১টি ইউনিয়নের তথ্য ও সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছিলেন। বর্তমানে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) হিসেবে পরিচিত। সৌরবিদ্যুতে চলছে যার কার্যক্রম।

এবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সেই ইউডিসির সাহায্য নিয়ে রাজস্ব আহরণের যাত্রা শুরু করল। রাজস্ব নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি, করসেবা সহজতর করা ও সরকারের উন্নয়ন সহযাত্রী হিসেবে ইউডিসি ব্যবহার করে ব্যক্তিশ্রেণির ই-টিআইএন দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।

চর কুকরি-মুকরির ইউডিসি দেশের মধ্যে ‘ইউডিসির মাদার প্রতিষ্ঠান’ হওয়ায় একে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হলো। ইউডিসির ২ জন উদ্যোক্তাকে দেওয়া হয়েছে ‘ই-টিআইএন’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ। এ দুই উদ্যোক্তা ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত অনলাইনে ১৪ জনের ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন।

শুক্রবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান ছুটে যান সেই মাদার ইউডিসি পরিদর্শনে। এত প্রতিকূলতার মাঝেও করসেবা প্রদান করা ও মানুষের আগ্রহ দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।


তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে, জনগণের ওপর করের বোঝা না চাপিয়ে করনেট সম্প্রসারণের। করনেট সম্প্রসারণের জন্য এনবিআর স্থানীয় পর্যায়ে যাওয়ার প্রয়াস চালাচ্ছে। একসময় রাজস্বের জন্য রাজধানী, বিভাগের ওপর নির্ভর করতাম। এখন আমরা জেলা, উপজেলা এমনকি ইউনিয়নে চলে আসছি। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের সঙ্গে পার্টনারশিপ হয়েছে।’

ইউডিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পার্টনারশিপ স্থাপনের অংশ হিসেবে ইউডিসির আদি প্রতিষ্ঠান চর কুকরি-মুকরির ইউডিসি পরিদর্শন ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্য আজ আসা।

সারা দেশের কর কমিশনারদের বার্তা দিয়ে নজিবুর রহমান বলেন, নিজ নিজ কর্ম এলাকায় যত ইউডিসি রয়েছে, সেখানে উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ও আয়কর দিতে সক্ষম ব্যক্তিদের ই-টিআইএন গ্রহণে উদ্ধুদ্ধ করা তাদের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ সম্পদের ওপর ভর করে পদ্মা সেতু বানাচ্ছে। পদ্মা সেতু হবে দক্ষিণাঞ্চলের স্বর্ণদ্বার। পায়রা বন্দর হবে রাজস্বসহ সব সম্ভাবনার দ্বার।

প্রথমবারের মতো ই-টিআইএন নেওয়া চর কুকরি-মুকরি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আবদুল বাছেদ বলেন, ‘নিজেদের উন্নয়নের জন্য কর দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থেকে ই-টিআইএন নিয়েছি।’

ই-টিআইএন নেওয়া অপর সহকারী শিক্ষক মোস্তফা মো. কামাল বলেন, ‘করের টাকা কীভাবে উন্নয়নে ব্যয় হয়, সেটা জানি। আমরা অনেক অবহেলিত। আমরা কর দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করতে চায়, চাই উন্নয়ন।’

 

 

রাইজিংবিডি/১৪ জানুয়ারি ২০১৭/এম এ রহমান/এসএন/ইভা/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়