ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নরসিংদীর মেঘনার তীরে চলছে জমজমাট বাউল মেলা

গাজী হানিফ মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নরসিংদীর মেঘনার তীরে চলছে জমজমাট বাউল মেলা

নরসিংদী সংবাদদাতা: নরসিংদী শহরের কাউরিয়াপাড়ায় মেঘনা নদীর তীরে বাউল আখড়াধামে প্রতি বছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা।

প্রতি বছরই এ মেলায় আগমন ঘটে দেশ-বিদেশের শতাধিক বাউলের। বলা যায় সপ্তাহব্যাপী আয়োজনের সাতদিনই এসব বাউল মেলাকে মাতিয়ে রাখেন। এবারও সাতদিনের এই বাউল মেলা শুরু হয়েছে রোববার বিকেলে। শেষ হবে আগামী শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ।

বাউল ঠাকুরের আখড়াবাড়ি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭০০ বছর ধরে চলে আসছে এই বাউল উৎসব। ৫০০ বছর আগে নরসিংদীতে এক বাউল ঠাকুর ছিলেন। তিনি নিজেকে শুধু বাউল বলেই পরিচয় দিতেন। এ জন্য বাউল ঠাকুরের প্রকৃত নাম জানেন না এখানকার কেউই। সেই বাউল ঠাকুরের স্মরণে তার আখড়াধামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই বাউল মেলা। তবে কে প্রথম এখানে বাউল মেলার আয়োজন করেন তার প্রকৃত তথ্যও জানা নেই কারো। সর্বশেষ ব্রিটিশ শাসনামল থেকে এখন পর্যন্ত মেলার আয়োজনকারীরা হলেন- নদীরাম বাউল, পরবর্তী সময় তার নাতি মনীন্দ্র চন্দ্র বাউল ও বর্তমানে তার ছেলে সাধন চন্দ্র বাউল, মৃদুল বাউল মিন্টু, শীর্ষেন্দু বাউল পিন্টু, মলয় বাউল রিন্টু এবং প্রাণেশ কুমার ঝন্টু বাউল। বর্তমানে প্রাণেশ কুমার ঝন্টু বাউল নরসিংদীর বাউল আখড়াবাড়ির সেবায়েত তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রতিবছরের মতো এ বছরও মেলা উপলক্ষে আখড়াধামে হাজির হয়েছেন পাশের দেশ ভারতসহ দেশ-বিদেশের শতাধিক বাউল সাধক। মরমী এ সাধকদের কাছে সাধনাই মূল ধর্ম। আত্মশুদ্ধি আর আত্মমুক্তির জন্য এ মেলায় আসেন তারা এবং তুলে ধরেন মানব প্রেমের গান। পুণ্যস্নান, মহাযজ্ঞ ও পূজা-অর্চনায় যোগ দিতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বাউল ও পুণ্যার্থীর আগমন ঘটছে মেলায়।

এদিকে মেলা উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা বাঙালির চিরচেনা মুখরোচক খাবার ও বাহারি পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন।

এ ছাড়া মেলায়  বিভিন্ন কুটির শিল্প, মৃৎশিল্প, কাঠ-বাঁশ ও মাটির তৈরি সামগ্রী, লৌহজাত ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীসহ খেলনা, ঘরের তৈজসপত্র, আসবাবপত্র, বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাকের স্টল নিয়ে বসেছেন।

তা ছাড়াও চড়ক-দোলাসহ রয়েছে নানা বিনোদনমূলক রাইড। এখানেও রয়েছে উপচে পড়া ভিড়।

বাউল আখড়ার সেবায়েত প্রাণেশ কুমার বাউল ঝন্টু বলেন, ‘মেঘনার তীরে আগে এ মেলা চলতো মাস ব্যাপি। মেঘনা নদী দিয়ে যাওয়ার সময় সওদাগররা বড় বড় পাল তোলা নৌকা তীরে ভিড়িয়ে এ ঘাটে পূণ্যস্নান করে ঘি প্রদীপ জ্বেলে মনবাসনা পূর্ণ করতে আসতেন। এখান থেকে তারা কাঠের তৈরি খাট-পালংসহ নানা গৃহস্থালী জিনিসপত্র সওদা করে নিয়ে যেতেন।’



রাইজিংবিডি/ নরসিংদী/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ /গাজী হানিফ মাহমুদ/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়