ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

নীলফামারীতে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১০, ১১ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নীলফামারীতে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি

নীলফামারী প্রতিনিধি : উজানের ঢল ও ভারি বর্ষণের কারণে তিস্তা নদীর পানি গত দুই দিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তাসংলগ্ন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।

বন্যায় চর ও নদীসংলগ্ন এলাকার বাড়িঘরে পানি প্রবেশ করেছে। রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ হাঁটু পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে নীলফামারীর জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সকাল ৬ টায় ছিল বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে। এতে পরিস্থিতি সামাল দিতে ব্যারেজের সবকটি (৪৪টি) গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।

পূর্বখরিবাড়ি এলাকার মোছা. খতেজা বেগম (৩৩) নামে এক নারী জানান, তিস্তার বন্যায় গত দুই দিন ধরে তাদের বাড়ির ভেতর পানি থাকায় কোনো প্রকার রান্না করা সম্ভব হয়নি। তারা চিড়া-মুড়ি খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।

খালিশা চাঁপানী এলাকার আব্দুল মালেক (৪০) নামে এক ব্যক্তি বলেন, বন্যায় রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে। বাড়ি থেকে বের হতে না পারায় রুজি-রোজগার করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি সরকারি ত্রাণের দাবি করেন।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান ও পূর্ব ছাতনাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, তিস্তা নদীসংলগ্ন এলাকার বন্যায় জেলার ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশা চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ি ও জলঢাকা উপজেলার, গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ি, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার ২৫টি চর এলাকার মানুষের বাড়ি ও রাস্তা-ঘাট হাঁটু পানিতে তলিয়ে রয়েছে গত দুই দিন ধরে। এতে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া ডিভিশনের উপ-বিভাগীয় প্রোকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, ভারতের গজলডোবা হতে পানি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে ওয়্যারলেসের মাধ্যমে তারা জানান। সেখান থেকে নীলফামারীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি আসতে প্রায় ১২ ঘণ্টা সময় লাগে। এ সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ তিস্তাপাড়ের মানুষদের বন্যা সম্পর্কে আগে থেকে সর্তক করে দেওয়া হয়। এ জন্য দুর্যোগ মোকাবিলায় সকল প্রকার পূর্বপ্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয় বলে দাবি করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ কর্মকর্তা।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খালেদ রহিম জানান, বন্যা মোকাবিলায় সবধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা ও ৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জলঢাকা ও ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ তা বিতরণ করবে।

তিনি বলেন, প্রয়োজনে বন্যা কবলিত মানুষদের আরো সহায়তা করা হবে। এ জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণ মজুদ রয়েছে।





রাইজিংবিডি/নীলফামারী/১১ জুলাই ২০১৭/ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়