পথের জীবন
মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : ঝাড়ু মিয়া এখন পথের মানুষ, পথই তার ঠিকানা। অবশ্য আরেকটি ঠিকানাও আছে তার। সেটা হচ্ছে ‘মাজার’। মাজারে মাজারে ঘুরে বেড়ানোর হবি তার।
বেশি সময় কাটে মামু-ভাগিনা মাজারে। এছাড়া অন্যন্যা মাজারেও যাতায়াত রয়েছে তার। পথে কিংবা মাজারে, যেখানেই থাকুন না কেন ঝাড়ু মিয়ার সঙ্গী হিসাবে রয়েছে একটি হুক্কা।
আসল নাম তার আইয়ূব আলী। কিন্তু ঝাড়ু মিয়া নামেই পরিচিত তিনি ।তার দাবি, বর্তমানে তার বয়স ১০০। এই শতবর্ষের জীবনে ৯০ বছরই তিনি হুক্কাটিকে সঙ্গে রেখেছেন বলে জানালেন। ১০ বছর বয়স থেকেই নাকি তিনি হুক্কা পানে অভ্যস্থ।এই বয়সেও বেশ শক্ত-সামর্থ্য।খাওয়া-দাওয়া তেমন নেই। তিনি জানান, ভাত না হলেও চলে কিন্তু হুক্কা না হলে তার চলেনা।
শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকায় দেখা হয় ঝাড়ু মিয়ার সঙ্গে। বাড়ির কথা জিজ্ঞাসা করলে জানান, তিনি ছিলেন হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নের দূর্গাপুর জিকুয়া এলাকার বাসিন্দা। একমাত্র পৈত্রিক ভিটে মাটিটুকু দখল করে নিয়েছে কোন এক প্রভাবশালী ব্যক্তি ।
প্রিয় জীবন সঙ্গীনি স্ত্রীকে হারিয়েছেন ১০ বছর হয়েছে। বর্তমানে হুক্কাটাই নিঃসন্তান ঝাড়ু মিয়ার একমাত্র সঙ্গী।বলেন, ‘স্ত্রীও আমাকে রেখে না ফেরার দেশে চলে গেছে। তাই আমার কাছে নেই কিছু। রয়েছে একটি হুক্কা। এখন এ হুক্কাটিই আমার প্রিয় সঙ্গী ।’
স্থানীয় বাসিন্দা তাজুল ইসলাম, মানিক মিয়া, রফিক মিয়া, জাকির হোসেন, মোতাব্বি হোসেন কাজল এরা বলেন, ‘ঝাড়ু মিয়া সহজ সরল মানুষ। মানুষ তাকে সাদা মনের মানুষ হিসেবে জানে। মাজারে মাজারে থাকেন। মাঝে মধ্যে নতুন ব্রিজ এলাকায় আমাদের কাছে আসেন। এ সময় আমরা তাকে চা খেতে বলি। অনেক সময় খান, অনেক সময় না খেয়েই চলে যান। তবে তার সাথে হুক্কা থাকে সব সময়ই।’
রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/২৭ জুলাই ২০১৭/মামুন চৌধুরী/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন