ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মাদকবিরোধী অভিযান

বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন নিহত

জাহাঙ্গীর আলম বকুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৪, ২৪ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন নিহত

ডেস্ক রিপোর্ট : দেশে চলমান মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযানে বুধবার দিবাগত রাতে বিভিন্নস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে বা মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে সাতজন নিহত হয়েছে। নিহত ব্যক্তিরা মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রাইজিংবিডির নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিনিধি এবং সংবাদদাতারা এই সংক্রান্ত খবর পাঠিয়েছেন।

কক্সবাজার : কক্সবাজার শহরের বাইপাস সড়ক সংলগ্ন কাটাপাহাড় এলাকা থেকে ইয়াবা ব্যবসায়ী মো. হাসানের (৩৫) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

মো. হাসান কলাতলী উত্তর আদর্শগ্রাম এলাকার মৃত খুইল্যা মিয়ার ছেলে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফরিদ উদ্দিন খন্দকার জানান,  সকালে বন্দুকযুদ্ধের খবর পেয়ে বাইপাস সড়কের উত্তরপাশের কাটাপাহাড় এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। লাশের পাশে এক হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট, একটি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র ও দুই রাউন্ড গুলি পড়ে ছিল।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ইয়াবার টাকা ভাগাভাগি করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে কোন্দলের জের ধরে বন্দুকযুদ্ধ হয়েছে। নিহতের শরীরে তিনটি গুলির চিহ্ন পাওয়া যায়।

নিহত মো. হাসানের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার অভিযোগে কক্সবাজার সদর থানাসহ জেলার বিভিন্ন থানায় মামলা রয়েছে।

নিহত হাসানের বড় ভাই শহর মুল্লুক বলেন, গত মঙ্গলবার সেহেরি খাওয়ার সময় বাড়ি থেকে সাদা পোশাকধারী কিছু লোক হাসানকে তুলে নিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালের মর্গে তার গুলিবিদ্ধ লাশ দেখতে পান তিনি।

কুমিল্লা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও সদর দক্ষিণ উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহত হয়েছে।

রাত ১টার দিকে চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আমানগণ্ডা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে মাদক ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া ওরফে লম্বা বাবুল নিহত হয়েছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ২০০ বোতল ফেনসিডিল ও একটি এলজি বন্দুক উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিহত বাবুল মিয়া উপজেলার পৌর এলাকার বৈদ্দের খিল গ্রামের প্রয়াত হাফেজ আহমেদের ছেলে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল জানান, মাদকের চালান যাচ্ছে- এমন সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি করলে বাবুল মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মাদকের মামলাসহ ছয়টি মামলা রয়েছে।

একই রাতে সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারার গোয়াল মথন এলাকায় আরেক মাদক ব্যবসায়ী রাজীব পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। নিহত রাজীব সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ী এলাকার চাঙ্গিনী গ্রামের শাহ আলমের ছেলে।

সদর দক্ষিণ থানার এসআই সাহিদুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৫০ বোতল ফেনসিডিল, ৪০ কেজি গাজা এবং একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে ৬-৭টি মাদকের মামলা রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় গভীররাতে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ১৫ মামলার আসামি, মাদক ব্যবসায়ী সেলিম ওরফে ফেন্সি সেলিম নিহত হয়েছে।

এ সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ছয়জন পুলিশ আহত হয়েছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সাত্তার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফেন্সি সেলিমকে মাদক বিক্রির সময় হাতেনাতে ধরতে মৌচাক এলাকায় গেলে সেলিম ও তার সহযোগীরা পুলিশের ওপর গুলি শুরু করে। পুলিশ পাল্টা গুলি করে। প্রায় ৩০ মিনিট গুলি বিনিময় হয়। এ সময় ঘটনাস্থলে সেলিম নিহত হয় ও ছয়জন পুলিশ আহত হয়েছে। আহতরা খানপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

ফেনী : ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।

ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার জাম্মুড়া রাস্তার মাথায় বন্দুকযুদ্ধ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি কাটা বন্দুক, তিনটি কার্তুজ, ৭০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ২০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে।

নিহতদের মধ্যে একজন ফুলগাজীর আনন্দপুর ইউনিয়নের মাইজ গ্রামের মোহাম্মদ মোস্তফার ছেলে সাহমিরান সামির (৩০), অপরজন সদর ইউনিয়নের মনতলা গ্রামের মৃত ফটিক মিয়ার ছেলে মজনু মিয়া ওরফে মনির (৩২)।

পুলিশ জানায়, তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে ফুলগাজী থানায় ১০টির অধিক অস্ত্র ও মাদকের মামলা রয়েছে।

ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর বন্দুকযুদ্ধে দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার সময় কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে।

গত এক সপ্তাহে জেলায় র‌্যাব ও পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ছয়জন নিহত হয়েছে। এদের একজন ধর্ষণে অভিযুক্ত এবং অন্যরা মাদক ব্যবসায়ী।

সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজের (৪৫) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি সদর উপজেলার পরানদহ গ্রামের কেরামত আলীর ছেলে।

ওই লাশের পাশ থেকে ৪৮ বোতল ফেনসিডিল, একটি দেশি রিভলবার ও চার রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার হয়েছে বলে দাবি পুলিশের।

সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ভাড়াশিমলা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাসান হাফিজুর রহমান ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, সকালে স্থানীয়দের দেওয়া খবরের ভিত্তিতে চৌবাড়িয়া এলাকা থেকে গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। লাশের পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় ৪৮ বোতল ফেনসিডিল, একটি রিভলবার ও চার রাউন্ড বন্দুকের গুলির খোলা উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার ভাড়াশিমলা চৌবাড়িয়া-খানজিয়া সীমান্ত এলাকা চোরাচালান রুট হিসেবে পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে, মাদক ব্যবসায়ী গ্রুপ নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়ে তাকে হত্যা করেছে।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাত ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশ আব্দুল আজিজকে আটক করে নিয়ে যায়। সকালে তার গুলিবিদ্ধ লাশ কালীগঞ্জ থেকে উদ্ধার করা হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মে ২০১৮/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়