ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

বর্তমান প্রজন্মের চোখে শোক দিবস

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ১৫ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বর্তমান প্রজন্মের চোখে শোক দিবস

হাসিবুল ইসলাম মিথুন : আজ জাতীয় শোক দিবস। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদৎবার্ষিকী।

স্বাধীনতা অর্জনের মুহুর্ত কিংবা বঙ্গবন্ধুকে এ প্রজন্মের কেউ দেখেনি। কিন্তু তাদের মনে ‘বাংলাদেশের নায়কের আসন’ টা ঠিকই বঙ্গবন্ধুর।

নতুন প্রজন্মের কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছে শোক দিবসের ভাবনা ও প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, এমন অভিব্যক্তি পাওয়া যায়।

‘মুক্তিযুদ্ধে ধর্ষিতা মেয়েদের বাবার নামের যায়গায় আমার নাম লিখে দেও, আর ঠিকানা দিয়ে দেও ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর’- এমন কথা বলতে পারে সে হচ্ছে মহাপুরুষ। এরকম মহাপুরুষ পৃথিবীতে আর জন্ম নিবে কি না আমার জানা নেই- এমন কথা বলছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার।

সুমাইয়া রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘আমরা তরুণ প্রজন্ম স্বাধীনতা দেখিনি। তবে যুদ্ধে আহত কোনো মুক্তিযোদ্ধা বা কোনো বই অথবা স্বাধীনতার কোনো চলচ্চিত্র দেখে অনুভব করেছি স্বাধীনতা কি জিনিস। কত কষ্ট সহ্য করতে হয়েছে সে সময়কার মানুষগুলোকে। পৃথিবীর ইতিহাসে যে সমস্ত দেশ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশ  অন্যতম। আর এই স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে সেদিন যার নির্দেশে লাখো বাঙালি চব্বিশ বছর পাক হায়েনাদের নির্যাতন থেকে মুক্তি পাওয়ার আশায় মৃত্যুকে অনিবার্য জেনেও নেতার আদেশকে শিরোধার্য মনে করে মুক্তির নেশায় মৃত্যুকে আপন করে নিয়েছিল। তিনি হলেন বাঙালি  জাতির অহংকার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। যিনি ছিলেন স্বাধীনতাকামী মানুষের এক জীবন্ত আদর্শ।’

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী লোকমান হাওলাদার বলেন, ‘১৯৭১ সালে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’। সেই ডাকে প্রাণ বাজি রেখেছিল বাংলার সাধারণ মানুষ। যার ফলাফল আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ।’

তিনি বলেন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছে আমাদের কাছে শুধু শোনা গল্প মাত্র। আমাদের নানা, নানি, দাদা, মামা বা আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে সোনা কাহিনি। সেদিন আমাদের জন্ম হয়নি। দেখিনি স্বাধীনতা শব্দটি কীভাবে আমাদের হলো।

‘ভাবতেও পারি না, মাত্র একজন লোক কী করে কোটি কোটি বাঙালিকে মোহিত করেছিলেন। হোক না তা আমাদের কাছে অন্যের মুখে শোনা গল্প। তবু তো বাস্তব। তাই উপলব্ধি করি কেবল একজন শেখ মুজিব কীভাবে সারা দেশের তরুণ-যুবাদের নাড়া দিয়ে গিয়েছিলেন। নাড়া দিয়েছিলেন পুরো বাংলাকে। কিন্তু কতটুকু জানি আমরা তার কথা, কিংবা তার ভূমিকাকে কতটা স্মরণ করি?’

বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী  রিয়াদ হোসেন বলেন, ‘আমি মনে করি, তিনিই এই দেশের জন্মদাতা। তার জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। আর বাংলাদেশের জন্ম না হলে আমি আজ তাকে নিয়ে কথা বলতে পারতাম না।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে। কিন্তু তাকে নিয়েই যখন বিতর্ক হয়, তখন আমাদের তরুণ প্রজন্মের লজ্জায় মরে যেতে ইচ্ছে করে। যার জন্য এই দেশ স্বাধীন হয়েছে তাকে নিয়ে কোনো সমালোচনা আমরা তরুণরা মেনে নিতে পারবো না।’

তিনি আরো বলেন, ‘দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র চার বছরের মধ্যে বিশ্বাসঘাতকদের হাতেই স্বাধীনতার নায়ক নিহত হলেন। আমি সরকারের কাছে তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধি হয়ে দাবি রাখছি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের সবার বিচার হোক।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ আগস্ট ২০১৭/হাসিবুল/হাসান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়