ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে’

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ১৯ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শনিবারের বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের  সর্বাত্মক প্রস্তুতি শুরু করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এ সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভার আয়োজন করে যুবলীগ।

বিএনপির ৫৯৬ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সেই কমিটির মিটিং কিন্তু আজ পর্যন্ত হয়নি। এতজনের একটা কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মিটিং কোথায় হবে? এটাই তো প্রশ্ন? অবশ্য তাদের মিটিং করার কোনো গরজও নেই। কারণ, তারা এসব নিয়ে ভাবে না। আসলে যারা নিজেদের দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র চর্চা করে না, তারা দেশের গণতন্ত্র কীভাবে প্রতিষ্ঠা করবে। তাদের গঠনতন্ত্রে কিন্তু ৫৯৬ জন নেই। তারা নিজেরাই গঠনতন্ত্রের বিরোধী।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী (শেখ হাসিনা) যদি কোনো কিছু পরিবর্তন বা সংশোধন চান, তাহলে তাকে কাউন্সিল ডেকে করতে হবে। আমাদের নেত্রী যা করবেন সবাই তা মেনে নেবেন। তারপরও তিনি কিন্তু অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চাকে বিঘ্নিত করেন না। প্রতি মাসেই আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং হয়। এই প্রথম ২০তম জাতীয় সম্মেলনের পর আমরা বর্ধিত সভা করতে যাচ্ছি। আমরা এই ছয় মাসের মধ্যে আমাদের প্রথম বর্ধিত সভা করছি। সেখানে আমরা নতুন ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র দেব।’

আওয়ামী লীগের সদস্য নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজে যুবলীগের সহযোগিতা কামনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামীকাল আমাদের নেত্রী সদস্য সংগ্রহের উদ্বোধন করবেন। এই মেম্বারশিপ ড্রাইভে নতুন মেম্বার নিতে গিয়ে অনেকেই দল ভারী করার জন্য প্যারাসাইডের অনুপ্রবেশ ঘটাতে পারে। কাজেই কোনো পরগাছা-আগাছা যাতে দলে ঢুকতে না পারে, এ ব্যাপারে আমি সকলের সহযোগিতা চাইছি। আমরা এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে পরগাছামুক্ত করতে চাই। ক্ষমতাসীন দলে অনেক সময় অনেক প্যারাসাইড ঢুকে পড়ে। এবার রিনিউ করতে গিয়ে, নতুন মেম্বারশিপ দিতে গিয়ে অনেক প্রবেশকারীকে ঠেকানোর একটা লক্ষ্য আছে। আমরা সেটা ইনশাল্লাহ বাস্তবায়ন করব।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে দলীয় মতবিনিময়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘তার (সজীব ওয়াজেদ জয়) সাথে আমরা বর্তমান এবং ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছি। সেখানে একটা ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রাম ছিল। সেখানে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় ৮৪টি জেলার (সাংগঠনিক জেলা) জন্য তার পক্ষ থেকে একটি করে কম্পিউটার দেওয়া হবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আগামী নির্বাচনের জন্য আগামীকালের বর্ধিত সভায় আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। এর মধ্য দিয়ে আমরা আগামী নির্বাচনের সর্বাত্মক প্রস্তুতি শুরু করছি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে চাই।’

ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘আমারও ভুল-ক্রটি হতে পারে। আমারও সমালোচনা থাকতে পারে। আমি মনে করি, সমালোচকরাই আমার বড় বন্ধু। আর যারা বন্দনা এবং চাটুকারি-মোসাহেবি করে তারাই হচ্ছে আমার বড় শত্রু। কারণ, চাটুকার মোসাহেবদের চেয়ে বড় শত্রু আর কেউ নেই।’

বিএনপির সাথে সমঝোতা করতে হবে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আপনারাই সর্বশেষ বেগম জিয়ার বাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। সমঝোতা আমরা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আপনারা সমঝোতার দুয়ার বন্ধ করে দিয়েছেন। সামনে নির্বাচন হবে, আসুন। আপনাদের আমরা টেনে আনব না। এটা আপনাদের অধিকার। যদি মনে করেন, এ দেশে রাজনীতি করবেন।’

বিএনপির ভিশনের সমালোচনা করে তিনি আরো বলেন, ‘তারা ভিশন বানাতে পারে। কিন্তু লেটেস্ট টেকনোলজি মানে না, ডিজিটাল মানে না। ইভিএম হচ্ছে নির্বাচনের লেটেস্ট টেকনোলজি। ডিজিটাল পদ্ধতি। ভিশন থেকে ডিজিটাল কি আলাদা? তারা ইভিএম মানে না, কিন্তু ভিশন মানে। এটাও তো এক স্ববিরোধিতা।’

আগামী নির্বাচনে যুবসমাজের চেতনাকে কাজে লাগিয়ে বিজয় অর্জনের পথ রচনা করার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের। পাশাপাশি যেকোনো পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান তিনি।

যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, ফারুক হোসেন, সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এবং মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন। সভা সঞ্চালনা করেন যুবলীগের প্রকাশনা ও গ্রন্থনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ মে ২০১৭/নৃপেন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়