ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বই বাজেয়াপ্ত, সম্পাদককে তলব

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ বই বাজেয়াপ্ত, সম্পাদককে তলব

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থের পুরাতন সকল সংখ্যা বাজেয়াপ্ত করে তা বাজার থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে গ্রন্থের সম্পাদক শুভঙ্কর সাহাকে আগামী ১২ মার্চ তলব করেছেন আদালত। ওইদিন তাকে আদালতে হাজির হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থের পুরাতন সংখ্যায় বঙ্গবন্ধুর ছবি না ছাপানোর ব্যাখ্যা দিতে হবে।

মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এবিএম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আল আমিন সরকার। ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যোবায়ের রহমান।

গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করায় ইতিহাস বিকৃত হয়েছে’ বলে প্রতিবেদন দাখিল করেছিল হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি।

মঙ্গলবার আদেশের পর ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, আদালত বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস গ্রন্থের সম্পাদক শুভঙ্কর সাহাকে তলব করেছেন ১২ মার্চ। সে এসে বলবে যে কেন বঙ্গবন্ধুর ছবি পাওয়া যায়নি। কেন বঙ্গবন্ধুর ছবির পরিবর্তে মোনায়েম খান, আইয়ুব খানের ছবি ওখানে লাগানো হয়েছে। ব্যাখ্যা করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস এ বইটির পুরাতন যত কপি আছে, সেগুলো সরিয়ে ফেলতে বলেছে। এ বই যেন বাজারে না ছাড়ে, মেলায় যেন না আসে। আদালত বলেছে ইতিহাস বিকৃতি অমার্জনীয় অপরাধ।

বইটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা ওঠার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি তৈরি ও প্রকাশনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ২০১৩ সালের জুন মাসে। এ বিষয়ে তখন উপদেষ্টা কমিটি ও সম্পাদনা নামে দুটি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি দুটি পাণ্ডুলিপি চূড়ান্তের পর গ্রন্থটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি প্রকাশনার পরপরই এতে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যত্যয় পরিদৃষ্ট হলে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর গ্রন্থটির বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং গ্রন্থটি রিভিউয়ের জন্য একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করেন।

এর মধ্যে ড. কাজী এরতেজা হাসানের রিটের পর গত বছরের ২ অক্টোবর রুল জারি করে এ ঘটনা তদন্তে অর্থ সচিবকে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

এ আদেশ অনুসারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অর্থ বিভাগ) ড. মো. জাফর উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নামকরণ করেন। গ্রন্থটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত রয়েছে। এ কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যাবশ্যক ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি-এ যুক্তিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। গ্রন্থটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করায় ইতিহাস বিকৃত হয়েছে মর্মে কমিটি মনে করে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘গ্রন্থটিতে তদানীন্তন পকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান এবং তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান গভর্নর মোনায়েম খান এর ছবি সংযোজন না করা শ্রেয় ছিল এবং সেটি সবার ভুল মর্মে বইটির সম্পাদক স্বীকার করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/মেহেদী/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়