ঢাকা     শুক্রবার   ১০ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৭ ১৪৩১

বাংলাদেশকে শক্ত প্রতিপক্ষই ভাবছে ভারত

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২১, ১৩ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাংলাদেশকে শক্ত প্রতিপক্ষই ভাবছে ভারত

ডেস্ক রিপোর্ট : সেমি ফাইনালে ১৫ জুন বাংলাদেশ-ভারত লড়াই। ভারতীয়রা বাংলাদেশকে কেমন প্রতিপক্ষ ভাবেন তার একটা ধারণা পাওয়া গেল আজকের আনন্দবাজার অনলাইনে প্রকাশিত এক রিপোর্টে।

রিপোর্টটিতে বলা হয়- যদি কেউ ভেবে থাকেন, উপমহাদেশীয় ক্রিকেট দ্বৈরথ বলতে শুধুই ভারত বনাম পাকিস্তান, তাঁর ভুল ধরিয়ে দেওয়ার সময় হয়েছে। ভারত-পাক মহারণ হয়তো এখনও সারা বিশ্বের বিচারে সব যুদ্ধের সেরা যুদ্ধ। এর ধারেকাছে হয়তো কিছু আসতে পারবে না। কিন্তু উপমহাদেশীয় উত্তাপের বিচারে খুব কাছাকাছি চলে এসেছে ভারত বনাম বাংলাদেশের ক্রিকেট যুদ্ধ।

রিপোর্টে বলা হয়, ক্রিকেটীয় যোগ্যতায় দু’দলের মধ্যে ব্যবধান তো গত কয়েক বছরে কমেছেই, মাঠের বাইরের নানা বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক স্তরে সম্পর্কের চাপানউতোর চলেছে। আর তার প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটের লড়াইয়েও। এখন আর ভারত বনাম বাংলাদেশ মানে নীরব ক্রিকেট দ্বৈরথ নয়। বরং দু’দেশের সমর্থকদের তীব্র রেষারেষি আর সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে রীতিমতো যুদ্ধ ঘোষণা।

কখন থেকে এই লড়াইয়ের শুরু ? উত্তরে বলা হয়. ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিশ্বকাপের ম্যাচ দিয়ে। গ্রেগ চ্যাপেল-রাহুল দ্রাবিড়ের ভারতকে হারিয়ে তাঁদের শুধু গ্রুপ লিগ থেকেই ছিটকে দিল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ অধিনায়কের সমালোচনা করে বলা হয়, যখন মাশরাফি মুর্তজা ম্যাচ জিতে বলে দিলেন, লিফ্‌টের মধ্যে অনিল কুম্বলেদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ওদের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছিল, ধরেই নিয়েছে আমাদের হারিয়ে পরবর্তী রাউন্ডে চলে গিয়েছে।

রিপোর্টটিতে আরো বলা হয়, মাশরাফিরা জবাব দিয়েছিলেন। ভারতকে হারিয়ে তাঁরা শোকস্তব্ধ করে দেন সচিন, সৌরভদের। এর পর থেকে আর কখনও পুরনো বন্ধুত্বের সম্পর্ক ফিরে আসেনি। বরং রেষারেষি আর বাগ্‌যুদ্ধ বেড়েছে।

চট্টগ্রামে টেস্ট খেলতে গিয়ে বীরেন্দ্র সেহবাগ সোজাসাপ্টা ঘোষণা করে দিলেন, বাংলাদেশ টেস্টটা কিছুতেই জিতবে না। সাংবাদিকেরা জিজ্ঞেস করলেন, কেন? সেহবাগ বলে দিলেন, কারণ খুব সহজ। ওদের কুড়িটা উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা নেই।

পরের দিন টেস্টের প্রথম দিনেই দারুণ বল করল বাংলাদেশ। তুলে নিল ভারতের আট উইকেট। পাল্টা হুঙ্কার ছেড়ে গেলেন মুশফিকুর রহিম। তোপের মুখে পড়লেন সেহবাগ। সেই থেকে শুরু হয়ে গেল নতুন এক রেষারেষি এবং কথার যুদ্ধ। ২০১৫ বিশ্বকাপে রোহিত শর্মার বিরুদ্ধে আউটের আবেদন নাকচ হওয়া নিয়ে ফেটে পড়লেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা। সেই উত্তেজনা বেশ কয়েক দিন চলেছিল।

আনন্দবাজার আরো লিখেছে, ধোনির ভারত এর পর বাংলাদেশে গিয়ে এক দিনের সিরিজ হারল। সেই সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মাঠের মধ্যে উচ্ছল উৎসব ভাল লাগেনি ভারতীয়দের।

আসন্ন ১৫ জুনের লড়াই সম্পর্কে বলা হয়, পরের স্টেশন বার্মিংহাম । ইতিমধ্যেই দু’টো ব্যাপার নিয়ে খটাখটি শুরু হয়ে গিয়েছে। শিরোনামে আবার সেহবাগ। রবিবার কোহলিরা জেতার পর টুইটারে অভিনন্দন জানিয়ে বীরু লিখেছেন, সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের জন্য শুভেচ্ছা রইল। তাঁর টুইট দেখে বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তরা ফের ক্ষিপ্ত।

দ্বিতীয় কারণ, সেমিফাইনাল ম্যাচের টিকিট। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দু’টো সেমিফাইনাল হচ্ছে কার্ডিফে এবং বার্মিংহামে। কে কোনটাতে খেলবে বোঝা যাচ্ছিল না। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তরা বুদ্ধি করে দু’টো জায়গারই প্রচুর টিকিট আগে থেকে কেটে রেখেছিলেন। এখন অবশ্যই কার্ডিফের টিকিটগুলো বিক্রি করে দেবেন তাঁরা।

এজবাস্টনে তাই ভারতীয়দেরই সংখ্যাধিক্য থাকার কথা। ও দিকে বাংলাদেশি ভক্তরাও টিকিটের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তাঁদের দেশ এই প্রথম কোনও বিশ্ব মানের ইভেন্টে সেমিফাইনালে উঠেছে। সকলে এই ইতিহাসের সাক্ষী হতে চান। এর আগে ২০১৫ বিশ্বকাপে মাশরাফি-রা কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে ভারতের কাছেই হেরে গিয়েছিলেন। মারকাটারি সেমিফাইনালের টিকিটের জন্য তাই হাহাকার চলছে।

রিপোর্টের মন্তব্যে বলা হয়, এজবাস্টনে একটা দল ইতিহাস রক্ষা করার চেষ্টা করবে। তারা গত বারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। অন্য দলটা ইতিহাস তৈরির খোঁজে নামবে। শান্তিপূর্ণ ম্যাচ হবে? সম্ভাবনা ক্ষীণ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ জুন ২০১৭/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়