ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাইরে বেড়ানোর স্বাস্থ্য উপকারিতা (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:০৯, ২৫ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাইরে বেড়ানোর স্বাস্থ্য উপকারিতা (শেষ পর্ব)

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : বাইরে বেড়ানো স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, বিষণ্নতা প্রতিরোধ এবং রক্তচাপ হ্রাস করতে সাহায্য করে। বাইরে বেশি করে সময় কাটানোর ১২ স্বাস্থ্য উপকারিতা নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

* রক্তচাপ হ্রাস করে
বাইরে সময় কাটানোর অন্যান্য স্বাস্থ্যবর্ধক প্রভাবের কথা চিন্তা করলে এটি যে রক্তচাপ কমাতে পারে তাতে বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। অনেক গবেষণায় এ উপকারী প্রভাবের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

জাপানে ২৮০ জন লোকের ওপর চালানো একটি গবেষণায় আবিষ্কার হয় যে, বনে হাঁটায় গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের স্ট্রেস হরমোন ১৫ শতাংশ কমে যায় এবং সেই সঙ্গে গড়ে তাদের পালস প্রায় ৪% ও রক্তচাপ ২% এর বেশি হ্রাস পায়।

* মনোযোগের সামর্থ্য বৃদ্ধি করে
আমরা জানি যে, প্রাকৃতিক পরিবেশ স্বাস্থ্যবর্ধক এবং এমনকি মনোযোগের সামর্থ্য বাড়ানোর জন্যও আপনি প্রাকৃতিক পরিবেশে ভ্রমণ করতে পারেন।

মনোযোগ ও বাইরে ভ্রমণ সম্পর্কিত একটি গবেষণায় কিছু লোককে প্রকৃতিতে হাঁটানো হয়, কিছু লোককে শহরে হাঁটানো হয় এবং বাকিদের বিশ্রামে রাখা হয়। যখন সবাই ফিরে আসল দেখা গেল যে, একটি প্রুফরিডিং টাস্কে প্রকৃতির মধ্যে হাঁটা দলটিই সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করে।

প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ানোর মনোযোগ বৃদ্ধিকারক প্রভাব এতই প্রবল যে, এটি এমনকি অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাক্টিভিটি ডিসঅর্ডারে ভোগা শিশুদের দারুণভাবে সাহায্য করতে পারে: এক গবেষণায় পাওয়া যায়, শিশুদের শুধু ২০ মিনিট পার্কে রাখার পর তাদের মনোযোগের ক্ষমতা বেড়েছে।

* সৃজনশীলতার উন্নয়ন ঘটাতে পারে
নেচার থেরাপির উপকারিতা সম্পর্কিত ২০০৮ সালের একটি আর্টিকেলের নাটকীয় প্রারম্ভিকা ছিল এরকম, ‘এমন একটি থেরাপির কথা ভাবুন যার কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছিল না, যা সহজলভ্য ছিল এবং যা বিনামূল্যে আপনার জ্ঞানীয় কার্যক্রমের উন্নয়ন ঘটিয়েছে।’ হ্যাঁ, নেচার থেরাপি বা প্রাকৃতিক পরিবেশে ভ্রমণ আপনার সৃজনশীলতা বৃদ্ধি করে।

একটি গবেষণায় পাওয়া যায়, যেসব লোক চারদিন ধরে প্রকৃতির মধ্যে ছিল, একটি সৃজনশীল সমস্যা সমাধান পরীক্ষায় তাদের পারফরম্যান্স ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছিল।

* ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে
প্রকৃতিতে ভ্রমণ এবং ক্যানসার প্রতিরোধের যোগসূত্রের ওপর গবেষণা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে আছে। কিন্তু প্রাথমিক গবেষণা ধারণা দিচ্ছে যে, প্রকৃতিতে সময় কাটানো (বিশেষ করে গাছপালা বা বনে) অ্যান্টি-ক্যানসার প্রোটিন উৎপাদনে প্ররোচিত করতে পারে।

বনে বেড়ানোর ফলে এসব প্রোটিনের মাত্রার যে বুস্টিং হয় তা ভ্রমণ শেষে সাতদিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

জাপানের গবেষণা অনুসারে, যেসব এলাকায় গাছপালার সংখ্যা বেশি সেখানে বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারে মৃত্যুর হার কম। জাপানে শিনরিন ইওকু বা ফরেস্ট বাথিংকে প্রতিরোধমূলক মেডিসিন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এ বিষয়ে অনেক বিভ্রান্তিকর ফ্যাক্টর রয়েছে বলে সঠিক সিদ্ধান্তে আসতে আরো গবেষণার প্রয়োজন হবে।

* ইমিউন সিস্টেমকে উন্নত করতে পারে
বন ভ্রমণের সম্ভাব্য অ্যান্টি-ক্যানসার প্রভাবের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোষীয় কার্যক্রম ইমিউন সিস্টেমের সাধারণ উন্নতির নির্দেশকও হতে পারে। ইমিউন সিস্টেম হচ্ছে কম মারাত্মক অসুস্থতা যেমন- ঠান্ডা, ফ্লু ও অন্যান্য ইনফেকশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার শরীরের প্রাকৃতিক ক্ষমতা।

২০১০ সালের গবেষণার একটি রিভিউ অনুসারে, এসব আবিষ্কার দৃঢ়ভাবে সাজেস্ট করছে যে মানব ইমিউন কার্যক্রমের ওপর বনের পরিবেশের উপকারী প্রভাব রয়েছে। কিন্তু গবেষকরা এটাও স্বীকার করেছেন যে, এ বিষয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন হবে।

* অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাস করে
শহুরে পরিবেশের অধিবাসীদের জন্য আশেপাশে সবুজ জায়গা থাকা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ২৫০,৭৮২ জন লোকের ওপর চালানো একটি ডাচ গবেষণা অনুসারে, সবুজ জায়গা ও স্বাস্থ্যের মধ্যে প্রবল ইতিবাচক সম্পর্ক ছিল। একই গবেষক দলের পরের একটি গবেষণা থেকে জানা যায়, যেসব লোকেরা সবুজ জায়গার সন্নিকটে বাস করেছিল তাদের মধ্যে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব কম ছিল। অন্য একটি গবেষণায় বনের মধ্যে সময় কাটানো এবং সার্বিক স্বাস্থ্যের অন্যান্য মাপকাঠির মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক পাওয়া গেছে।

এনভায়রনমেন্টাল হেলথ পারস্পেকটিভসে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় পাওয়া যায়, সবুজের মধ্যে বেশি সময় কাটানোর সঙ্গে ১২% অকাল মৃত্যুর হার হ্রাসের সম্পর্ক ছিল। সবচেয়ে বড় উন্নতি ক্যানসার, ফুসফুস রোগ ও কিডনি রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি হ্রাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ছিল।

তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার

পড়ুন :

 

 



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ এপ্রিল ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়