বাগেরহাটের মতুয়া মেলায় মানুষের ঢল
বাগেরহাট প্রতিনিধি : লাখো ভক্তের বারুণী স্নানের মধ্য দিয়ে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী মতুয়া মেলা।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার জিউধরা ইউনিয়নের লক্ষ্মীখালী শ্রীশ্রী গোপাল চাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের স্মরণোৎসব উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এই মেলা এখন ‘গোপাল সাধুর’ নামে পরিচিত। বাংলা ১৩২৮ সাল থেকে এখানে বারুণী স্নানের ও মহামেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই মেলা সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ-ভক্তরা এখানে আসেন বারুনী স্নানের মাধ্যমে নিজেকে নিষ্পাপ করতে।
দূর-দূরন্ত থেকে সাধুদের এক একটি দল ডঙ্কা, ঢাকঢোল, ঝাঁক, কাঁশর, চাকি, বাঁশি, শঙ্খ, শিঙা, একতারা, দোতরাসহ বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র এবং নিশান নিয়ে হরিনামের মাতম তুলে সাধুবাড়িতে পৌঁছে বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে।
পুণ্যধামের সাগর সাধু ঠাকুর বলেন, প্রতিবছর এ মেলায় ভারতসহ নেপাল, ভুটান থেকে দর্শনার্থীরা এ মেলায় যোগদান করেন। কিন্তু এবার ভারতের ভক্তরা অনেক বেশি এসেছে।
হিন্দুদের মতে, হরিনামের মহিমা প্রচার ও নানা অলৌকিক জ্ঞান নিয়ে ইহকাল ও পরলৌকিক বিশ্বাস করে আত্মার শান্তি ও মুক্তির জন্য পাপ বিনাশের অভিপ্রায় ধরা ধামে যুগে যুগে বহু মহামানবের আগমন ঘটেছে। শ্রীশ্রী গোপাল চাঁদ ঠাকুর ওরফে গোপাল সাধু তাদেরই মধ্যে একজন ব্যক্তিত্ববান মহাপুরুষ।
ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রাক্তন সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, মেলায় আগত ভক্তদের উৎসাহ যোগাতেই মেলায় যোগ দিয়েছি। এদেশে আর কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থান হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
ভারতীয় লোকসভার সদস্য মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মাতাশ্রী মমতা ঠাকুর মতুয়ারা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন যে, আমাদের মতাদর্শে কোনো সাম্প্রদায়িকতা নেই। বারুণী স্নানোৎসব মতুয়াদের হলেও সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অংশগ্রহণে এই উৎসব সফল ও আনন্দমুখর হয়। তাই মেলায় হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের মানুষ শ্রীশ্রী গোপাল চাঁদ ঠাকুরের এ মেলা উপভোগ করতে আসছেন।
মোরেলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রাশেদুল আলম বলেন, এই মেলা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ করতে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
রাইজিংবিডি/বাগেরহাট/৮ এপ্রিল ২০১৭/আলী আকবর টুটুল/রিশিত
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন