ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বাল্যবিয়ে বন্ধে জরুরি পাঁচ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা

হাসান মাহামুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৫৬, ১৬ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাল্যবিয়ে বন্ধে জরুরি পাঁচ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশ আশাব্যঞ্জক উন্নতি করলেও এখনো বাল্যবিয়ে বন্ধে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসেনি। বিশেষ করে, দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয় বাংলাদেশে।

বাল্যবিয়ের ক্ষেত্রে পাঁচটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। চ্যালেঞ্জগুলো হচ্ছে- সিদ্ধান্ত গ্রহণে মেয়েদের মতামতকে কম গুরুত্ব দেওয়া, প্রত্যন্ত অঞ্চলে তথ্য প্রাপ্তির সীমিত সুযোগ, স্থানীয় উন্নয়নে মেয়েদের অংশগ্রহণ কম থাকা, পারিবারিক ও সামাজিক বাধা এবং সর্বোপরি মেয়েদের ভবিষ্যত কর্মসংস্থানের কথা অভিভাবকগণের বিবেচনায় না আনার প্রবণতা। এই কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করলে বাল্যবিয়ে বন্ধে দেশে আশানুরুপ সাফল্য আসতে পারে।

সোমবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘তারুণ্যের শক্তি : আমরাই পারি বাল্যবিবাহ রুখে দিতে’ প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময় সভায় বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

‘গার্লস নট ব্রাইডস’ এর আয়োজনে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সমন্বয়ক ও ব্র্যাকের পরিচালক আন্না মিনজ। সভায় প্রকল্প মূল্যায়ন গবেষণায় প্রাপ্ত শিক্ষণ, সীমাবদ্ধতা ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরেন ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির প্রধান হাবিবুর রহমান ও সংস্থাটির একই কর্মসূচির ব্যবস্থাপক দিলরুবা নাসরীন।

আয়োজকরা জানান, ২০১৩ সালের বিবিএস কর্তৃক মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রংপুর বিভাগে ১৮ বছরের আগে বিবাহ সংঘটনের হার ৭৬ শতাংশ, যা সব চেয়ে বেশি। বরিশাল বিভাগে এই হার ৭০ শতাংশ, যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এই প্রেক্ষাপটে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সমমনা কয়েকটি সংগঠনের উদ্যোগে গঠিত গার্লস নট ব্রাইডস বাংলাদেশ জোটের পক্ষ থেকে রংপুর ও বরিশালে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দুই বছর মেয়াদী প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শেষ হবে ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই। প্রকল্পের প্রায় শেষ সময়ে এর কার্যকারিতা ও প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাসমূহ তুলে ধরতে এই সভার আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রকল্পটি মূলত প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে মেয়েদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধকরণে ভূমিকা রাখে। আর এটি বাস্তবায়নে জোটের সচিবালয়ের দায়িত্ব পালনকারী সংস্থা ব্র্যাকের নেতৃত্বে সদস্য সংস্থাসমূহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। রংপুরের মিঠাপুকুর, গঙ্গাচড়া, তারাগঞ্জ, পীরগাছা ও কাউনিয়া এবং বরিশালের আগৈলঝরা, মুলাদি, হিজলা, বাকেরগঞ্জ ও মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়।

সভায় আন্না মিনজ বলেন, ‘অভিজ্ঞতায় দেখা যায় কোনো এলাকায় অভিভাবক, জনপ্রতিনিধি বা সুশীল সমাজ যাদেরই সাক্ষাৎকার নেওয়া হোক না কেন, তারা দাবি করেন, তাদের এলাকায় বাল্যবিয়ে হয় না, বরং তাদের এলাকা থেকে পালিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে-মেয়েরা অন্য এলাকায় বিয়ে করেন।’

হাবিবুর রহমান বলেন, বাল্যবিয়ে এখন মানবাধিকার লংঘনও বটে। আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে, সরকারি-বেসরকারি ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজসহ সবাই এক প্লাটফর্মে কাজ করলে বাল্যবিয়ে বন্ধে কার্যকর ফলাফল আসে। সচেতনতাসহ বিভিন্ন কারণে তখন যুবকদের ঐক্যবদ্ধ শক্তির পাশাপাশি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নেটওয়াকির্ং তৈরি হয়।

ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি কর্মসূচির সমন্বয়কারী নিশাত সুলতানার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক কনসালট্যান্ট কাজী আরিফুল হকসহ সরকারি-বেসরকারি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা যুব, ধর্মীয় নেতা, কিশোর কিশোরীসহ প্রায় ১০০ জন অংশগ্রহণ করে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জুলাই ২০১৮/হাসান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়