ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাড়িতে ওয়াই-ফাই সংযোগ নিচ্ছেন? একটু ভাবুন ...

মো. রায়হান কবির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫০, ২৫ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ১৬:৩১, ১৪ মার্চ ২০২২
বাড়িতে ওয়াই-ফাই সংযোগ নিচ্ছেন? একটু ভাবুন ...

প্রতীকী ছবি

ইদানিং আমাদের সবচেয়ে অপরিহার্য ব্যবহার্যের মধ্যে আছে স্মার্টফোন। আর ফোনের নামের আগে ‘স্মার্ট’ যুক্ত হয়েছে এর সঙ্গে অপরিহার্যভাবে ইন্টারনেট যুক্ত হওয়ার পর থেকে।

মানুষ এখন আর কম্পিউটার বা পিসিতে আগের মতো নেট ব্রাউজ করে না। এমনকি ল্যাপটপেও ব্রাউজ করে মজা পায় না। কারণ ইন্টারনেট যদি হাতের তালুতে থাকে তবে কে মনিটরের দিকে তাকিয়ে থাকে? তাই এখন মোবাইল বা ট্যাবে নেট ব্রাউজ জনপ্রিয় হচ্ছে। একই সঙ্গে বেড়েছে ওয়াই-ফাই ইন্টারনেটের ব্যবহার।

মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের ইন্টারনেট অফারে মানুষ এখন আর নিজের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। তাছাড়া সেগুলোতে খরচও বেশি। ফলশ্রুতিতে উচ্চ গতিসম্পন্ন স্পিডের জন্যে এবং অফুরন্ত ডাটা ব্যবহারের জন্যে মানুষ দিন দিন ওয়াই-ফাই প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে।

এতো গেল ওয়াই-ফাইয়ের সুবিধার কথা। বাড়িতে ওয়াই-ফাই সংযোগের ঝুঁকিও কিন্তু আছে। শুধু সুবিধার কথা মাথায় রেখে প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকলেই হবে না, এর ঝুঁকির দিকগুলোও মাথায় রাখতে হবে।

আপনি যখনই ওয়াই-ফাই সংযোগ বাসায় নেবেন, তখন আপনার মাথায় কাজ করবে এর অফুরান ব্যবহারের কথা। যেহেতু আপনি ডাটা ব্যবহারের ওপর টাকা দিচ্ছেন না, টাকা দিচ্ছেন মাসিক ভিত্তিতে। তাই আপনি চেষ্টা করবেন যত জন সম্ভব এটা ব্যবহার করি। ফলে আপনার পরিবারের সকল সদস্যদের আপনি এর পাসওয়ার্ড দিয়ে দিচ্ছেন। এর ভেতর কিন্তু অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুও পরে যাচ্ছে। সেটা আপনি খেয়াল করেননি। আপনি হয়তো ভাবছেন আপনার শিশু শুধু অনলাইনে গেম খেলবে। এতে আর সমস্যা কোথায়?

কিন্তু আপনি কি ভেবে দেখেছেন এই শিশুই আপনার দেয়া ইন্টারনেট সুবিধায় ঝুঁকে যেতে পারে পর্নো দুনিয়ায়। হয়তো আপনার অজান্তেই! আপনি খেয়ালও করলেন না। কিন্তু সে ধীরে ধীরে পতিত হতে পারে পর্নো দুনিয়ার নীল জগতে। আবার অল্প বয়সেই হয়তো সোশ্যাল অ্যাপের মাধ্যমে অনাকাঙ্ক্ষিত সম্পর্কে জড়িয়ে যেতে পারে। তাই বাড়িতে অবাধ ইন্টারনেটের সুবিধা দেয়ার আগে দেখে নিন এর ব্যবহারে আপনি কতটা উপকৃত হচ্ছেন আর কতটা ঝুঁকির মাঝে আছেন।

যাদের জন্যে ইন্টারনেট খুব একটা জরুরি না, তাদের পাসওয়ার্ড না দেওয়াই ভালো। বিশেষ করে বাচ্চাদের। আর যদি তাদের ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করতে চান সেক্ষেত্রে সীমিত আকারে তাদেরকে দিতে পারেন। পাশাপাশি গুরুত্ব দিন কিছু বিষয়ে।

* বাচ্চাদের স্মার্টফোনে গেমস খেলতে ওয়াই-ফাই পাসওয়ার্ড দিলে গেমস খেলা শেষ হলে পাসওয়ার্ড ‘ফরগেট’ দিয়ে দিন।

* অপ্রাপ্ত বয়স্কের স্মার্টফোন বা ট্যাব থেকে ইন্টারনেট ব্রাউজার (ক্রোম, অপেরা মিনি, ফায়ারফক্স ইত্যাদি) মুছে/ডিলিট করে দিন।

* বাচ্চাদেরকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে জুড়ে নিন।। এতে করে তার কর্মকান্ড সম্বন্ধে ধারণা রাখতে পারবেন।

* নিয়মিত বাচ্চাদের ফেসবুক ফ্রেন্ডলিস্ট চেক করুন। এটাকে অনেকে স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ বলতে পারেন, তবে এটাও খেয়াল রাখা উচিত ওদের স্বাধীনতা পাওয়ার বয়সও কিন্তু এখনও হয়নি।

* বাচ্চাদের গেমসগুলো আপনিও খেলার ছলে চেক করুন। অনেক সময় অ্যাডাল্ট গেমসও থাকতে পারে। সেগুলোর দিকে যেন না ঝুঁকে।

* বাচ্চার ডিভাইসের মেমোরিকার্ড নিয়মিত চেক করুন। সেখানে আপত্তিকর কিছু আছে কিনা। এবং একই সঙ্গে অ্যাপসগুলোও চেক করুন। দেখুন সেখানে ‘গ্যালারি’ হাইড বা লুকানোর কোনো অ্যাপ আছে কিনা?

এই বিষয়গুলো অনুসরণ করতে গিয়ে স্মার্ট যুগে নিজেকে আনস্মার্ট ভাববেন না যেন, কারণ এক সময় আপনার অভিভাবকও আপনার ‘অফলাইন’ কর্মকান্ড নানাভাবে নজরদারি করতেন।

সুতরাং ইন্টারনেটের অপব্যবহার রোধ করতে আপনার নিজেরও কিছু দায়িত্ব নিতে হবে। তবেই স্মার্ট যুগে স্মার্ট ডিভাইসে পরিবার ও সমাজ সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।

/ফিরোজ/

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়