ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

বিদায় পৌষ, এল মাঘ

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৪ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিদায় পৌষ, এল মাঘ

ফাইল ফটো

শাহ মতিন টিপু : বিদায় নিল পৌষ।ষড়ঋতুর হিসাবে পৌষ-মাঘ শীতের ঋতু। জোড়া মাসের পৌষ গ্রামীণ জনপদে এবার ততটা প্রভাব তৈরি করতে সমর্থ হয়নি। শীতের দাপট দেখা যায়নি এখনও। রেখে যাওয়া সহোদরা মাঘ কী করে সেটাই এখন দেখার পালা।

আজ মাঘের পয়লা দিন। শহরে ততটা তীব্র না হলেও গ্রামীণ জনপদে মাঘ  শীতের দাপট নিয়েই এসেছে। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে কাঁপন ধরানো শীতের হাওয়া বইছে। হিমালয় পাদদেশীয় উত্তরাঞ্চলে শীতের ছোবলে কাহিল হয়ে পড়েছে জনজীবন। হিমেল বাতাস শরীরে কাঁটার মতো বিঁধছে।

নীলফামারীর রাজারহাটে  পৌষের শেষদিনেই তাপমাত্রা ৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবারের শীত মৌসুমে এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। সারাদেশের চালচিত্র কমবেশি শীতে কাহিল। সামনের কয়েকদিন তাপমাত্রা নামতে থাকবে। রয়েছে হাড় কাঁপানো শীতের পূর্বাভাস ।

বাংলা সাহিত্যে ঋতু-প্রকৃতি নিয়ে কথার ফুলঝুরি ফুটলেও মাঘের প্রসঙ্গ তেমন একটা নেই। তবে কথায় আছে, মাঘের শীত নাকি বাঘকেও হার মানায়। এমাসের পূর্ণিমাকে বলা হয় মাঘী পূর্ণিমা। মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা উদযাপন করা হয়। এই মাঘে হয় ব্রাহ্মণ সমাজের মাঘোত্সব।

অন্যদিকে কৃষি ও কৃষকের সঙ্গেও এর একটি যোগসূত্র রয়েছে। ‘পৌষের শেষ আর মাঘের শুরু/এর মধ্যে শাইল বোরো যত পারো।’

খনার বচনে আছে- ‘যদি বর্ষে মাঘ/গিরস্থের বন্ধে ভাগ (ভাগ্য)। “যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পূণ্যি দেশ”।

গাছে গাছে ডালে ডালে আমের বোল । মাঘের বড় স্বাতন্ত্র্য হচ্ছে, এ মাস বসন্তের আগমন বারতা জানায়। গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী জানুয়ারি মাসের মধ্যভাগ থেকে ফেব্রুয়ারি অবধি মাঘ মাসের ব্যাপ্তি। সাধারণত ৩০ দিনে মাঘ মাসের শেষভাগে কখনো কখনো বৃষ্টি হয়ে থাকে। এ মাসে আমের মুকুল আসে। পাতা ঝরে পড়ে। নতুন কিশলয় অংকুরিত হয়।

বাংলাদেশের উত্তরে হিমালয় পর্বতমালা। সেখান থেকে বরফশীতল বায়ু এ দেশের ওপর দিয়ে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়। আসে সাইবেরীয় ঠান্ডাও। আবহাওয়ার আকস্মিক পরিবর্তনের কারণে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে যে ঠান্ডা বাতাসের প্রবল প্রবাহ সৃষ্টি হয়; তাই  শৈত্যপ্রবাহ । একারণেই মাঘের শীত ভয়াবহ।

মাঘে শীত জেঁকে বসে বলে মওসুমী আয়োজনগুলো আবহমান বাংলার ঐতিহ্যকে আরো সমুন্নত করে রাখে। কৃষাণী-রমণীরা গৃহে ব্যস্ত হয়ে পড়েন শীতের পিঠা-পুলি নিয়ে। ভাপা, চিতই, দুধচিতই, পাটিসাপ্টা, পাকনপিঠা,  তেলের পিঠা,  ম্যারা পিঠাসহ আরো অনেক নামের ও স্বাদের পিঠায় রসনা বিলাসের আয়োজন চলছে বাড়ি বাড়ি।দিকে দিকে খেজুর রসের পায়েস আর খেজুর গুঁড়ের মউ মউ গন্ধ ।এখনতো  হাট-বাজার, ফুটপাতে পেশাদার পিঠাওয়ালাদেরও  নাগরিকদের রসনা তৃপ্ত করতে দেখা যায়।

অন্যদিকে শীতের সবজি নতুন আলু, শিম, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, পালংশাক, মুলা, শালগম ইত্যাদিতে  ছেয়ে গেছে কাঁচাবাজার।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জানুয়ারি ২০১৭/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়