ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপ ৩১টি ডিম দিয়েছে

আলী আকবর টুটুল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩১, ৫ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিলুপ্তপ্রায় কচ্ছপ ৩১টি ডিম দিয়েছে

আলী আকবর টুটুল, বাগেরহাট : বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে এই প্রথম ‘বিলুপ্তপ্রায়’ প্রজাতি বাটাগুর বাসকার একটি কচ্ছপ ৩১টি ডিম দিয়েছে।

কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরে থাকা প্রাপ্তবয়স্ক চারটি কচ্ছপের মধ্যে একটি শনিবার রাতে এ ডিমগুলো দেয়। এই প্রথম সুন্দরবনের কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র থেকে ৩১টি ডিম পাওয়া গেল।

ডিমগুলো পাড়ার পর তা সংগ্রহ করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটানোর ‘হোলনেসট’ এ রাখা হয়েছে। বিলুপ্ত প্রায় এ প্রজাতির কচ্ছপের প্রজননের মাধ্যমে বংশ বিস্তারের উদ্দেশ্যে ২০১৪ সালে করমজলে কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়। গড়ে ওঠার পর থেকে এ কেন্দ্রে দেশি-বিদেশি  বিজ্ঞানিরা প্রজনন ও সংরক্ষণ কাজ করছেন।

করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আজাদ কবির জানান, গত বছরের ডিসেম্বরে চারটি প্রাপ্তবয়স্ক কচ্ছপ সংগ্রহ করে করমজল কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রের পুকুরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর তিন মাস সেগুলো পর্যবেক্ষণ করেন বিশেষজ্ঞরা। এ চারটি কচ্ছপের মধ্যে একটি প্রথমবার শনিবার রাতে পুকুর পাড়ে ৩১টি ডিম দেয়।

বাকি তিনটি নারী কচ্ছপও শিগগরি ডিম দেবে জানিয়ে তিনি বলেন, কেন্দ্রের পুকুর পাড় থেকে এ ৩১টি ডিম সরিয়ে নিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটানোর ‘হোলনেসট’-এ রাখা হয়েছে। থার্মোমিটার দিয়ে নিয়মিত ডিম রাখা ‘হোলনেসট’ এ তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। তাপমাত্রা কম-বেশির কারণে ডিমগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ডিমগুলো হতে বাচ্চা ফুটে বের হতে ৫৫ থেকে ৬০ দিন সময় লাগবে। ৩১টির মধ্যে ৭০-৭৫ ভাগ ডিম থেকে বাচ্চা ফুটে বের হতে পারে।

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও মো. সাইদুল ইসলাম বলেন, এশিয়া মহাদেশ থেকে বিলুপ্তপ্রায় ‘বাটাগুর বাসকা’ প্রজাতির কচ্ছপ সংরক্ষণ ও প্রজননের মাধ্যমে এর বংশ বিস্তারের জন্য প্রজনন কেন্দ্র থেকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি দুইটি বাটাগুর বাসকা প্রজাতির কচ্ছপের পিঠের উপর স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার বসিয়ে সুন্দরবন এলাকায় অবমুক্ত করা হয়েছে। বন বিভাগ, টারটেল সারভাইভাল এলায়েন্স (আমেরিকা), ভিয়েনা জু (অস্ট্রিয়া) ও প্রকৃতি জীবন ফাউন্ডেশন কচ্ছপের জীবনাচরণের তথ্য ও পরিবেশগত ছবি সংগ্রহ করে গবেষণা শুরু করেছেন। এ গবেষণার মধ্য দিয়ে এ প্রজাতির কচ্ছপের স্বভাব, খাদ্য সংগ্রহ, বিচরণ, পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয়ের তথ্য সংগ্রহ করছেন।

করমজল কচ্ছপ প্রজনন কেন্দ্রে পর্যায়ক্রমে দেওয়া ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর পর সেগুলো সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরে অবমুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ।



রাইজিংবিডি/বাগেরহাট/৫ মার্চ ২০১৭/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়