ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

বৃদ্ধের নিঃসঙ্গতা কাটাতে চাকরি

সাইফ বরকতুল্লাহ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৫, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বৃদ্ধের নিঃসঙ্গতা কাটাতে চাকরি

সাইফ বরকতুল্লাহ : বয়স ৮৯। এই বয়সে পেয়ে গেলেন চাকরি। নিয়মিত কাজও করছেন। প্রিয় পাঠক, বলছি জো বার্টলির কথা।

 

জো বার্টলি চাকরি করতেন বিমানবাহিনীতে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ফিলিস্তিনে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। অবসর নেওয়ার পর তার স্ত্রী ক্যাসান্দ্রার সঙ্গে ইংল্যান্ডের পেয়িংটনে বসবাস করছিলেন।

 

স্ত্রী ক্যাসান্দ্রা ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৮১ বছর বয়সে মারা যান। জো বার্টলির সঙ্গে ক্যাসান্দ্রার বিয়ে হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। তাদের কোনো সন্তান নেই।

 

স্ত্রী মারা যাওয়ার পর একা হয়ে যান জো বার্টলি। নিঃসঙ্গ জীবন তার একদমই ভালো লাগছিল না। কারো সঙ্গে তার কথা বলার সুযোগ ছিল না। কী আর করা। মাথায় আসল অদ্ভুত এক ভাবনা। নিঃসঙ্গ জীবন কাটাতে চাকরি করার জন্য মনস্থির করলেন। যেই ভাবা, সেই কাজ। চাকরি চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলেন। গত নভেম্বর মাসে হেরাল্ড এক্সপ্রেস পত্রিকায় সেই বিজ্ঞাপনটি ছাপা হয়। বিজ্ঞাপনে তিনি লিখেছিলেন, ‘৮৯ বছর বয়সি একজন সিনিয়র সিটিজেন। পেইনটন এলাকায় কাজ করতে চাই। প্রতি সপ্তাহে ২০+ ঘণ্টা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, বাগানের কাজ, বিভিন্ন ছোটখাটো কাজ করতে পারি। আমার রেফারেন্স আছে। পুরনো সেনা, বিমানের প্যারাট্রুপার ছিলাম। বিষণ্নতা থেকে আমাকে বাঁচান!’  এরপরই ঘটে যায় অন্যরকম ঘটনা।

 

vertern

 

বিজ্ঞাপন প্রকাশের পর গত ২৯ নভেম্বর হেরাল্ড এক্সপ্রেস পত্রিকায় তাকে নিয়ে ‘জো বার্টলি, ৮৯, ফ্লাডেড উইথ জব অফারস আফটার প্লেসিং এডভার্ট ইন হেরাল্ড এক্সপ্রেস’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপরই দেশ-বিদেশে তাকে নিয়ে আলোচনা হয়।

 

আসে অনেক চিঠিও। সঙ্গে বিভিন্ন চাকরির অফার লেটার। তবে তিনি বেছে নিয়েছেন ক্যানটিনা নামে একটি রেস্টুরেন্টের চাকরি। কাজও শুরু করেছেন।

 

চাকরির প্রথম দিন সহকর্মী ও খদ্দেরের কাছ থেকে শুভেচ্ছা গ্রহণ করেছেন। ক্যানটিনাতে ঢোকার পরপরই খদ্দের ও সহকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান।

 

vertern

 

জো বার্টলি বলেন, আমি সত্যিই অবাক হয়েছি। আমি যখন বিজ্ঞাপনটি দেই তখন ভেবেছিলাম, ৮৯ বছর বয়সি লোকের চাকরির বিজ্ঞাপন কে আর দেখবে? আমি সরকারের আবাসন সুবিধা পাচ্ছি। সেটা বেশ ভালো। কিন্তু আমি নিজে অর্থ কামাতে চাই, যাতে নিজের ভাড়া নিজে দিতে পারি। আমার খরচ আমি বহন করতে পারলে আমাকে সক্ষম পুরুষ মনে হতো।

 

চাকরি করার অনুভূতি সম্পর্কে জো বার্টলি বলেন, আমি খুবই খুশি। নতুন পৃথিবীতে প্রবেশ করেছি। আমি কাজের লোক। আমার চাকরি দরকার। দুই বছর আগে আমার স্ত্রী মারা যায়। এরপর থেকে আমি বড় অসহায় ছিলাম। এখন ভালো লাগছে।

 

ক্যানটিনা রেস্টুরেন্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ক্যাট অ্যালেন বলেন, ক্যানটিনার ভেতর বেশ ফুরফুরে আছেন জো। তার নামে প্রতিদিন অনেক চিঠি আসছে। তার জন্য আমরা গর্বিত।

 

তথ্যসূত্র : হেরাল্ড এক্সপ্রেস, ইয়াহু নিউজ

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ডিসেম্বর ২০১৬/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়