ঢাকা     শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৪ ১৪৩১

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

রফিক সরকার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:২৩, ৫ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) সংবাদদাতা : গাজীপুরের কালীগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল আহেদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

রোববার সকালে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন ইউএনও মো. শিবলী সাদিক।

জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৪ জুন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রাশিদা বেগমকে বদলি করা হয়। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বরে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে মো. আব্দুল আহেদ যোগ দেন। নিয়ম অনুযায়ী তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়। আর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই বিদ্যালয়ে চলতে থাকে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা। বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রীদেরকে নানাভাবে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন আব্দুল আহেদ। তিনি হুমকি দেন যে, এসব ঘটনার কথা কারো কাছে প্রকাশ করলে টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য করে দেওয়া হবে। সেই ভয়ে শুরু থেকে কেউ কিছু না বললেও হয়রানির মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ছাত্রীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্রী প্রতিবেদককে জানান, বান্ধবীরা মিলে যখন গ্রুপ ছবি তুলত, তখন ওই শিক্ষক তাদের সাথে ছবি তুলতে আগ্রহী হতো এবং তাদেরকে বুকের ওড়না ফেলতে বাধ্য করত। নানা অজুহাতে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের গায়ে ও স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিত আব্দুল আহেদ। বিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বড় ছাত্রীদের ওড়না ছাড়াই নৃত্য পরিবেশনে বাধ্য করত।

ভারপ্রাপ্ত ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি নিয়ম না মানা, ইচ্ছেমতো ভর্তিবাণিজ্য, অতিথি শিক্ষক নিয়োগ, সহকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অতিরিক্ত ভর্তি ফি নেওয়া, অনিয়মিত উপস্থিতি, বিভিন্ন অজুহাতে বেতনের সাথে অতিরিক্ত ফি আদায়সহ নানা অনিয়ম আর অব্যস্থাপনার অভিযোগও ছিল। যা নিয়ে বিভিন্ন সময় দেশের জাতীয় গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এদিকে, লিখিত অভিযোগের পর থেকে আব্দুল আহেদ বিদ্যালয়ে আসছেন না। তিনি পলাতক রয়েছেন। এ ব্যাপারে তার সাথে মুঠোফোনে সাংবাদিক পরিচয়ে একাধিকবার কল দিয়ে এবং বার্তা পাঠিয়েও কথা বলা সম্ভব হয়নি। 

অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শিবলী সাদিক বলেন, ছাত্রীদের কাছে আগেই মৌখিক অভিযোগ পেয়েছিলাম এবং বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। যেহেতু এটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, তাই নিয়মের মধ্যে থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাই ছাত্রীদেরকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জুবের আলমকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন উপজেলা মৎস্য অফিসার মো. লতিফুর রহমান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নূর-ই-জান্নাত। কমিটিকে আগামী সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। 



রাইজিংবিডি/কালীগঞ্জ (গাজীপুর)/৫ মে ২০১৯/রফিক সরকার/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়