ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ভিক্ষুক সেজে ভিক্ষুক দম্পতির শিশু চুরি

নজরুল মৃধা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৩২, ১২ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভিক্ষুক সেজে ভিক্ষুক দম্পতির শিশু চুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর : রায়হান মিয়া (৩৫) ও তার স্ত্রী নিলুফা বেগম (২৮) দু’জনই কানা। রংপুর নগরীর এরশাদনগর এলাকায় থাকেন। দু’ জনেরই পেশা ভিক্ষা করা। ভিক্ষা করে যে আয় হয়, তা দিয়ে তাদের সংসার চলে।

তাদের ঘরে দুই মেয়ে। প্রথম মেয়ে রেহেনার বয়স পাঁচ বছর। ছোট মেয়ে অর্জিনার বয়স সাড়ে তিন বছর। শুক্রবার বিকেলে অর্জিনা চুরি হয়ে যায়।  চুরি যে করেছিলেন, তিনিও পেশায় ভিক্ষুক।

রোববার দুপুরে মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনি ইউনিয়নে জগনান্দপুর এলাকা থেকে শিশু চুরির অভিযোগে সুরভি বেগমকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে দেয়। শিশুকে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সুরভি বেগম এর আগেও একাধিক শিশুকে চুরি করেছে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, অপরহণের কয়েক দিন আগে ভিক্ষুক রায়হানের সঙ্গে ধর্ম ভাইয়ের সম্পর্ক গড়ে তোলে সুরভি বেগম। ঘটনার দিন শুক্রবার বিকেলে সুযোগ বুঝে রায়হান মিয়ার সাড়ে তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। তারা মেয়েকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও সন্ধান পাননি।

রোববার দুপুরে মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনি ইউনিয়নে স্থানীয়রা সুরভি বেগমকে বাচ্চাসহ আটক করে। সুরভি বেগম ওই ইউনিয়নের জগনান্দ গ্রামের বাসিন্দা। তার পেশাও ভিক্ষাবৃত্তি। তিনি রংপুর শহরের বিভিন্নস্থানে ভিক্ষা করতেন। ভিক্ষার করার সূত্র ধরে রায়হানের সঙ্গে ধর্ম ভাই সম্পর্ক করে তার সন্তান চুরি করে নিয়ে যায়।

শিশুর বাবা রায়হান মিয়া বলেন, তারা স্বামী-স্ত্রী দুই জন কানা। ভিক্ষা করে খান। ভিক্ষা করার সুবাদে সুরভি তাকে ভাই ডাকে। তিনিও তাকে বোন ডাকেন। সুযোগ বুঝে শুক্রবার বিকেলে তার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায় সুরভি।

ওই এলাকার আশরাফুল ইসলাম বলেন, সুরভি বেগমের পেশা ভিক্ষাবৃত্তি হলেও এর আগে তার বিরুদ্ধে শিশু চুরির অভিযোগ রয়েছে। ওই এলাকার ৯নং ওয়ার্ড সদস্য রবিউল ইসলাম জানান, সকলে জানেন সুরভির একটি বড় ছেলে রয়েছে। কিন্তু রোববার সকালে তার ঘর থেকে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পেয়ে লোকজন তাকে খবর দেয়। তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটি উদ্ধার করেন এবং বাবা-মাকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে তাদের থানায় নিয়ে যায়।

মিঠাপুকুর থানার ওসি জাফর আলী বিশ্বাস বলেন, তারা শিশুটি এবং সুরভি বেগমকে থানায় নিয়ে এসেছেন। বিষয়টি তাজহাট থানার। তাই তাদের তাজহাট থানায় পাঠানো হবে।

তাজহাট থানার ওসি শেখ রোকনুজ্জামান বলেন, শিশু চুরির ঘটনা সত্য। কী উদ্দেশ্যে চুরি করা হয়েছে, তা জিজ্ঞাসাবাদ না করলে বলা যাবে না। তাকে হলে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



রাইজিংবিডি/রংপুর/১২ মে ২০১৯/নজরুল মৃধা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়