ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভেজাল ওষুধ : জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

আলী নওশের || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১২, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভেজাল ওষুধ : জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিন

দেশে অনেক সমস্যার অন্যতম একটি হচ্ছে নকল ও ভেজাল সামগ্রী। পণ্যে ভেজাল, খাদ্যে ভেজাল। চারদিকে এতো ভেজালের ছড়াছড়ি যে আসল খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। ভেজাল খাবার খেয়ে মানুষ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় এখন ওষুধেও ভেজাল।জোলের ওষুধ এমন একটি পণ্য, যার সঙ্গে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত। সেই ওষুধ নিয়ে চরম অরাজকতা চলছে বাংলাদেশে। নকল ও ভেজাল ওষুধের পাশাপাশি উৎপাদন হচ্ছে নিম্নমানের ওষুধ।

এক শ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর কারণে আমরা ওষুধ নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অধিক মুনাফার লোভে জীবন রক্ষাকারী অনেক ওষুধ ভেজাল হচ্ছে। দেশে কিছু ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিধি মেনে ওষুধ উৎপাদন করা হয় না। এছাড়া অবৈধপথে বিভিন্ন দেশ থেকে আসছে অনুমোদনহীন ওষুধ। দেশে ভেজাল ও নিম্নমানের ওষুধ সেবনে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। বস্তুত একটি চক্র ও অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতার কারণেই নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন বন্ধ হচ্ছে না।

যেসব কোম্পানি কোন নিয়ম-নীতি না মেনে হীন স্বার্থে নিম্নমানের ওষুধ উৎপাদন করছে সেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। অভিযোগ রয়েছে, অনেক কোম্পানির নিম্নমানের ওষুধ এখনো বাজারে থাকলেও এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আবার কর্তৃপক্ষের আদেশ অমান্য করেও অনেক প্রতিষ্ঠান ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে।

নকল ও ভেজাল ওষুধের উৎপাদন বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে ৩৪টি ওষুধ কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হলে বিষয়টি আদালতে গড়ায়। আশার কথা হচ্ছে, সম্প্রতি মানসম্পন্ন ওষুধ উৎপাদনে ব্যর্থ ২০ কোম্পানির সব ওষুধ ও ১৪টি কোম্পানির অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছেন উচ্চ আদালত। এতে দেশে ওষুধ উৎপাদন ও ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশা করা যায়।

উচ্চ আদালত থেকে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর উৎপাদন বন্ধ ও লাইসেন্স বাতিলে আদলত যে যুগান্তকারী নির্দেশনা দিয়েছেন তাতে আমরা আশাবাদী। আদালতের রায়ের পর আর কোনো কোম্পানি যাতে নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন করতে না পারে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধের চাহিদা বাড়ছে। দেশে নকল ও নিম্নমানের ওষুধের উৎপাদন ও বিপণন পুরোপুরি বন্ধ না হলে ওষুধের আন্তর্জাতিক বাজারে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে দেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আমরা আশা করব, মানহীন ওষুধ তৈরির সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ওষুধ প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। রায়ে নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত ওষুধ কোম্পানিগুলো পুনরায় গোপনে কিংবা অবৈধভাবে ওষুধ উৎপাদনের চেষ্টা করে কিনা, তা মনিটর করে তিন মাস পরপর উচ্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেয়া হয়ছে। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর যেন এ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে, সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/আলী নওশের/তৈয়বুর

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়