ঢাকা     বুধবার   ০৮ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৫ ১৪৩১

‘ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে ঢাবি প্রশাসন’

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৪, ২০ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে ঢাবি প্রশাসন’

ফাইল ফটো

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলনের মঞ্চ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার রক্ষা পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল থেকে রাতের অন্ধকারে ছাত্রীদের বের করে দেওয়ার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভয়ংকর পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি, রাত ১১টার পরেও অনেক ছাত্রী হল থেকে বের হয়ে গেছেন। ছাত্রীদের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। প্রাধ্যক্ষের কক্ষে অনেককে আটকে রাখা হয়েছিল। অভিভাবক ডেকে রাতের অন্ধকারে হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।

কোনো অপরাধ করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু ছাত্রীদের এভাবে বের করে কর্তৃপক্ষ ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে।’

সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘এটি হল প্রশাসনের ধৃষ্টতা। আমরা প্রশাসনকে সব সহযোগিতা করছি। এর মধ্যে কোনো আলোচনা ছাড়াই কেন তারা এমন সিদ্ধান্ত নিল, আমরা তার জবাব চাই।’

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কবি সুফিয়া কামাল হলের বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে হল ত্যাগে বাধ্য করা হয়। এর প্রতিবাদে রাত দেড়টার দিকে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী এস এম ইয়াসিন আরাফাত একাই প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে হলের ফটকে অবস্থান নেন। পরে রাত দুইটার দিকে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা ইয়াসিনের সঙ্গে যোগ দেন। তারা সেখানে বিক্ষোভ করেন।

অনেকে স্লোগান দেন, ‘ভয় দেখিয়ে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না, আমার বোন পথে কেন প্রশাসন জবাব চাই।’ বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করেন।

শুক্রবার দেশের প্রতিটি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে অবস্থান শেষ করেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা।

বিক্ষোভ চলাকালীন হলের ভেতর থেকে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেত্রী ফটকের কাছে এসে বলেন, হলে কোনো সমস্যা নেই আপনারা চলে যান।

সে সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করতে চাইলে ছাত্রলীগের নেত্রীরা কিছু না বলে চলে যান। একই সময়ে ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে দেখা যায়।

হল কার্যালয়ের একটি সূত্র বলছে, রাত ৯টা থেকে কমপক্ষে ৫০ জনকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। তবে সবাইকে একসঙ্গে বের করে দেওয়া হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হলের ফ্লোরে ফ্লোরে রাতে হাউস টিউটররা পাহারা বসান। ছাত্রীরা আতঙ্কে আছেন। তারা বলছেন, মূলত যে ২৬ ছাত্রী ছাত্রলীগের নেত্রী ইফফাত জাহান এশার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন প্রথম দফায় তাদের বিচার করছে হল প্রশাসন।

হলের সাধারণ ছাত্রীরা কর্তৃপক্ষের এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করছেন। তারা আতঙ্কের মধ্যে আছেন বলে জানিয়েছেন। তারা অভিযোগ করেছেন, হলের প্রাধ্যক্ষ ছাত্রীদের ছাত্রত্ব বাতিল, গোয়েন্দা নজরদারি ও মামলার ভয় দেখাচ্ছেন।

হলের প্রাধ্যক্ষ সাবিতা রেজওয়ানা বলেন, ‘আমরা অনেক ছাত্রীকে ডেকেছি। তাদের মোবাইল ফোন চেক করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন ফেক অ্যাকাউন্ট খুলে গুজব ছড়াচ্ছে। মুচলেকা দিয়ে তাদের স্থানীয় অভিভাবকদের সঙ্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ এপ্রিল ২০১৮/ইয়ামিন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়