ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভয়াল ২৫ মে, উপকুলীয় জনপদের আতঙ্কের দিন

এম.শাহীন গোলদার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ২৫ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভয়াল ২৫ মে, উপকুলীয় জনপদের আতঙ্কের দিন

খাবার পানির জন্য আইলা ক্ষতিগ্রস্তদের যেতে হচ্ছে মাইলের পর মাইল

এম.শাহীন গোলদার, সাতক্ষীরা : আজ ভয়াল ২৫ মে। ২০০৯ সালের ২৫ মে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট সর্বনাশা ‘আইলা’ আঘাত হানে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় জনপদে।

মুহূর্তের মধ্যে সাতক্ষীরা  জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি ও খুলনা জেলার কয়রা ও দাকোপ উপজেলার উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে যায়। স্বাভাবিকের চেয়ে ১৪-১৫ ফুট উচ্চতায় সমুদ্রের পানি এসে নিমেষেই ভাসিয়ে নিয়ে যায় নারী ও শিশুসহ কয়েক হাজার মানুষ, হাজার হাজার গবাদী পশু আর ঘরবাড়ি । ক্ষণিকের মধ্যে গৃহহীন হয়ে পড়ে লাখো পরিবার ।

সর্বনাশা আইলার আঘাতে শুধু সাতক্ষীরায় নিহত হয় ৭৩ জন । আইলা আঘাত আনার ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও উপকূলীয় অঞ্চল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা, পদ্মপুকুর ও আশশুনির প্রতাপনগর এলাকায় এখনো মানুষের হাহাকার। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উপকূলজুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাজার হাজার পরিবার এখনো পুনর্বাসিত হয়নি।

আইলার পর থেকে এসব এলাকায় সুপেয় পানির সঙ্কট প্রকট। খাবার পানির জন্য বাসিন্দাদের ছুটতে হচ্ছে মাইলের পর মাইল। এখনও পুরোপুরি সংস্কার হয়নি আইলা কবলিত এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট, উপকুলীয় বেড়িবাধ।

আইলার আঘাতের পর থেকে কৃষি ফসল ও চিংড়ি উৎপাদন বন্ধ থাকায় গোটা এলাকাজুড়ে কর্মসংস্থানের তীব্র সংকট চলছে । কর্মহীন মানুষ অনেকেই এলাকা ছেড়ে কাজের সন্ধানে বাইরে চলে গেছেন।

অন্যদিকে, বনদস্যুদের অত্যাচারে সুন্দরবন, কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর উপর নির্ভরশীল এ এলাকার মানুষের জীবন যাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। ফলে বিকল্প কর্মসংস্থানের কোন ব্যবস্থা না থাকায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারছেন না উপকুলীয় এ জনপদের প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। আইলার পরপরই কিছু সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে  কাজের বিনিময় খাদ্য প্রকল্পের কাজ হলেও এখন আর কোনো কাজ হচ্ছে না। আর এ কারণেই ক্রমেই বাড়ছে অভাবগ্রস্তদের সংখ্যা।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আতাউর রহমান বলেন, ‘কাজের অভাবে মানুষ শহরে চলে যাচ্ছে বটে। তবে পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। আগের চেয়ে কিছুটা হলেও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে।’

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আবুল কাশেম মো.মহিউদ্দিন বলেন, ‘২০০৯ সালের এই দিনে ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাস আইলার আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় উপকূলীয় এলাকা। সরকারিভাবে ধকল কাটাতে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। শুধু উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন কল্পে বেড়িবাঁধ গুলোকে নতুনভাবে বাঁধ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।’




রাইজিংবিডি/সাতক্ষীরা/ ২৫ মে ২০১৭/এম.শাহীন গোলদার/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়