ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মাত্র চারদিনেই ১০ বসত বাড়ি ও ২৫ বিঘা জমি পদ্মায়

মো. মনিরুল ইসলাম টিটো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১২ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাত্র চারদিনেই ১০ বসত বাড়ি ও ২৫ বিঘা জমি পদ্মায়

ফরিদপুর প্রতিনিধি: মাত্র চারদিনেই ১০টি বসত বাড়ি, ২৫বিঘা ফসলী জমি ও বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দুই শতাধিক গাছপালা গিলে নিয়েছে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের কাছ দিয়ে প্রবাহিত পদ্মা।

চার দিনের অব্যাহত ভাঙনের তান্ডবে আরো ২০টি বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে। বর্ষার শুরুতেই পদ্মা নদীর ভাঙন ভয়াল রুপ ধারন করেছে। পদ্মাপারের চরভদ্রাসনের বালিয়া ডাঙ্গী ও ফাজেলখার ডাঙ্গীর বাসিন্দারা এখন আতঙ্কে দিন পার করছে।

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার গুলো কেউ আত্মীয়ের বাড়ি, আবার কেউ সরকারি রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। বুধবার এলাকা ঘুরে জানা যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারে সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কেউ কোন সহায়তা পায়নি। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মরিয়ম বেগম (৬৫), ভ্যান চালক আয়নাল খাঁ (৬৪),বারেক খাঁন (৪৫) এরা জানালেন ‘অফিসাররা আইছিল ঘুইরা গেছে, আমাগো কেউ কিছু দেয় নাই, আমরা গরীব মানুষ অন্যের কাজ করে দিন আনি দিন খাই, তিন চারদিন ধরে ছেলে মেয়ে নিয়ে ঘরবাড়ি সরাতে ব্যস্ত। তাই কামাই রোজগারও বন্ধ’।

নদী ভাঙা পরিবারে সহায়তার বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এজিএম বাদল আমিন বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের নামের তালিকা তৈরি হচ্ছে। খুব শীঘ্রই এদেরকে সহায়তা প্রদান করা হবে’।

এ দিকে ভাঙন হতে মাত্র ৭ মিটার দুরে চরম ঝুঁকিতে থাকা ফাজেলখার ডাঙ্গী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি যে কোন সময় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। মঙ্গলবার বিকেলে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে নদী ভাঙনের ভয়াবহতা সচক্ষে পর্যবেক্ষণ করেন ফরিদপুর-৪ আসনের সাংসদ মুজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন)। ক্ষতিগ্রস্থদেরও খোঁজ খবর নেন। এ সময়  তিনি বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের ৩৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে, ভাঙ্গনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



স্থানীয়রা বসতবাড়ি, সরকারি কয়েকটি স্কুল, বেড়িবাঁধ, মসজিদ ও আশ্রয় কেন্দ্র চরম ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সাংসদকে অবহিত করেন।

এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুন নাহার, উপজেলা চেয়ারম্যান এজিএম বাদল আমিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কাউসার হোসেন, পাউবোর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ জহুরুল হক, সাবেক মুক্তযোদ্ধা কমান্ডার আবুল কালাম মাস্টার, আ’লীগ নেতা মোঃ আনোয়ার আলী মোল্যা, মোঃ আহসানুল হক মামুন, মোঃ মোরাদ হোসেন ও স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ বারেক মন্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা যায়, বালিয়া ডাঙ্গী ও ফাজেলখার ডাঙ্গী গ্রামের ভাঙন কবলিত মানুষ বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে ব্যস্ত। এসব ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন- বালিয়া ডাঙ্গীর হারুন মোল্যা, আফরোজা বেগম, আবুল কাশেম মন্ডল, কাউসার মন্ডল, আক্কাস মন্ডল, পান্নু মন্ডল, পাঞ্জু ব্যাপারী, সিরাজ মন্ডল, বারেক খান, আয়নাল খান, মোকলেস খান, জয়নাল খান, মনোয়ারা বেগম, ফাজেলখার ডাঙ্গীর মরিয়ম বেগম, ওয়াহেদ খান, আলামিন খান, শাহ আলম খান, সুজাত খান এবং এমপি ডাঙ্গী গ্রামের আইয়ুব আলী প্রমানিক ও ইমরান প্রামানিক প্রমুখ। 




রাইজিংবিডি/ফরিদপুর/১২ জুলাই ২০১৮/মো. মনিরুল ইসলাম টিটো/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়