ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে দর্শনার্থী প্রবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

হোসাইন আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৭, ২৪ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতে দর্শনার্থী প্রবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : ভারি বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে রাস্তা ও টিলা ধসের ঘটনায় মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত পর্যটনকেন্দ্রে দর্শনার্থী প্রবেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় টিলাঘেরা সবুজ চা বাগান, খাসিয়া পল্লি, এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর, কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, ছায়া নিবিড় পরিবেশে অবস্থিত নয়নাভিরাম মাধবপুর লেক, ঝর্ণাধারা হামহাম জলপ্রপাত, মাগুরছড়া খাসিয়া পুঞ্জি, শিল্পকলা সমৃদ্ধ মণিপুরীসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, শ্রীমঙ্গলের নীলকণ্ঠের সাত রংয়ের চা, আন্তর্জাতিক মানের হোটেল গ্র্যান্ড সুলতান, চা গবেষণা কেন্দ্র, কুলাউড়ার ঐতিহ্যবাহী নবাববাড়ী, মুরইছড়া ইকোপার্ক, গগন টিলা, দোলন চাপা ইকোপার্ক, মৌলভীবাজার সদরের বর্ষীজোড়া ইকোপার্ক, মুন ব্যারেজসহ অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মধ্যে দু-একটি ছাড়া অন্যগুলোতে গেল বছরের মতো নেই তেমন কোনো প্রস্তুতি।

অকাল বন্যায় জেলার কুলাউড়া, বড়খেলা, রাজনগর, কমলগঞ্জ, সদর ও জুড়ী উপজেলার অধিকাংশ গ্রামের বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। অনাহারে অর্ধাহারে দিন যাপন করছেন এই ৬ উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ। পানিবন্দি মানুষের মধ্যে নেই ঈদের আনন্দ।

বন্যায় জেলার ছোট-বড় বিভিন্ন রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে।

এদিকে গত ২৯ মার্চ মৌলভীবাজারের দুটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান পরিচালনার পর থেকে প্রবাসী ও বাহিরের দর্শনার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলক অনেক কম। এ কারণে লোকসানে আছেন পর্যটন কেন্দ্রের ইজারাদাররা।

বনবিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, অতিবৃষ্টিতে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশের পর পর্যটন রেস্তোরাঁর কাছে প্রায় ৪০ ফুট দৈর্ঘ্য এলাকার দুই ফুট দেবে গেছে। এ ছাড়া জলপ্রপাতের কুণ্ডে নামার সিঁড়ির নিচের প্রায় ৪০ ফুটের মাটি সরে গেছে। প্রবেশ পথের দুপাশের টিলাগুলোতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এতে ওই পর্যটন কেন্দ্রটি আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

 



প্রতিবছর ঈদের ছুটিতে আনন্দ উপভোগ করতে জলপ্রপাত ও ইকোপার্ক এলাকায় হাজার হাজার পর্যটকের ভিড় জমে। কিন্ত এবার ঈদ উপলক্ষে মাধবকুন্ড পর্যটক শূন্য থাকবে বলেই অনেকে মনে করছেন। এতে ইকোপার্কের গেট ইজারাদারকে আর্থিক লোকসানও গুণতে হবে।

উপজেলা পরিষদ, বন বিভাগ ও এলজিইডির স্থানীয় কর্মকর্তারা সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় প্রশাসন দর্শনার্থীদের জলপ্রপাতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।

এ ব্যাপারে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘জননিরাপত্তা ও পর্যটকদের প্রাণহানি এড়াতে প্রশাসনের সহায়তায় বন বিভাগ অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থী প্রবেশ বন্ধ ঘোষণা করেছে। স্থানে স্থানে ব্যানার টানানো হয়েছে। জলপ্রপাতটি পর্যটকদের জন্য মোটেই নিরাপদ নয়।’



রাইজিংবিডি/মৌলভীবাজার/ ২৪ জুন ২০১৭/হোসাইন আহমদ/রুহুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়