ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ০৯ মে ২০২৪ ||  বৈশাখ ২৬ ১৪৩১

‘মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়ানোর বিকল্প নেই’

নাসির উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ২০ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়ানোর বিকল্প নেই’

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : ‘৪র্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা, পণ্য উৎপাদন ও বিপণন, সর্বোপরি সামগ্রিক পেক্ষাপটে অভাবনীয় পরিবর্তন আনবে। বাংলাদেশকে এ বিপ্লবের সুবিধা আদায়ের জন্য এখনই প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলে ডিসিসিআই ভবনে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আবুল কাসেম খান।

‘৪র্থ শিল্প বিপ্লব : বাংলাদেশের সুযোগ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভা যৌথভাবে আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) এবং বাংলাদেশ সেন্টার ফর ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলুশন (বিডিফোরআইআর)।

আবুল কাসেম খান জানান, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের সময়কালে রোবোটিকস, ক্লাউড টেকনোলোজি, ব্লকচেইন, থ্রিডি প্রিন্টিং, ন্যানো টেকলোজি এবং বায়োটেকনোলোজি প্রভৃতি বিষয়গুলো অত্যন্ত গুরুত্ব পাবে। এ প্রযুক্তিসমূহের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রণোদনা প্রদান করতে হবে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মোচন করেছে। আমাদের তরুণসমাজ ইতোমধ্যে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ব্যবহারে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে একদিকে যেমন কর্মসংস্থানের সুযোগ সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা আছে, সাথে সাথে কর্মসংস্থানের নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মোচনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এজন্য আমাদের এখনই যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সামনের দিনগুলোতে যারা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারবে, তারাই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারবে এবং এমতাবস্থায় আমাদেরকে অবশ্যই নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে আরো বেশি মনোযোগী হতে হবে। 

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর ফোর্থ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভ্যুলুশন (বিডিফোরআইআর) এর সহ-সভাপতি সৈয়দ তামজিদ উর রহমান।

মূল প্রবন্ধে তিনি বলেন, আমাদের ইতোমধ্যেই ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি এবং এ শিল্প বিপ্লবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, নতুন কর্মদক্ষতা উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের প্রকৃতি প্রভৃতি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসা-বাণিজ্যের গতানুগতিক প্রক্রিয়া পরিহার করে ক্রেতাবান্ধব কার্যক্রম গ্রহণ এবং নতুন ব্যবহারের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য শিল্পমালিকদের এগিয়ে আশার আহ্বান জানাচ্ছি।

নতুন প্রযুক্তির সাথে তাল মেলানোর জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন এবং শিল্প ও শিক্ষার সমন্বয় আরো বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে সৈয়দ তামজিদ উর রহমান বলেন, এ শিল্প বিপ্লবের কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে, নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবিত হবে। উৎপাদন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের কারণে পণ্যের উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি পণ্যের দাম কমবে। এর মাধ্যমে সার্বিকভাবে অর্থনীতিতে নতুন গতির সঞ্চার হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার আনির চৌধুরী বলেন, ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের কারণে একদিকে যেমন নতুন কাজের দিগন্ত উন্মোচিত হবে, একইসাথে কর্মচ্যুতিরও আশঙ্কা থাকবে। এজন্য আগামী ২০ বছরের মধ্যে আমাদের দেশের কর্মক্ষম প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মানুষকে পুনঃপ্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে এবং আরো ২ কোটি মানুষকে নতুন উদ্ভাবিত প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে হবে। বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো এবং নতুন উদ্ভাবিত তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার আরো আধুনিকায়ন প্রয়োজন। 

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন- ডিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি কামরুল ইসলাম, সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন, পরিচালক ইমরান আহমেদ, মো. আলাউদ্দিন মালিক, এস এম জিল্লুর রহমান, ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, প্রাক্তন ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ওসামা তাসীর এবং মহাসচিব এ এইচ এম রেজাউল কবির।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ডিসেম্বর ২০১৮/নাসির/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়