ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

যথাযোগ্য মর্যাদায় রাবিতে ড. শামসুজ্জোহা দিবস পালিত

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫৯, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যথাযোগ্য মর্যাদায় রাবিতে ড. শামসুজ্জোহা দিবস পালিত

ড. জোহার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন রাবি উপাচার্যসহ অন্যরা

রাবি প্রতিনিধি : নানা আয়োজনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ড. শামসুজ্জোহা দিবস পালিত হয়েছে।

সূর্যদয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ভবন, আবাসিক হল ও অন্যান্য ভবনে কালো পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী কর্মসূচি। পরে ৭টায় ড. জোহার সমাধি ও স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন রাবি উপাচার্য, উপ-উপাচার্যসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা। এর পর সকাল ১০টায় সিনেট ভবনে রসায়ন বিভাগের আয়োজনে জোহা স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিনের পৃষ্ঠপোষকতায় ও রসায়ন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে স্মারক বক্তা ছিলেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা। এ ছাড়া বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সায়েন উদ্দিন আহমেদ।

অধ্যাপক সনৎকুমার সাহা বলেন, ‘ড. জোহার তার মৃত্যুতে গোটা বিশ্বে যে প্রতিক্রিয়া দেখা যায়, তা প্রমাণ করে- ড. জোহা জীবন বৃথা যায়নি। ড. জোহা হত্যার পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো চারজন শিক্ষক খুন হয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডগুলোর মধ্যে একটা যোগসূত্র আছে। যারা জোহাকে হত্যা করেছিল, তাদের অনুসারী চেলারাই পরবর্তীতে এই চার শিক্ষককে হত্যা করেছে।

তিনি আরো বলেন, কাজের ক্ষেত্র প্রসারিত না হলে বেকারের সংখ্যা বেড়ে যায়। মানবসম্পদ তৈরি না হলে কাজের ক্ষেত্রও আশানুরূপ বাড়ে না। আত্মবিরোধের দুই প্রান্তকে মাথায় রেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ব্যবস্থাপত্র নিয়ে ভাবতে হয়।

অনুষ্ঠানে উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজানউদ্দিন বলেন, ড. জোহা তার জীবন উৎসর্গের মাধ্যমে শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে একটি ঐক্যের বন্ধন রচনা করে গেছেন। আমরা দীর্ঘকাল ধরে তাকে স্মরণ করে আসছি। তবে দুঃখ হয়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আর কোথাও তাকে স্মরণ করা হয় না। তিনি যে শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লড়েছেন তা নয়, তার এই ত্যাগের দৃষ্টান্ত বাংলাদেশের মানুষের জন্য। তিনি ১৮ ফেব্রুয়ারিকে শিক্ষক দিবস ঘোষণার দাবি জানান।

এদিকে জোহা দিবস উপলক্ষে সকাল থেকে শহীদ ড. জোহার সমাধি ও জোহা স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলসমুহ, রসায়ন বিভাগ, শিক্ষক সমিতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।

এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে কোরআন খানি ও বিশেষ মোনাজাত, বিকেল ৪টায় শহীদ শামসুজ্জোহা হলে আলোচনা সভা ও সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্বালনের আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি গণঅভ্যূত্থানকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. শামসুজ্জোহা প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে নিহত হন। তিনিই এদেশের প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী। দিনটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শিক্ষক দিবস’হিসাবে পালিত হয়।

 

 

 

রাইজিংবিডি/রাবি/১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/মেহেদী হাসান/উজ্জল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়