যশোরে কোরবানির পশুর ক্রেতাদের টার্গেট ‘খামার’
যশোর প্রতিনিধি: যশোরের হাটগুলোতে কোরবানির পশু উঠতে শুরু করেছে। তবে অধিকাংশ ক্রেতারাই পশুর হাটে যাওয়াকে ঝামেলা ও হয়রানি মনে করছেন। তারা পশু কিনতে বিভিন্ন খামার বা গৃহস্থের বাড়ি ছুটছেন।
অন্যদিকে এরই মধ্যে আসা শুরু হয়েছে ভারতীয় গরু। তবে ভারত থেকে যত গরুই আসুক না কেনো ক্রেতাদের টার্গেট হচ্ছে দেশি গরু।
ক্রেতারা জানান, কোরবানির বাজারকে টার্গেট করে প্রতিবছর একটি শক্তিশালী প্রতারক চক্র গড়ে ওঠে। এসব প্রতারক চক্রের কারণে পশুর হাট থেকে অধিকাংশ ক্রেতাকেই ঠকতে হয়। তাছাড়া ইজারাদারদেরও অনেকে ঝামেলা মনে করেন। এসব কারণে অনেকেই এখন পশু কিনতে হোম ডেলিভারির শরণাপন্ন হচ্ছেন। আর যারা পশুর হাটে যেতে চান না তারা কোরবানির পশু সংগ্রহে বিভিন্ন খামারে যেতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করছেন।
যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া এলাকার সাহেব আলী জানান, গত বছর তিনি বাঘারপাড়ার চাড়াভিটা বাজার থেকে কোরবানির গরু কিনতে গিয়ে প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে সব টাকা খুইয়েছিলেন। এবার তিনি বাজার থেকে গরু কিনতে ইচ্ছুক নন।
রুপদিয়ার একটি খামার থেকে হোম ডেলিভারিতে কোরবানির পশু আনাচ্ছেন বলে জানান।
একই কথা জানান, শাহ নেওয়াজ নামে একজন ব্যাংকার। তিনি বলেন, ‘ফেসবুকেগরুর সন্ধান পেয়ে পাশের গ্রাম থেকে ৪৫ হাজার টাকায় একটি গরু কিনেছি। পশুর হাটে গরু কিনতে গেয়ে গিয়ে ঝামেলা পোহাতে হয়, তা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যই এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলাম।
তিনি বলেন, ‘কোরবানির আগ পর্যন্ত ওই খামারেই গরু পালন করা হবে। এরপর খামার মালিকই গরুটি আমার বাড়িতে পৌঁছে দেবেন। তবে এক্ষেত্রে তাকে কিছু বাড়তি টাকা দিতে হবে।’
এদিকে ক্রেতাদের চাহিদাকে টার্গেট করে একশ্রেণির ব্যবসায়ীরাও বেছে নিয়েছেন বাড়ি বাড়ি পশু পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ।
এখানকার পশু ব্যবসায়ী সদর উদ্দীন জানান, তিনি ইতিমধ্যে ১০ টি গরু ক্রেতাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যপারে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ক্রেতারা তাদের পছন্দের পশুর দাম-দর ঠিক করে দেওয়ার পর তিনি তাদের বাড়িতে পশুটি পৌঁছে দিবেন। এতে একদিকে যিনি পশু কিনছেন তিনি ঝামেলামুক্ত থাকছেন অন্যদিকে ব্যবসায়ীরাও ইজারাদারের দৌরাত্ম থেকে মুক্তি পাবেন।
এবছর যশোরের বিভিন্ন হাটবাজারে দেশি গরুর উপস্থিতিই প্রাধান্য পাবে। গত কয়েক বছর ধরে ভারতীয় গরু না আসায় এ অঞ্চলের খামারিরা বেশি বেশি দেশি গরু পালন করে আসছেন। এ অঞ্চলের খামারগুলোই কোরবানি পশুর চাহিদা মেটাতে সক্ষম বলে খামারিরা জানান।
ক্রেতারা বলছেন, হাটে এখন দেশি গরুর দাম অনেক বেশি। অধিকাংশ ক্রেতারা এখন ঘুরেফিরে গরু দেখলেও, অপেক্ষা করছেন। পশুর হাটগুলো জমলেই গরুর দাম কমতে পারে বলে তাদের ধারণা। কারণ এবার যশোরে বিভিন্ন খামারে পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। ঈদের আগেই এসব গরু বাজারে উঠলে দাম কমতে থাকবে বলে ক্রেতারা ধারণা করছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের হিসাব মতে, আসন্ন কোরবানি উপলক্ষে জেলায় ৫৫ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। ইতিমধ্যে কোরবানি উপলক্ষে যশোরের ৮ উপজেলায় ৬৮ হাজার ২৫টি পশু হৃষ্টপুষ্ট করা হয়েছে। এরমধ্যে গরু ৩৫ হাজার ৭০০, ছাগল ২৯ হাজার ৩০০ ও ভেড়া রয়েছে ৩ হাজার।
রাইজিংবিডি/যশোর/১৫ আগস্ট ২০১৮/বি এম ফারুক/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন