ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

যাদের হাত ধরে খুলনার আরেক শিরোপা

আব্দুল্লাহ এম রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৩, ৫ জানুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যাদের হাত ধরে খুলনার আরেক শিরোপা

ওয়ালটন ১৮তম জাতীয় ক্রিকেট লিগের চ্যাম্পিয়ন খুলনা দল

আব্দুল্লাহ এম রুবেল : ১৮তম ওয়ালটন জাতীয় ক্রিকেট লিগে এক সময়ের দুর্বল দল খুলনা বিভাগ এখন সেরাদের সেরা।

 

বৃহস্পতিবার আবারও শিরোপা জিতল আব্দুর রাজ্জাকের দল। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার ও মোট ৫ বার জাতীয় ক্রিকেট লিগের শিরোপা জিতল তারা।

 

এ মৌসুমে টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের পথে বড় চ্যালেঞ্জ পার করতে হয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের দলকে। বৃষ্টি বাঁধায় প্রথম তিনটি ম্যাচে জয়ের মুখ দেখতে পারেনি খুলনা। শুধু জয় দেখেনি তাই না, কোন বোনাস পয়েন্টও পেতে পারেনি। তবে শেষ তিন রাউন্ডে স্বরূপে জ্বলে ওঠে খুলনা। পরের তিন ম্যাচের দু’টিতে সরাসারি জয় পায়, পাশাপাশি বোনাস পয়েন্টও পায় তারা। ফলে শেষ রাউন্ডে একদিন বাকি থাকতেই আবারও শিরেপা উৎসবে মেতে উঠে খুলনার ক্রিকেটাররা।

 

তবে এ শিরোপা জয়ের পথ খুব একটা সহজ ছিল না খুলনার। শুরু থেকেই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা ছিলেন না দলে। যারা দলে ছিলেন তারাও বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দলের ক্যাম্পে থেকে দলের বাইরে ছিলেন। এসবের পরেও শিরেপা অক্ষুন্ন রাখে খুলনা।

 

খুলনার শিরোপা জয়ে অনেকখানি কৃতিত্ব এক সময়ের জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড় তুষার ইমরানের। খুলনাকে শিরোপা এনে দিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। ৬ ম্যাচে এ ওপেনার ব্যাট করার সুযোগ পেয়েছেন সর্বসাকুল্যে ৭ ইনিংস। আর তাতেই ৫১৮ রান করেন তিনি। মোট ৩টি শতক আছে তার এই ৭ ইনিংসে। আছে একটি অর্ধশতকও।

 

 

জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ায় এনামুল হক বিজয়ের সামনে জাতীয় লিগ বাদে প্রমাণের কিছুই ছিল না। আর সে যাত্রায় অনেকটাই সফল এই ওপেনার। প্রথম দুই ম্যাচে তেমন কিছু করতে না পারলেও পরের দিকে নিজেকে চিনিয়েছেন। জানিয়েছেন এখনও তাকে নিয়ে ভাববার সময় শেষ হয়ে যায়নি। ৬ ম্যাচে ৮ ইনিংস ব্যাট করে খুলনার এই ব্যাটসম্যান করেছেন ৪৫১ রান। শিরেপা জয়ের ম্যাচসহ তার রয়েছে দুইটি শতক। শেষ রাউন্ডে জিতেছেন ম্যাচ সেরার পুরস্কারও।

 

প্রথমদিকে খুলনাকে অনেকটা এগিয়ে নিয়েছেন তরুণ উদীয়মান ব্যাটসম্যান মেহেদী হাসান। ৬ ম্যাচে তার থেকে খুলনা পেয়েছে ২২৭ রান। মূলত বোলার হলেও লিগের প্রথম রাউন্ডে নিশ্চিত হারতে থাকা ম্যাচ বাঁিচয়েছিলেন খুলনার অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক। বরিশালের বিপক্ষে খুলনায় অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে ৯৭ রানের এক ঝকঝকে ইনিংস খেলেন তিনি। ব্যাট হাতে শেষ রাউন্ডের প্রথম ইনিংসেও হাল ধরেছিলেন তিনি।

 

খুলনার শিরেপায় শুধু ব্যাটসম্যানরা নয়, সমান ভূমিকা রেখেছেন বোলাররাও। বারবার জাতীয় দল থেকে ভাগ্য ফেরা আল আমিন দারুণ বোলিং করে নিজেকে প্রমাণ করেছেন। শিরেপা জয়ের ম্যাচেতো একাই গুড়িয়ে দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোকে। দ্বিতীয় ইনিংসে খুলনাকে ১১০ রানে অলআউট করতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি। প্রতিযোগিতার শুরুতে খুলনার হয়ে খেললেও ইংল্যান্ড সিরিজ চলাকালে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পান এই পেসার। ফলে দু’টি ম্যাচ খেলতে পারেননি তিনি। তবে মাত্র ৪ ম্যাচ খেলেই খুলনার হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক তিনি। ৪ ম্যাচে নিয়েছেন ২৩টি উইকেট। শেষ ম্যাচে ৯ উইকেটসহ সাফল্য পেয়েছেন অনেকটা ধারাবাহিকভাবেই।

 

 

সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রহের তালিকায় সব সময় উপরের দিকে থাকা খুলনার অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক এবার একটু পিছিয়ে থাকলেও প্রয়োজনের সময় জ্বলে ওঠেন তিনি। মাঝে একটি ম্যাচ খেলতে পারেননি ইনজুরির কারণে। ৫ ম্যাচে ১৮ উইকেট নিয়ে খুলনাকে শিরোপা এনে দেয়ার অন্যতম কৃতিত্ব তার।

 

হঠাৎ আবিস্কার আশিকুজ্জামানেরও অনেকটা অবদান রয়েছে খুলনার শিরেপায়। চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে পেসার সংকটে কোচ ইমদাদুল বাশার রিপনের পছন্দে দলে জায়গা পান সাতক্ষীরার ছেলে আশিক। এসেই বাজিমাত করেন তিনি। প্রথম ম্যাচেই দুই ইনিংসে নেন ৯ উইকেট। এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ছিল তার পরের দুই রাউন্ডের ম্যাচেও। মোট ৩টি ম্যাচ খেলে ১৬টি উইকেট নেন তিনি।

 

 

রাইজিংবিডি/খুলনা/৫ জানুয়ারি ২০১৬/আব্দুল্লাহ এম রুবেল/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়