যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গি মদদদাতাদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : আসন্ন সংসদ নির্বাচনে রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি মদদদাতা ও সন্ত্রাসীদের ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহীর মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি রাজশাহী জেলা ও মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ এ আহ্বান জানান।

ভাষাসৈনিক আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির রাজশাহী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ রাজকুমার সরকার।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এবারের নির্বাচনে একটি জোট বা দল সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদ ও রাজাকারদের সহযোগী-দোসরদের সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জঙ্গি মদদদাতা হিসেবে ব্যারিস্টার আমিনুল হক, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মিজানুর রহমান মিনু, নাদিম মোস্তফা, আবু হেনা, আলমগীর কবীর এবং নাশকতা মামলার আসামি আবু সাঈদ চাঁদকেও এবার মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।

এ ছাড়া, যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াতের অনেক নেতাকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। যারা অগ্নিসন্ত্রাস করে দেশে বিভীষিকাময় পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল, তারাও প্রার্থী হয়েছে। তাদের বয়কট করতে হবে। এজন্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি মাঠে নামবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

সংবাদ সম্মেলনে এ অঞ্চলে বাংলা ভাইয়ের সন্ত্রাস, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা তুলে ধরে জানানো হয়, ২০০৪ সালের ৩১ মার্চ বাগমারায় জেএমবির নামে বাংলা ভাই অভিযান শুরু করে। এরপর তারা ওসমান বাবু, দীপঙ্কর, শহীদুল, আব্দুল কাইয়ুম বাদশা, খেজুর আলীসহ সাতজনকে হত্যা করে এবং পরবর্তী এক বছরের মধ্যে তারা ৩২ জনকে হত্যা করে। এদের সবাইকে চরম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। যাদের মদদে এসব নির্যাতন আর হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, তারা আবার প্রার্থী হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে জাতিকে সেসব প্রার্থীকে প্রত্যাখ্যান এবং তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া, রাজশাহী অঞ্চলসহ সারা দেশে শান্তি, সৌহার্দ্য ও সমৃদ্ধির উন্নত দেশ গড়তে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের প্রার্থীকে বিজয়ী করার আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক উপাধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, শিক্ষক নেতা অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলা সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান আলী বরজাহান, নগর কমিটির নির্বাহী সভাপতি ড. সুজিত সরকার, লেখক-সাহিত্যিক প্রশান্ত কুমার শাহা, কবি আরিফুল হক কুমার, রাবির সাবেক উপ-উপাচার্য ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের জেলা সভাপতি অধ্যাপক মো. নূরুল্লাহ, নাট্যব্যক্তিত্ব কামারুল্লাহ সরকার, মহিলা পরিষদের জেলা সভাপতি কল্পনা রায়, মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগারের সভাপতি প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির মহানগর সম্পাদক মনিরুজ্জামান উজ্জল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/রাজশাহী/১১ ডিসেম্বর ২০১৮/তানজিমুল হক/সাইফুল