ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

যে ধরনের হেডফোন কানের জন্য নিরাপদ

মাহমুদুল হাসান আসিফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:০৮, ২৮ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
যে ধরনের হেডফোন কানের জন্য নিরাপদ

প্রতীকী ছবি

মাহমুদুল হাসান আসিফ : আমরা জানি যে, হেডফোন দিয়ে গান শোনা শ্রবণশক্তি নষ্টের কারণ হতে পারে। শব্দদূষণে যেমন শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি হেডফোনের কারণেও একই সমস্যা হয়ে থাকে।

২০১০ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৮০ শতাংশ কিশোরী তাদের মিউজিক ডিভাইসে হেডফোন লাগিয়ে গান শোনার ফলে শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাসের শিকার হয়েছে। আপনি যদি এ ব্যাপারে সচেতন থাকেন যে, উচ্চশব্দে গান শোনা আপনার কানের ক্ষতি করে, তাহলে অবশ্যই সর্বদা শব্দের মাত্রা কমিয়ে শোনা উচিত। কিন্তু কানের জন্য নিরাপদ কিংবা অন্তত শ্রবণ ক্ষমতা হ্রাসের পরিমাণ কমাতে পারে, এমন বিশেষ ধরনের হেডফোন রয়েছে কি?

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের হেডফোন এবং ইয়ারবাড বা ইয়ারফোন পাওয়া যায়। যেমন: ব্লুটুথ প্রযুক্তির ছোট্ট ইয়ারবাড থেকে শুরু করে নয়েজ ক্যানসেলিং প্রযুক্তির বড় হেডফোন। তবে আপনার হেডফোন বা ইয়ারফোনে ইয়ারবাড (ফোমের মতো অংশ) থাকুক আর না থাকুক, আপনার কানে সেটির ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিৎ। শ্রবণশক্তি বিশেষজ্ঞ ডা. রবার্ট এ ডোবি ২০১৭ সালে টাইম ম্যাগাজিনকে বলেন, ‘শ্রবণক্ষমতা হ্রাসের ক্ষেত্রে হেডফোনে ইয়ারবাড থাকা বা না থাকা তেমন একটা জরুরি বিষয় নয়।’ শ্রবণশক্তি বিষয়ক আমেরিকান একটি সংস্থার মতে, ৭০ ডেসিবলের মধ্যে থাকলে যেকোনো শব্দই নিরাপদ। সুতরাং আপনি যদি শব্দের এই নির্দিষ্ট মাত্রার শব্দের মধ্যে হেডফোনে গান শোনেন, সেক্ষেত্রে যেকোনো হেডফোনই আপনার জন্য নিরাপদ।

যাহোক, বিশেষ একটি ক্ষেত্রে অবশ্য আপনার হেডফোনের ধরন শ্রবণশক্তি হ্রাসের সঙ্গে সম্পর্কিত। আর তা হচ্ছে, কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে হেডফোনটি উপযোগী কিনা অর্থাৎ নয়েজ ক্যানসেলিং সুবিধার হেডফোন। নয়েজ ক্যানসেলিং প্রযুক্তির হেডফোনের স্পিকার অংশ ফোম এবং অন্যান্য উপদানের আস্তরণ দিয়ে ঢাকা থাকে যাতে হেডফোন কানে থাকা অবস্থায় তা বাইরের বিশৃঙ্খল শব্দ প্রতিরোধ করতে পারে। যেসব হেডফোনে এই সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই, সেসব হেডফোনের স্পিকার এবং আপনার কানের পর্দা খুব কাছাকাছি অবস্থান করায় ক্ষতির কারণ হতে পারে।

যদি আপনার ইতিমধ্যে শ্রবণসংক্রান্ত সমস্যা থাকে, তাহলে নয়েজ ক্যানসেলিং হেডফোন ব্যবহার করাটা সেরা সমাধান হবে না। এক্ষেত্রে নতুন উদ্ভাবনী হেডফোন হচ্ছে, আইকিউ বাড। এই হেডফোনগুলো কানে খুব সুন্দরভাবে বসে যায় এবং এগুলো কানে পরলে গান শোনার সময় আশেপাশের কথাবার্তাও পরিষ্কার ভাবে শোনা যায়।

আপনার কানকে শব্দের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচাতে হলে এমন হেডফোন ব্যবহার করুন (যেমন নয়েজ ক্যানসেলিং) যা পরিষ্কার শব্দ প্রদান করে এবং পারিপার্শ্বিক শব্দকে অগ্রাহ্য করার জন্য আপনাকে যেন ভলিউম বাড়াতে না হয়। তাছাড়া হেডফোন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। এ বিষয়ে ‘অ্যাকশন ইন হিয়ারিং লস’ সংস্থার প্রোডাক্ট টেকনোলজিস্ট কেভিন টেইলর বলেন, ‘সবসময় অল্প ভলিউম দিয়ে গান শোনা শুরু করুন এবং আস্তে আস্তে ভলিউম বাড়িয়ে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের পর্যায়ে নিয়ে যান। কখনোই হেডফোনে উচ্চ ভলিউমে বেশিক্ষণ গান শুনবেন না। কেননা এতে আপনার শ্রবণশক্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সুতরাং এ বিষয়ে সতর্ক থাকুন।’

হেডফোন বা ইয়ারফোন ফোন দিয়ে গান শোনার ফলে শ্রবণশক্তি হ্রাসের হার ভবিষ্যতে হয়তো কমে যাবে। কেননা প্রযুক্তিবিদগণ শব্দপ্রকৌশলকে দিনে দিনে আরো আধুনিক পর্যায়ে নিয়ে যেতে কাজ করে চলেছেন।

তথ্যসূত্র : বাসেল



রাইংজিংবিডি/ঢাকা/২৮ আগস্ট ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়