ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

লাইসেন্স ফি বাড়ছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১২, ১৩ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লাইসেন্স ফি বাড়ছে ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারের

কেএমএ হাসনাত : ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন ও লাইসেন্স নবায়ন ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

পাশাপাশি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল স্থাপনের লাইসেন্স ও নবায়ন ফি’ও বাড়ছে বলে অর্থমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়ানোর ক্ষেত্রে সম্প্রতি বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে যে সব খাতে রাজস্বের পরিমান বাড়ানো হয়নি সেসব খাতের পাশাপাশি নতুন নতুন খাত বের করে রাজস্ব আদায়ের  উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য সেবাখাতের লাইসেন্স ফি কম হওয়ায় যত্রতত্র হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠছে। গঁজিয়ে উঠা এসব কেন্দ্রে নানা ধরনের অঘটন ঘটেছে। পাশাপাশি জনগন স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার নামে প্রতারিত হচ্ছে। সাধারন মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগ থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হলে অর্থমন্ত্রণালয় তাতে সম্মতি দিয়েছে।

সূত্র জানায়, এরই অংশ হিসেবে বেসরকারি মেডিকাল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা ও লাইসেন্স নবায়নের ফি ৫০ গুণ এবং ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন ও নবায়ন ফি এলাকা ও প্রকারভেদে ১০ থেকে ৪০ গুণ বাড়ানো হচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে ডেন্টাল ক্লিনিক স্থাপন ও নবায়ন ফি।

সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগ থেকে পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গত সপ্তাহে অর্থ বিভাগ থেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অর্থ বিভাগ থেকে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, বর্তমান যে ফি তা ১৯৮২ সালে ধার্য করা হয়েছে। সময়ের প্রয়োজনে ও রাজস্ব আদায়ের ফির জন্য তা বাড়ানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল।

বর্তমানে একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের লাইসেন্স ও বার্ষিক নবায়ন ফি ধার্য রয়েছ মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। এ ফি বাড়িয়ে আড়াই লাখ করা হয়েছে। বর্তমান বিভাগীয় বা সিটি করপোরেশনের আওতায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক স্থাপন ও নবায়ন ফি ধার্য রয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। ১০ থেকে ৫০ বেডের জন্য এখন লাইসেন্স ও নবায়ন ফি দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা। ৫০ থেকে ১০০ বেডের জন্য এক লাখ টাকা, ১০১ থেকে ২৪৯ বেডের ক্ষেত্রে দেড় লাখ টাকা এবং ২৫০ বেডের জন্য দিতে হবে দুইু লাখ টাকা।

একইভাবে জেলা পর্যায়ে এ ফি হবে বর্তমান ৫ হাজার টাকার পরিবর্তে ৪০ হাজার, ১০ থেকে ৫০ বেডের হাসপাতালের জন্য ৭৫ হাজার, ৫০ থেকে ১০০ বেডের জন্য এক লাখ এবং ১০১ বেড থেকে ২৪৯ বেডের জন্য  দেড় লাখ টাকা।

উপজেলা পর্যায়ে ১০ থেকে ৫০ বেডের জন্য ২৫ হাজার, ৫০ থেকে ১০০ বেডের জন্য  ৫০ হাজার, ১০১ থেকে ২৪৯ বেডের ৭৫ হাজার এবং এক লাখ টাকা।

ডায়গনস্টিক সেন্টার স্থাপনের লাইসেন্স ফি ও নবায়ন ফিও প্রকার ভেদে বাড়ানো হয়েছে সর্বোচ্চ ৫০ গুণ। এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে ডায়াগনস্টিক ল্যাব ক্যাটাগরি-এ (রুটিন প্যাথলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, হেমাটোলজি, এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাম, হিন্টোজাবলোজি, মাইক্রোবায়োলজি, ইমিউনোলোজি, হরমোন পরীক্ষা, রেডিওলোজি ও ইমেজিং, সিটিস্ক্যান এবং এমআরআই) বর্তমানে লাইসেন্স ফি ও নবায়ন ফি মাত্র এক হাজার টাকা। এটি বিভাগীয়/সিটি করপোরেশন পর্যায়ে ৫০ হাজার টাকা, জেলা পর্যায়ে ৪০ হাজার ও উপজেলাপর্যায়ে ২৫ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

‘বি’ ক্যাটাগরির ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জন্য এ ফি হবে এলাকাভেদে বিদ্যমান এক হাজার টাকার পরিবর্তে ৩৫ হাজার, ২৫ হাজার এবং ২০ হাজার টাকা। সি’ ক্যাটাগরির জন্য ২৫, ২০ ও ১৫ হাজার টাকা। বিদেশ গমনের উদ্দেশ্যে স্থাপিত মেডিক্যাল চেকআপ সেন্টার স্থাপন ও নবায়ন ফি বিদ্যমান ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করা হয়েছে।

একইভাবে ডেন্টাল ক্লিনিক স্থাপন ফি ও নবায়ন ফি এক হাজার টাকার পরিবর্তে করা হয়েছে এলাকাভেদে ৩০ হাজার , ২৫ হাজার  ও ২০ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগ থেকে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগ থেকে পাঠানো প্রস্তাবটি কার্যকর করা সম্পূর্ণ যৌক্তিক। বর্তমান সময়ে জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী বিদ্যমান হার অত্যন্ত কম। এতে সরকার প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ফি কার্যকর হলে সাধারণ জনগণের সেবা প্রদানের পাশাপাশি রাজস্বের আওতা সম্প্রসারণ এবং সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।

বেসরকারি কয়েকটি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, বিষয়টি সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবায় বিঘœ ঘটবে। কারণ এসব সেন্টারের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত ফি জনগনের কাছ থেকেই আদায় করা হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ আগস্ট ২০১৮/হাসনাত/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়