ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

শহীদ জননীর ৯০তম জন্মদিন

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৩ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শহীদ জননীর ৯০তম জন্মদিন

শাহ মতিন টিপু : যদি আমরা ফিরে তাকাই আমাদের চরম শোক ও পরম গৌরবে মন্ডিত মুক্তিযুদ্ধের সেই দিনগুলোর দিকে, আমাদের সামনে অনেক নামের ভীড়ে প্রেরণার আধার হয়ে দাঁড়াবেন এক শহীদ জননী।

হ্যাঁ তিনি জাহানারা ইমাম। আজ এই মহিয়সী নারীর ৯০তম জন্মদিন। ১৯২৯ সালের ৩ মে মুর্শিদাবাদের সুন্দরপুরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ আবদুল আলী, মাতার নাম সৈয়দা হামিদা বেগম এবং তার স্বামীর নাম শরীফ ইমাম। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তার ত্যাগ দেশপ্রেমের সর্বোচ্চ উদাহরণ হয়ে আছে।

১৯৭১ সালে তার জ্যেষ্ঠ পুত্র শফি ইমাম রুমী দেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশগ্রহণ করেন এবং বেশ কিছু সফল গেরিলা অপারেশনের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন এবং পরবর্তীতে পাকিস্তানিদের হাতে নির্মমভাবে শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের পর রুমীর বন্ধুরা ছেলে হারা মা জাহানারা ইমামকে সকল মুক্তিযোদ্ধার মা হিসেবে বরণ করে নেন এবং রুমীর শহীদ হওয়ার কারণে তাকে ‘শহীদ জননী’র মর্যাদায় ভূষিত করেন। সেই থেকে তিনি সবার কাছে বরেণ্য ‘শহীদ জননী’ হয়ে আছেন।

তিনি ছিলেন ব্যক্তিত্বময়ী। তিনি ছিলেন স্কুলকলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আবার একজন সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে মানুষের মনোজগতে তিনি ঠাঁই করে নিয়েছেন। তিনি একাধারে শহীদ জননী, লেখিকা, শিক্ষাবিদ, কথাসাহিত্যিক ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল আন্দোলনের নেত্রী।

মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির উত্থানে নব্বই দশকে জনমনে যে ক্ষোভের সঞ্চার হয় তার পটভূমিতে ১৯৯২-এর. ১৯ জানুয়ারি ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ গঠিত হলে জাহানারা ইমাম এর আহবায়ক নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং একাত্তরের ঘাতকদের বিচারের দাবীতে দেশব্যাপী ব্যাপক গণআন্দোলন পরিচালনা করেন। তারই নেতৃত্বে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী ময়দানে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতিতে একাত্তরের ঘাতকদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয় গণআদালত।

এই শহীদ জননী রচিত ‘একাত্তরের দিনগুলি’ ছিল মুক্তিযুদ্ধকালের এক অন্যরকম দলিল। জাহানারা ইমাম দিনলিপি লিখলেও এ গ্রন্থ নিছক দিনলিপি নয়, এখানে ফুটে উঠেছে জাতির হৃদয়ছবি। ১৯৭১ সালের ১ মার্চ থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেন সে সময়েরই এক দারুণ প্রতিচ্ছবি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ঢাকা শহরের অবস্থা ও গেরিলা তৎপরতার বাস্তবচিত্র।

শহীদ জননীকে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ মে ২০১৮/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়