ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

শিল্প কারখানায় সচেতনতা প্রয়োজন

শাহনেওয়াজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২৫ নভেম্বর ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শিল্প কারখানায় সচেতনতা প্রয়োজন

দেশে শিল্প কারখানায় একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। বিশেষ করে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে বেশি। টঙ্গীতে একটি রাসায়নিক কারাখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই ঘটে গেল আরো একটি দুর্ঘটনা। সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে গ্যাস লাইটার প্রস্তুতকারক একটি কারখানায় আগুন লেগে শিশু ও নারীসহ মারা গেল ২৬ জন। দগ্ধ ২৪ জন এখন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

 

গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, আশুলিয়ায় কালার ম্যাক্স (বিডি) লিমিটেড নামের ওই কারখানাটির কোন অনুমোদনই ছিলো না। মুরগির পুরোনো খামারের শেডে চালু করা হয়েছে কারখানা। বিস্ফোরক অধিদপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অনুমতি নেয়নি এই কারখানার কর্তৃপক্ষ। এ ধরণের স্পর্শকাতর কারখানার ক্ষেত্রে যে রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা সুবিধা থাকা প্রয়োজন তার কোনটাই ছিলো না। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঢোকারও কোন উপায় নেই। মোট কথা সরু গলি ধরে যেতে হয় কারখানায়, যেখানে গলির মধ্যে পায়ে হাটাই মুশকিল। কারখানার বেশিরভাগ শ্রমিকই নারী। অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কিত কোন প্রশিক্ষণ তাদের দেওয়া হয়নি, শেখানো হয়নি আগুন নেভানোর জন্য গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহারবিধি।   

 

আশুলিয়ায় এ ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ আরো একটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে গতবছর। চারাবাগ এলাকায় পলমল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের গ্যাস লাইটার নির্মাতা কারখানায় আগুনে আটজন শ্রমিক মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন। সেই কারখানায়ও নূন্যতম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা সুবিধা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ আছে। আশ্চর্যের ব্যাপার যে, বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমোদন এই কারখানাটিরও নেই।

 

আমরা জানি, ঢাকার নিমতলীতে ২০১০ সালে রাসায়নিকের গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা যান ১১৭ জন। ২০১২ সালে সাভারে তাজরীন গার্মেন্টস কারখানায় আগুনে প্রাণ হারান ১২৬ জন শ্রমিক। মাত্র কয়েকদিন আগে টঙ্গীতে টম্পাকো ফয়েলস কারখানায় আগুন লেগে নিহত হন ৩৯ জন। এসব কারখানার কোনটিতেই নূন্যতম নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিলো না, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তা ছাড়া রাসায়নিক ও গ্যাসের মত ঝুঁকিপূর্ণ দাহ্য নিয়ে কারবার হয়- এমন কারখানায় কাজের পরিবেশও অনুকুল ছিলো না বলে অভিযোগ আছে।

 

কিছু কিছু শিল্প উদ্যোক্তা ও কারখানা কর্তৃপক্ষের এমন  গাফিলতি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আগুনে শ্রমিকের প্রাণ গেছে, তাদের কারখানাও তো গেছে। অথচ সতর্কতা অবলম্বন করলে জানমালের ক্ষতি এড়ানো যেতো। এসব ক্ষেত্রে সরকারের একার পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। সচেতন হতে হবে বিনিয়োগকারীকে, শিল্প উদ্যোক্তাকে, কারখানার মালিককে। আমরা কোনভাবেই এ ধরনের ক্ষয়ক্ষতি আর দেখতে চাই না। সবাই সচেতন হবেন, এই আশা করি।  

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ নভেম্বর ২০১৬/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়