শীতকালের জন্য ৫ শেভিং টিপস
প্রতীকী ছবি
এস এম গল্প ইকবাল : শীতকালে আপনার মুখের ত্বককে ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষার জন্য শেভিংয়ের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনা দরকার। কিন্তু রেজার পরিবর্তন করার দরকার নেই। আপনি পছন্দের ব্লেড দিয়ে শেভ করতে পারেন এবং প্রতি চারবার শেভের পর বা চার সপ্তাহ পর কার্টিজ পাল্টে ফেলুন।
শীতকালে সুস্থ শেভিংয়ের জন্য এক্সক্লুসিভ আর্টিস্টস ম্যানেজমেন্টের সেলেব্রিটি গ্রুমার এবং ম্যান’স হেলথের চুল ও ত্বকের যত্ন বিশেষজ্ঞ সিমোন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিয়েছেন।
* এক্সফোলিয়েট করুন
প্রথমত, আপনি শেভ করুন বা না করুন, যেকোনো ঋতু নির্বিশেষে আপনার এক্সফোলিয়েট করা বা মৃত ত্বক কোষের ওপরের স্তর তুলে ফেলা উচিত। এটি বিশেষত শীতকালে গুরুত্বপূর্ণ এবং শেভের আগে এক্সফোলিয়েট করা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্রকৃতপক্ষে, আপনি যদি ঘনঘন শেভ করেন, যেমন- সপ্তাহে দুবার, তাহলে বাথরুমে শেভ না করে বেসিনে শেভ করুন। এর কারণ সম্পর্কে সিমোন বলেন, ‘শীতকালে আর্দ্রতা কমে যায়, তাই ত্বকে ক্র্যাক বা ফাটল ও ইরিটেশন বা জ্বালাতন হতে পারে এবং ত্বক শুকিয়ে যেতে পারে। বাথরুমের বদ্ধ স্থানে শেভ করলে অভ্যন্তরীণ তাপে ত্বকে অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। তাই বাইরে খোলা যায়গায় শেভ করলে এসব সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘শীতকালে ত্বকের কোষ ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়, তাই পুনরায় হাইড্রেটেড করতে, রেজারকে বাধাপ্রদানকারী মৃত ত্বক কোষ দূর করতে এবং মসৃণ শেভ পেতে আপনার এক্সফোলিয়েট করা প্রয়োজন হবে। সপ্তাহে দুইবার এক্সফোলিয়েট করলে আপনার অন্যান্য গ্রুমিং প্রোডাক্ট বা শেভিং দ্রব্য আরো ভালোভাবে কাজ করবে। ত্বকের মৃত কোষ দূর করা না হলে আপনার শেভ অয়েল এবং পোস্ট-শেভ বামও সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।’
* শেভের প্রস্তুতি সংক্ষিপ্ত করুন
ত্বকের জ্বালাতন ও ক্ষতিগ্রস্ততার রেসিপি হচ্ছে গরম পানি ও ঠান্ডা এবং শুষ্ক বাতাস। সিমোন বলেন, ‘শেভিং প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য হট শাওয়ার প্রলুব্ধকারী উপায় হলেও শীতকালে আপনার এটি পরিহার করা প্রয়োজন। এটি ত্বককে শুকিয়ে ফেলবে। আপনার ত্বকের সকল প্রাকৃতিক তেল ধোয়ার প্রয়োজন নেই যাতে আপনার জন্য প্রয়োজনীয় ময়েশ্চার বা আর্দ্রতা আছে।’
যাহোক, গরম পানি দিয়ে আপনার লোমকূপ খোলা প্রয়োজন হবে, তাই এ প্রক্রিয়া সংক্ষিপ্ত করুন। সিমোন বলেন, ‘মুখে কিছু গরম পানি ছিটান, অথবা গরম পানিতে ভেজা টাওয়েল দিয়ে ১০-২০ সেকেন্ড মুখ সিক্ত করুন, কিন্তু দীর্ঘসময় করবেন না।’ এতে দাড়ি নরম হবে, লোমকূপ খুলবে এবং ত্বক শেভের উপযোগী হবে।
* শেভের আগে তেল ব্যবহার করুন
শীতকালে নিরাপদ ও সুস্থ শেভের জন্য ত্বকের প্রস্তুতি প্রধান ভূমিকা পালন করে। সিমোন বলেন, ‘আপনি উষ্ণ মাসগুলোতে সাধারণত শেভের পূর্বে কোনোকিছু প্রয়োগ করেন না, কারণ আপনার ত্বক ডিহাইড্রেটেড হয় না বললেই চলে। কিন্তু শীতে ক্ষত ও ফাটল মুখে শেভিং আপনাকে প্রত্যাশিত ফলাফল দেবে না।’ তিনি মুখে গরম পানি ছিটানোর পর শেভ-পূর্ব তেল ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এটি ত্বককে প্রশমিত করতে পারে, দাড়িকে নরম করে, শেভিং সহজ করে ও শেভিং যন্ত্রণা হ্রাস করে।
* শেভের পর শেভ বাম ব্যবহার করুন
সিমোন বলেন, ‘শেভের পর বাইরে থাকার মতো খারাপ আর কিছু নেই যখন ঠান্ডা বরফতুল্য বাতাস আপনার নতুন শেভ করা মুখকে ছিঁড়ে ফেলছে এমন অনুভূতি হয়। শেভের পর রেজারের জ্বালাপোড়াও অনুরূপ। আপনি বাতাস ও রেজারের জ্বালাপোড়া কোনো শেভ বাম দিয়ে প্রতিরোধ করতে পারেন।’ এসব বামের ঘনত্ব লোশন, অয়েল ও ক্রিমের তুলনায় বেশি এবং আপনার মুখের ওপর পুষ্টিসমৃদ্ধ বেষ্টনী তৈরি করে। এসব বাম ত্বককে প্রশমিত ও পুষ্ট করে, এছাড়া ঋতুভিত্তিক ক্ষতিকর প্রভাবক যেমন- শুষ্ক বাতাস ও ঠান্ডা বাতাস এবং ব্যাকটেরিয়া ও পরিবেশগত টক্সিন থেকে রক্ষা করে। আপনি বসন্ত না আসা পর্যন্ত শেভ পরবর্তী প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে পারেন।
* রাতে শেভ করুন
শীতকালে রাতে শেভ করা উচিত। সিমোন বলেন, ‘যদি পারেন রাতে শেভ করুন, কারণ যখন আপনি ঘুম যান আপনার ত্বক পুনরায় হাইড্রেট হয় এবং ত্বকের কোষ পুনর্জন্ম লাভ করে। সকালে মুখ পরিষ্কার ও মুখে পুনরুৎপাদিত সকল প্রাকৃতিক তেল ধোয়ার পরিবর্তে কিছু পানি ছিটিয়ে দ্রুত মুখ পরিষ্কার করে নিন ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।’
শেভ করার সময় কিছু প্রোডাক্ট প্রয়োগের প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয় যা ত্বককে শুষ্ক করতে পারে, এমনকি আপনি শেভের পূর্বে তেল এবং শেভের পর বাম ব্যবহার করলেও। তাই ত্বককে রিকভার করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে রাতে শেভ করুন।
তথ্যসূত্র : ম্যান’স হেলথ
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন