ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

শুধু পুতিনের মাথায় ছাতা কেন?

সাইফুল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১১, ১৬ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শুধু পুতিনের মাথায় ছাতা কেন?

সাইফুল আহমেদ : বিশ্বকাপ ফাইনাল ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজল। জয়ের উল্লাসে আপ্লুত ফ্রান্স। অন্যদিকে, রাজ্যের বিষাদে বিমর্ষ ক্রোয়েশিয়া। জয়োল্লাস শেষে এলো পুরস্কার বিতরণের ক্ষণ। প্রথমে ভালোই চলছিল। তবে পুরস্কার বিতরণের মাঝপথে বাধ সাজলো বেরসিক বৃষ্টি।

যেনতেন বৃষ্টি নয়, একেবারে মুষলধারে বৃষ্টি। যাকে বলে ‘ক্যাটস অ্যান্ড ডগস রেইন’। তবে বৃষ্টিতেই চললো পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। সেখানে দেখা গেল এক অদ্ভূত চিত্র- শুধু রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মাথার ওপর ছাতা আছে। অথচ তার পাশেই দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভিজছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো, ক্রোয়েশিয়ার নারী প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা গ্রাবার কিতারোভিচ ও ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো।

এ বছরের বিশ্বকাপ সুসংগঠিত, সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য প্রশংসিত হয়েছে রাশিয়া। ফলে পুরস্কার বিতরণীর সময় শুধু পুতিনের মাথায় ছাতা দেখা যাওয়ায় অনেকের চোখই বিস্ময়ে ছানাবড়া। অনেকের মনেই প্রশ্ন, আয়োজক কিংবা রাশিয়ার কর্মকর্তারা আরো কয়েকটি ছাতা নিয়ে আসলে কী এমন ক্ষতি হতো!

মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজে একাকার পুতিন বাদে বাকি সবাই। প্রথমে মনে হয়েছিল, শুধু পুতিনই বোধ হয় ছাতা পাবেন। ফ্রান্স কিংবা ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্টসহ অন্য সবাইকে হয়তো বৃষ্টিতে ভিজে যেতেই হবে।

বিজয়ী ফ্রান্স ও বিজিত ক্রোয়াশিয়া দলের খেলোয়ারদের সঙ্গে ফরাসি নেতা ম্যাক্রো যখন করমর্দন চালিয়ে যাচ্ছিলেন, বৃষ্টিতে ততক্ষণে তার কালো স্যুট আরো কালো হয়ে গেছে। কে জানে হয়ত তার মনও!
 


ক্রোয়েশিয়ার নেতা কোলিন্ডা অবশ্য বেশ উৎফুল্লই ছিলেন। লাস্যময়ী এই প্রেসিডেন্ট এর আগেই এ বিশ্বকাপে সারা বিশ্বের নজর কেড়েছেন তার সৌন্দর্য দিয়ে। বৃষ্টি যেন তার সেই রূপ আরো মোহনীয় করে তুললো। ঠিক যেন, উচ্ছ্বল তরুণীর বৃষ্টিতে অবগাহন!

তবে পুতিন বাদে অন্যরা বৃষ্টিতে ভিজলেও তাদের পুরস্কার বিতরণী কিন্তু চালিয়ে গেছেন স্বাচ্ছন্দ্যেই।

পুতিন তার কৌশল ও রাজনৈতিক মাইন্ডগেমের জন্য সারা বিশ্বে ইতোমধ্যে ‘স্ট্রংম্যান’ হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছেন। তাই পুরস্কার বিতরণীর এই দশা দেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবিসহ অনেকে লিখেছেন, ‘এটাই বাস্তব চিত্র। পুতিন রক্ষিত, বাকি সবাই অরক্ষিত। এই ছবি পুতিনের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।’

মার্কিন অভিনেত্রী জেমি লি কার্টিস টুইটারে লেখেন, ‘পুতিন ছাতা পেল। ক্রোয়েশিয়া ও ফ্রান্সের সুন্দর প্রেসিডেন্টরা ভিজে সারা।’

রাশিয়ায় প্রতিবাদী নারীদের হাত থেকে পুতিনকে রক্ষায় তার বডিগার্ডের দায়িত্ব দেওয়া হয় এক নারীকে যিনি সেদেশে ‘মাদার রাশিয়া’ নামে পরিচিত। এ বিষয়ে মজা করে মার্কিন সাংবাদিক ক্যাটি টার লিখেন, ‘মাদার রাশিয়ায় কেবল পুতিনই ছাতা পেল।’

জোরা হৌসের নামের আরেকজন টুইট করেন, ‘রাশিয়ায় স্বাগতম... কেবল পুতিন ছাতা পেল।’

যাই হোক, শেষ পর্যন্ত কিন্তু বাকি দুই প্রেসিডেন্টসহ অন্যদের জন্য আরো কয়েকটি (অপেক্ষাকৃত ছোট) ছাতার ব্যবস্থা করা হয়েছিল, মিনিট কয়েক পরে। ততক্ষণে তারা বৃষ্টিতে ভিজে সারা।

আর ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফ্যান্তিনো। তার তো মাথায় হাত! তার মাথায় একটি ছাতাও জুটেনি।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জুলাই ২০১৬/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়